somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিএনপির দুই কক্ষ সংসদের প্রস্তাব কীভাবে বাস্তবায়ন হতে পারে

১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


বাংলাদেশের রাজনীতি ও রাষ্ট্রকাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন ঘটানোর সুযোগ এসেছে। জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরে রাষ্ট্রব্যবস্থা সংস্কার নিয়ে জোরেশোরে আলোচনা শুরু হয়েছে।

রাজনৈতিক দল ও অন্তর্বর্তী সরকার—দুই পক্ষ থেকেই রাষ্ট্রকাঠামোয় কী ধরনের পরিবর্তন আনা যায়, তা নিয়ে আলোচনায় আন্তরিকতা লক্ষণীয়। যদিও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ রয়েছে, কীভাবে ও কখন এসব সংস্কার হবে, কিন্তু রাষ্ট্রকাঠামো পরিবর্তন যে প্রয়োজনীয়, তা নিয়ে কারও দ্বিধা নেই।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও এর সমমনা দলগুলো রাষ্ট্রসংস্কারের যে ৩১ দফা ঘোষণা করেছে, তার অন্যতম একটি প্রস্তাব হলো দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা প্রণয়ন।

বিএনপির এই প্রস্তাব অনুযায়ী, বিদ্যমান সংসদীয় কাঠামোর পাশাপাশি উচ্চকক্ষে বিভিন্ন পেশার বিশেষজ্ঞদের আইন প্রণয়নে ভূমিকা রাখার সুযোগ করে দেওয়া হবে। এসব বিশেষজ্ঞের বিশেষ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় ক্ষমতার ভারসাম্য আনা সম্ভব হবে বলে তারা মনে করে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্প্রতি একটি ভাষণে বলেন, ‘দেশে প্রথাগত রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, কিন্তু দেশ গঠন, উন্নয়ন ও পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে চান—এমন অসংখ্য জ্ঞানী, গুণী শিক্ষক, শিল্পী-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, গবেষক, চিকিৎসক, কারিগরি বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকারকর্মী রয়েছেন; কিন্তু বর্তমান সাংবিধানিক কাঠামোয় তাঁদের পক্ষে সংসদে সদস্য হিসেবে অবদান রাখার সুযোগ নেই। তাঁদের সেবা আর অবদান দেশের কাজে লাগাতে বিএনপি পৃথিবীর অনেক দেশের মতো আমাদের দেশেও উচ্চকক্ষসহ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট–ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত দেখতে চায়’ (সেপ্টেম্বর ৪, দ্য ডেইলি স্টার)।

নির্বাচনের মাধ্যমে উচ্চকক্ষের সদস্যদের নির্বাচন করার পদ্ধতি যেসব দেশে রয়েছে, তার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র অন্যতম। যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রতিটি থেকে ২ জন উচ্চকক্ষ অর্থাৎ সিনেটের সদস্য নির্বাচিত হন। সিনেটের মোট সদস্যসংখ্যা তাই ১০০। এখানে লক্ষ করার মতো বিষয়, জনসংখ্যা বা আয়তনে বড় বা ছোট হলেও সব অঙ্গরাজ্যের দুজন করেই সিনেটর থাকেন। ছোট অঙ্গরাজ্যকে সমান গুরুত্ব দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েই এ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া আর্জেন্টিনা, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়াতেও নির্বাচনের মাধ্যমে উচ্চকক্ষের সদস্যদের নির্বাচনের রীতি রয়েছে। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নয়, কিন্তু জনগণের নির্বাচিত অথবা রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে পরোক্ষ ভোটে উচ্চকক্ষের সদস্যদের নির্বাচন করে কয়েকটি দেশ। এই দেশগুলোর মধ্যে জার্মানি, অস্ট্রিয়া ও ফ্রান্স অন্যতম।

আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতেও অঙ্গরাজ্য ও ইউনিয়ন টেরিটরির আইনসভাগুলোর ভোটে উচ্চকক্ষ রাজ্যসভার ২৩৮ জন সদস্য ‘সিঙ্গেল ট্রান্সফারেবল’ ভোটে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব নিয়মে নির্বাচিত হন। তবে ভারতের রাষ্ট্রপতি শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান ও সামাজিক সেবায় বিশেষ অবদান রাখা ১২ জনকে সদস্য নিয়োগ দিতে পারেন। সেই বিবেচনায় এটি একটি মিশ্র পদ্ধতি।


দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার একটি অন্যতম ও ঐতিহ্যবাহী উদাহরণ ব্রিটিশ হাউস অব কমন্স এবং হাউস অব লর্ডস। একাদশ শতাব্দী থেকে আইনসভা শুরু হয়ে ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে পুরোদমে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা চালু হয় যুক্তরাজ্যে। উচ্চকক্ষ হাউস অব লর্ডসের সদস্যরা জনগণের দ্বারা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত নন, বরং তাঁরা বংশপরিচয়, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় গুরুত্বের মাধ্যমে নিয়োগ পান। লর্ড, ব্যারন, আর্ল ইত্যাদি বংশপরিচয় এবং আর্চবিশপ ও বিশপের মতো ধর্মীয় প্রতিনিধিরা এর সদস্য। তবে এসব নিয়োগেও রাজনৈতিক বিবেচনা বড় ধরনের প্রভাব রাখে।

সমাজের বিভিন্ন পেশা ও গোত্রের প্রতিনিধিদের নিয়েও সংসদের উচ্চকক্ষের সদস্যদের নিয়োগের উদাহরণ রয়েছে। স্লোভেনিয়ার জাতীয় কাউন্সিল বিভিন্ন ভাষা, জাতীয়তা ও আদিবাসীদের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত। সেখানে শিক্ষক, চিকিৎসক, গবেষক, শ্রমিক, কৃষকসহ নানা পেশার প্রতিনিধিরাও রয়েছেন।

প্রত্যক্ষ নির্বাচন, পরোক্ষ নির্বাচন, বংশ ও ধর্মীয় প্রভাবশালীদের নিয়োগ এবং সামাজিক প্রতিনিধিত্বমূলক নিয়োগ—মূলত এই চার পদ্ধতি দ্বারা বিভিন্ন দেশে উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচিত হন। বাংলাদেশের জন্য একটি মিশ্র পদ্ধতি বেছে নেওয়ার কথা চিন্তা করা যেতে পারে।

বাংলাদেশে সবচেয়ে প্রভাবশালী রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং এর সমমনা দলগুলো নিম্নকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চান না। এর বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী এবং কিছু ছোট দল এ ব্যবস্থার পক্ষে। আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা নিম্নকক্ষে প্রবর্তনের কিছু বড় ধরনের জটিলতা রয়েছে, এমনকি কর্তৃত্ববাদী আওয়ামী লীগের এর মাধ্যমে পুনর্বাসিত হওয়ার সম্ভাবনাও আছে।


এর বিপরীতে উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় বিএনপি এবং ছোট দল—দুই পক্ষই লাভবান হতে পারে। নিম্নকক্ষে বর্তমানে প্রচলিত ‘ফার্স্ট পাস্ট দ্য পোস্ট’ ব্যবস্থা রেখে উচ্চকক্ষে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালু করলে একদিকে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে তাদের নিজেদের জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত করার ক্ষমতা থাকবে, অন্যদিকে ছোট দল এবং নাগরিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরও দেশের আইন প্রণয়ন ও নিরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ তৈরি হবে।

এই প্রস্তাব অনুযায়ী, রাজনৈতিক দলগুলো দুভাবে তাদের উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচিত করতে পারে। প্রথমত, পরোক্ষ ভোটে উচ্চকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হতে পারে। নিম্নকক্ষের সদস্যরা নির্বাচিত হওয়ার পরে সেই অনুপাতে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের উচ্চকক্ষের সদস্যদের মনোনয়ন দেবে।

দ্বিতীয় পদ্ধতিটি হচ্ছে প্রত্যক্ষভাবে নিম্নকক্ষের ভোটের সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি ব্যালটে (যা ভিন্ন রঙের হতে পারে) শুধু দলের প্রতীককে ভোট দেওয়ার মাধ্যমে জনগণ উচ্চকক্ষের জন্য আলাদাভাবে ভোট দেবে। এর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির পাঁচ থেকে ছয়জন উচ্চকক্ষের সদস্য নিয়োগের এখতিয়ার থাকতে পারে, যাঁরা কোনো রাজনৈতিক দলের মনোনয়ন ছাড়াই বিশেষ বিবেচনায় নিয়োগ পেতে পারেন। রাজনৈতিক দলগুলো আনুপাতিক হারে যে সদস্যদের মনোনয়ন দেবে, সেই মনোনয়নের মধ্যে যেন দেশ ও সমাজের বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ব থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

