somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সাংসদদের হাইকোর্ট দেখানোর দিন এখনই শুরু করা উচিত

২৯ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১২:৫৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনার সূত্রপাত যেখানে তা হলো সংসদে হাইকোর্টের একটা সিদ্ধান্তের সমালোচনার মধ্যে দিয়ে। প্রসঙ্গ সড়ক জনপদ বিভাগের অফিস উচ্ছেদ হাইকোর্ট অঙ্গন থেকে। আদালতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সংসদে অনাস্থা জ্ঞাপন আমার দৃষ্টিতে চরমতম আদালতের অবমাননা। আদালতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য আদালতিক প্রক্রিয়া আছে, সংসদের সাংবিধানিকভাবে যেহেতু কিছু করার ক্ষমতা নাই, সুতরাং তার সমালোচনা করারও ক্ষমতা নাই। যদি আরেকজন নাগরিকের আদালতকে সমালোচনা করার অধিকার থাকতো তাহলে সংসদেরও থাকতো। স্পিকার ও তাবত সংসদ সদস্য আদালতের অবমাননা করে প্রথমেই সংবিধানের লংঘন করেছেন এবং সেহেতু তারা কেহই সংসদ সদস্য থাকার উপযুক্ত নয় বা সে যোগ্যতা হারিয়েছেন।

পরবর্তীতে বিচারপতি শামসুদ্দিন সেই বিষয়টাই উত্থাপন করেছেন, কিন্তু কোনোধরণের আদেশ দেননি সংসদের স্পিকার বা সদস্যদের প্রতি, যা উচিত ছিলো, তাদের দাঁড় করানো উচিত ছিলো কাঠগড়ায়। যেমন স্পিকার তখন বলেছিলেন "আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ হলে জনগণ বিচার বিভাগের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়াতে পারে" যা চরমতম থ্রেটমূলক অসদাচারণ, জনগণের প্রতিনিধি যদি এভাবে কথা বলে বিচারিক আদলতের বিরুদ্ধে তাহলে সেই প্রতিনিধি কখনই রাষ্ট্রের প্রতিনিধিত্ব করার অধিকার রাখেন না।

কিন্তু আমাদের বেশীরভাগ সংসদ সদস্য ও সচেতন নাগরিক এই চরমতম অসৌজন্যমূলক বক্তব্য বিষয়ে নিরব ছিলেন, এর পরবর্তী লোকসান কি হতে পারে সে বিষয়ে তাদের বিন্দুমাত্র উদ্বেগ দেখা যায় নি। এমনকি প্রধান বিরোধীদল এ বিষয়ে ছিলো রহস্যজনকভাবে নীরব। অতপর বিচারপতি শামসুদ্দিন যখন স্পিকারের উক্ত বক্তব্যের বিরুদ্ধে কেবল আদালতের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন তখন স্পিকার ও সংসদ সদস্যরা সেটার বিরুদ্ধে রুলিং দেয়ার একটা ব্যবস্থা সামনে নিয়ে আসলেন, যেনো এই রুলিং এ সাংবিধানিক ব্যবস্থা নেয়া হয়ে যায়, আদপে যার কোনোই ভিত্তি নাই, থাকে না। একজন আইনজ্ঞ হয়ে সংসদের স্পিকারের যে সেটা জানা নাই বা চেপে গেলেন এবং পুরা জাতির সামনে একটা ভুল তথ্য ও ব্যবস্থা এনে হাজির করলেন - সেটা রীতিমত হতাশাজনক ও অযোগ্যতার পরিচায়ক।

সংসদ আইন তৈরীর করার জায়গা, বিচারপতি ও তাদের বিচারিক কার্য পরিচালালনার জন্য আইন তৈরী করার জায়গা, মানে সহজ কথায় তারাই নির্ধারণ করেন বিচার কার্য পরিচারণার জন্য আরেকটা পৃথক স্তর। এর কারণ সংসদ বিচার কার্য পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারে না। সরকারের
তিনটি নির্বাহী বিভাগের কাজ এভাবে আলাদা করা হয় - কাজ পরিচালনার সুবিধার্থে।

