প্রায় ৪ বছর আগের আগের ঘটনার স্মৃতিচারণ করে পোস্টটি শুরু করছি যা ইদের বাজারে আমার নিজের চোখে দেখা সবচেয়ে লোমহর্ষক ঘটনা। এবং এগুলো ঈদের ঈদের বাজারে বাংলাদেশের প্রতিটি মার্কেটের সামনে , রাস্তায় ঘটে থাকে ।
২০১০ সালে চট্টগ্রাম গিয়েছিলাম বিশেষ কাজে । আমার কাজ ছিলো নগরীর আগ্রাবাদে। ট্রেন থেকে নেমে সি এন জি নিয়ে আগ্রাবাদ যেতে হতো । তখন ঈদের জমজমাট মার্কেট তাই ঈদের কেনাকাটা নিয়েই দেশের মানুষ বেশি ব্যস্ত ছিলো হয়তো।
শহরের ভি আই পি টাওয়ারের চট্টগ্রামের বন্ধু সোহাগের সাথে দেখা করে তাকে সাথে নিয়ে আমার গন্তব্যস্থলে যাওয়ার কথা। কারণ আমি চট্টগ্রামের তেমন কিছুই চিনতাম না তখন।
বন্ধুর সাথে দেখা করে তাকে সাথে করে সি এন জি নিলাম । নগরীর কাজীর দেউড়ির মোর থেকে এম এ আজিজ স্টেডিমায়ে ও শহীদ জিয়াউর রহমান জাদুঘরের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটি আগ্রাবাদের দিকে চলে গিয়েছে সে রাস্তাটি ছিলো বেশ উঁচু।
সে রাস্তা দিয়ে রিক্সা ওলাকে হাতে টেনে টেনে রিক্সা উপরের দিকে উঠাতে হয়। ঠিক সেরকম একটা রিক্সায় দুইটি মেয়তে বসা । হাতে অনেকগুলো শপিং এর ব্যাগ। রিক্সা ওয়ালা টেনে টেনে রিক্সা উপরের দিকে উঠাচ্ছে।
এর পর পরই হঠাৎ করে অপরদিক থেকে একটা মটর সাইকেলে চেপে দুই ঝাপটা বাজ (একজন বাইক চালাচ্ছিল অন্যজন পেছনে বসেছিলো ) রিক্সার ডানপাশে বসা মেয়েটির হাতের শপিং ব্যাগ এতো জোরে টান দিয়েছিলো যে মেয়েটির হাতের ব্যাগ তো হারালোই মেয়েটিও তার শরীরের ব্যালেন্স হারিয়ে রাস্তায় পড়ে যায় এবং রক্তাক্ত হয়।
একবার আমার ঈদের পাঞ্জাবি হারিয়ে গিয়ে ছিল যা আমি খুব পছন্দ করে কিনেছিলাম। সি এন জি এর পেছনে আমার পাঞ্জাবির ব্যাগটি রাখি । সি এন জি থেকে নামার সময় ব্যাগের কথা ভুলে যাই ।
পাঞ্জাবিটা হারিয়ে আমার খুব খারাপ লাগতেছিলো । কারণ আমার অন্য একটি পাঞ্জাবি কিনার টাকা ছিলোনা। নতুন পাঞ্জাবি ছাড়া নামজ পড়তে গেলে আমার খারাপ লাগবে। তাই সেই বছর ঈদের নামাজ ও পড়িনি ।
না জানি রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকা মেয়েটির কেমন লাগছিলো তখন? নিজের শখ করে কেনা কাপড় হারাতে কার না খারাপ লাগবে? দেশের কত পার্সেন্ট মানুষের সামর্থ্য আছে একবার শপিং এর কাপড় চোপড় বা টাকা ঝাপটা বাজদের কাছে হারিয়ে আবার নতুন করে তা জোগাড় করার !
এবার রক্তাক্ত হয়ে রাস্তায় পড়ে থাকা বোনটার জায়গায় আপনার নিজের বোনকে কল্পনা করুন । কেমন লাগবে আপনার ! ইচ্ছা করবেনা কুলাঙ্গার ঝাপটাবাজ পিটিয়ে মেরে ফেলতে ?
প্রতিবছরের ঈদের বাজারের একটি কমন দৃশ্য এটি । তাই আমরা যদি নিজ অবস্থান থেকে এই ঝাপটাবাজদের প্রতিরোধ করি তবে কিছুটা হলেও এদের প্রতিরোধ করা সম্ভব !
