হাইওয়ে দিয়ে চলছে বাস। এলেঙ্গা পার হয়ে ব্রিজের টোল প্লাজার সামনে এখন। টোল পরিশোধ করে বাস এগিয়ে চলেছে ব্রিজের দিকে। ব্রিজে উঠার পর জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম যমুনা নদী দেখার জন্য। যাওয়া আসার পথে অনেকবারই দেখেছি। তারপরও যতবারই দেখি মনে হয় প্রতিবারই নদীটির নতুন রূপ ধরা দেয় । গ্রীষ্মে তার জেগে ওঠা চর আর বর্ষায় ভরা দু'কূল অভ্যর্থনা জানায়। শীতের সকালে কুয়াশার আড়ালে খুঁজতে লাগলাম নদীটিকে। হঠাৎই সূর্যের আলোর ঝলকানিতে স্পষ্ট হলো নদীর বুকে জেগে থাকা চরগুলো। দেখতে দেখতে পার হয়ে গেল ৪ মিনিট ৫৪ সেকেন্ড , পেরিয়ে গেলাম নদী।
২.
প্রায় প্রতিদিনই একটা নির্দিষ্ট সময়ে দোয়েল পাখিটা এসে বসে আমার বারান্দার গ্রীলটায়। কখনোবা বারান্দায় টাঙানো নাইলনের রশিগুলোতে। পাশের আমগাছটিতেই বোধ হয় বাসা বেঁধেছে। তাই হয়ত সামাজিকতা রক্ষার্থে নিয়মিত যাতায়াত প্রতিবেশী ঘরগুলোতে। বেশ কিছুদিন আগে আমার প্রতিবেশী ছিল একটা চড়ুই । এরপর একটা টুনটুনি। অবশ্য টুনটুনিটা খুব বেশি কাছে আসতে চাইতো না। হয়ত মানুষের সাথে সখ্যতা ব্যাপারটা খুব একটা প্রিয় ছিল না তার। তবে এবার মনে হচ্ছে , দোয়েল পাখিটা চড়ুইটার মতই বন্ধু পাতাতে আগ্রহী। তা না হলে, প্রতিদিন বারান্দায় এসে তার সাদা-কালো পালকগুলো নাড়িয়ে এভাবে ডাকে কেন?
৩.
দাঁড়িয়ে আছি ধুলি-ধুসরিত খোলা ময়দানে। পুরোপুরি খোলা বলাটা বোধ হয় ঠিক হলো না। চারদিকে আয়তাকার, লালরঙা কিছু শক্ত, পোড়ামাটি। ডুবে আছি কিছু সদ্য পোড়া ইটের মাঝে। মুখ তুলে খোলা আকাশের দিকে তাকাতেই চোখে পড়লো সাদা মেঘগুলোকে ঢেকে দিতে এগিয়ে যাচ্ছে কিছু কালো মেঘ। উৎস, একটি সুবিশাল চোঙা। নরম, ভেজা মৃৎপিণ্ড পুড়িয়ে শক্ত করবার কারখানাটিতে ভূমির সাথে উলম্ব চোঙাটি যেন বৃহদাকার এক চুরুট। একটু দূরে তাকাতেই চোখে পড়ে আরও কিছু চুরুট। আরও দূরে তাকাই; পড়ন্ত বিকেলে ক্রমেই জমাট বাঁধতে থাকা কুয়াশার মায়াজালে যেন আটকা পড়ে যায় শত শত চুরুট।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১১ বিকাল ৩:৩৮