সংসদ আইন তৈরীর করার জায়গা, বিচারপতি ও তাদের বিচারিক কার্য পরিচালালনার জন্য আইন তৈরী করার জায়গা, মানে সহজ কথায় তারাই নির্ধারণ করেন বিচার কার্য পরিচারণার জন্য আরেকটা পৃথক স্তর। এর কারণ সংসদ বিচার কার্য পরিচালনার দায়িত্ব নিতে পারে না। সরকারের
তিনটি নির্বাহী বিভাগের কাজ এভাবে আলাদা করা হয় - কাজ পরিচালনার সুবিধার্থে।

বিচার বিভাগ যদি বিচার ব্যবস্থা সঠিকভাবে পরিচালনা না করে বলে মনে করে সংসদ তবে তাকে আইন সংশোধন,পরিবর্তন করার ক্ষমতা রয়েছে, কিন্তু বিচারিক ক্ষমতা প্রয়োগের সুযোগ নাই। কারণ সংসদের প্রণীত আইন আবার বিচার বিভাগকেই বাস্তবায়ন করতে হবে বা বিচার করতে হবে। সেই প্রণীত আইনের মধ্যে বিচারকদের অপসারণের যেহেতু ব্যবস্থা বাধ্যতামূলকভাবে থাকে, সেটাই অনুসরণ করা সংসদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে - কারণ তারাই সে আইন তৈরী করেছেন, সে আইন সংসদের হাতে তুলে নিয়ে বিচার পরিচালনার জন্য নয়।

অতপর স্পিকারের সেই অপরিনামদর্শী রুলিং কে হাইকোর্ট এখন অকার্যকর ও ভিত্তিহীন বলে ঘোষণা করলো। এর ফলে স্পষ্ট হয়ে গলো স্পিকার ও সংসদের বাগড়ম্বরতা, তবে তা একই সাথে বিস্তৃত করলো স্পিকারের আরো একবার গলাবাজির সুযোগ।

হাইকোর্টের উচিত স্পিকার ও সংসদসদস্যদের এ বিষয়ে কিভাবে তারা সাংবিধানিক ব্যবস্থা নিবেন সেটা একটু এবিসিডি পড়ানোর মত করে, হাতে কলমে বুঝিয়ে দেয়া। হাইকোর্ট সাংসদদিগকে বলতে পারে, দেখুন আপনারা যদি আমাদের বিচারকদের অপসারণ করতে চান, বা কোনো সিদ্ধান্তের বিষয়ে অমত পোষণ করেন তবে হাইকোর্টেই আসুন, সংসদে দাড়িয়ে সমস্ত দেশের জনগণকে বিচারব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাঁড় করাবার ষড়যন্ত্র করবেন না। হাইকোর্ট এটাকে একটা পরিস্কার ষড়যন্ত্র হিসাবেও চিহ্নিত করে স্পিকার ও সমস্ত সাংসদদিগকে হাই কোর্টে তলব করার ক্ষমতাও রাখে এবং সেটাই করা উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:০৬
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বেফাঁস মন্তব্য করায় সমালোচনার মুখে সমন্বয়ক হাসিবুল ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৩ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৩২



"মেট্রোরেলে আগুন না দিলে, পুলিশ না মারলে বিপ্লব সফল হতো না "- সাম্প্রতিক সময়ে ডিবিসি নিউজে দেয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করে সমালোচনার শিকার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসিবুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমিত্ব বিসর্জন

লিখেছেন আজব লিংকন, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১:৪৮



আমি- আমি- আমি
আমিত্ব বিসর্জন দিতে চাই।
আমি বলতে তুমি; তুমি বলতে আমি।
তবুও, "আমরা" অথবা "আমাদের"
সমঅধিকার- ভালোবাসার জন্ম দেয়।

"সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট"
যেখানে লাখ লাখ শুক্রাণুকে পরাজিত করে
আমরা জীবনের দৌড়ে জন্ম... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ হঠাৎ মেহজাবীনের পিছে লাগছে কেন ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৪১


স্বৈরচারী আওয়ামীলীগ এইবার অভিনেত্রী মেহজাবীনের পিছনে লাগছে। ৫ ই আগস্ট মেহজাবীন তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছিলেন ‘স্বাধীন’। সেই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট যুক্ত করে অভিনেত্রীকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগ তার অফিসিয়াল ফেইসবুকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×