নারী, তরুণ, জাতি ও ধর্মভিত্তিক সংখ্যালঘু, পিছিয়ে পড়া অঞ্চলভিত্তিক প্রতিনিধিত্ব রাখতে হবে। এ ছাড়া বিভিন্ন পেশা, যেমন চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষক, গবেষক, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা, সাবেক সেনা কর্মকর্তা, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, কৃষক, শ্রমিক ইত্যাদির প্রতিনিধিত্ব উচ্চকক্ষে থাকা জরুরি।

রাজনৈতিক দলগুলোকে এসব শ্রেণি–পেশার প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেই তাদের উচ্চকক্ষের তালিকা তৈরি করতে হবে। এর মধ্যেই বড় দলগুলোর মধ্যে বিএনপি পেশাভিত্তিক সদস্য নির্বাচনের কথা উল্লেখ করেছে, যা দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বক্তব্যে স্পষ্ট। রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের উচিত নির্বাচনের আগেই উচ্চকক্ষের সদস্য নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে একটি ঐকমত্যে আসা।

বাংলাদেশের আইনসভা যেন শুধু ক্ষমতাসীন দলের মর্জির ওপরে নির্ভর না করে, তা নিশ্চিত করতে উচ্চকক্ষব্যবস্থা দরকারি। এর সঙ্গে সঙ্গে উভয় কক্ষে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল করলে সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরেও নিজস্ব মতামত দেওয়ার ক্ষমতা তৈরি হবে।

দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভায় স্বেচ্ছাচারী আইন তৈরি ও অনুমোদন পাওয়া কঠিন। এ ছাড়া বড় রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সঙ্গে ছোট রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরাও উচ্চকক্ষের সদস্য হবেন, যার মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব যেমন বাড়বে, তেমন ক্ষমতার ভারসাম্যও তৈরি হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:০৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাল মার্কস, পুঁজিবাদ ও বাংলাদেশের বাস্তবতা: কমিউনিজম কি এখনো প্রাসঙ্গিক?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:২৭


আজ ১৪ মার্চ, কাল মার্কসের মৃত্যুবার্ষিকী। দার্শনিক, অর্থনীতিবিদ ও সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে তিনি মানব সভ্যতার ইতিহাসে এক অনন্য স্থান অধিকার করে আছেন। তাঁর চিন্তাধারা শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির লক্ষ্যে গড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুরহা ধাওয়াইল্লেহ, আন্ডা ভোনছে…….

লিখেছেন আহমেদ জী এস, ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:০০



২৪’এর জুলাই আগষ্টের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান যে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সুযোগ এনে দিতে পারতো দেশটিতে তা আর হতে দিলো কই কিছু কিছু রাজনীতিবিদ আর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ড: আরেফিন সিদ্দিকের সময় যারা ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে বের হয়েছে!

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:১৫






ড: আরেফিন সিদ্দিক (১৯৫৩-২০২৫ ) ২ মেয়াদের ৮ বছর ভিসি ছিলেন; উনার ছাত্রদের থেকে সরকারের উঁচু পদে চাকুরী ( ব্যুরোক্রেট, নন ক্যাডার, পলিসি-ম্যাকার ) করছে কমপক্ষ ২০ হাজার ছাত্র' এদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিনাকি আসলে কি?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৪ ই মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:২৬



গেছদাদা্ মনে করেন পিনাকি আসলে ‘র’ এর এজেন্ট। কারণ ‘র’ তাকে হত্যা করে নাই।শেখ হাসিনা ভারতে গেছিলেন সেখান থেকে শক্তি সঞ্চয় করে আবার ক্ষমতা দখল করার জন্য। কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতের গণতন্ত্র এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্যসন্ত্রাস

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৫ ই মার্চ, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৩



জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান যেমন আমাদের দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সমস্যাগুলো উন্মোচিত করেছে, তেমনি এটি ভারতের বাংলাদেশ সংক্রান্ত কূটকৌশল, সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গি এবং এর ষড়যন্ত্রগুলোকে সম্পূর্ণ প্রকাশ্যে এনেছে। শত্রু যখন তার চেহারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×