আপনার আশে পাশে যদি মেয়ে ঝাপটা বাজ অথবা ইভটিজার ধরা পড়ে তবে কি করবেন ?
১) তাকে ভুলেও পুলিশের হাতে তুলে দিবেন না । অন দি স্পটে গণধোলয় দিবেন । আওয়ামী পুলিশ কতটা খারাপ তা নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার দরকার নেই । ওরা পকেট মার / ঝাপটা বাজ/ ইবটিজার ধরে ঘুষ খেয়ে আবার ছেড়ে দিয়ে এর পরের দিন আর একজন বোনের ব্যাগ ঝাপটা মারার সুযোগ করে দিবে।
২) তাকে এমন ভাবে গণধোলাই দিন যেন আশে পাশে খবর হয়ে যায় । এবং ঐ এলাকায় ২য় বার কোন ঝাপটাবাজ ঝাপটা মারার সময় যেন আপনি যাকে গণধোলাই দিয়েছেন তার পরিণতির কথা চিন্তা করে ভয় পায় ।
৩) অনেকেই আছে নিজের গায়ে না আসা পর্যন্ত প্রতিবাদ করেনা । এটা ঠিক না । আজ আপনি নিজের উপর আসেনাই বলে গা বাঁচিয়ে চলছেন । কাল আপনার নিজের বোনের উপর অথবা মায়ের উপর আসলে কি করবেন ?
৪) এদেরে এমন ভাবে মারতে হবে যেন হাত অথবা পা ভেঙ্গে যায় । এর ফলে তারা ২য় বার ঝাপটা বাজি করতে পারবেনা বা কোন বোনকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রাখতে পারবে না।
ঈদের মার্কেট গুলোতে দেখবেন কিছু শিক্ষিত ছেঁচড়া পোলা ঘুরতেছে। এদের কাজ হচ্ছে মেয়ে দেখা , সুযোগ পেলে ইভ টিজিং করা । বিশ্বাস না হলে ঢাকা শহরের জনপ্রিয় মার্কেট গুলোর সামনে গিয়ে দেখুন । শত শত ছেঁচড়া দাঁড়িয়ে আছে এবং ইভটিজিং করছে। এদের কি ভাবে উচিৎ শিক্ষা দিবেনঃ
১) আপনার ফ্রেন্ড সার্কেল এর মধ্য থেকে ২০-২৫ জন মিলে একটা গ্রুপ করবেন ।
২) যে কোন একটা দিন ফিক্সড করবেন ।
৩) সেদিন আপনারা সবাই একসাথে ইফতার করবেন ।
৪) ইফতার ও নামাজের পর অভিযান শুরু করবেন ।
৫) যাওয়া মাত্র কুলাঙ্গার গুলোকে কোন সুযোগ না দিয়েই পিটানো শুরু করবেন ।
৬) সম্ভব হলে গাড়ি অথবা বাইক নিয়ে যাবেন যাতে মাইর দেওয়া শেষ হলে তাড়াতাড়ি চলে আসতে পারেন ।
৭) আপনার ফ্রেন্ড সার্কেলে যদি কোন ছাত্রলীগ ক্যাডার থাকে তাকেও সাথে নিবেন তাহলে পুলিশ আপনাদের কিছু করতে পারবেনা।
৮) যে ছেঁচড়া ইভটিজার গুলোকে পিটাচ্ছেন মোবাইলে তাদের ছবি উঠিয়ে নিন।
৯) ছবি গুলো ফেসবুকের বিভিন্ন পেজের এডমিনের তাদের পেজে শেয়ার করার জন্য অনুরোধ করবেন । যেন দ্রুত সংবাদটি দেশের সর্বত্র ছাড়িয়ে যায়।
১০) বিভিন্ন পত্রিকা অফিসে সম্পূর্ণ ঘটনার ডিটেইলস লিখে ছবি সহ মেইল করে তাদের পত্রিকায় ছাপানোর অনুরোধ জানান ।
এভাবেই ঝাপটাবাজ ও ইভটিজারদের হাত থেকে আমাদের মা বোন দের রক্ষা করা সম্ভব । আসুন প্রতিবাদ করি। এদের বিরুদ্ধে করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।