এমাজউদ্দিন আহমেদ ১৯৩২ সালের ১৫ ডিসেম্বর চাঁপাইনবাবগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৮ সালে অবিভক্ত মালদার গোলাপগঞ্জ হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর রাজশাহী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক পাস করেন। স্নাতকে তিনি প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হয়েছিলেন। এরপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিটিক্যাল সায়েন্সে। সেখান থেকে ১৯৫৪ সালে স্নাতকোত্তর। দুটি কলেজে অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করেছেন। এরই ফাঁকে ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করলেন।
প্রায় আড়াই দশক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল সায়েন্স বিভাগে অধ্যাপনা করেছেন। পাশাপাশি পালন করেছেন প্রতিটি প্রশাসনিক দায়িত্বও। ছিলেন বিভাগীয় প্রধান, মহসিন হলের প্রভোস্ট, প্রক্টর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর এবং সবশেষে ভাইস চ্যান্সেলর। ১৯৯২ খেকে ১৯৯৬, এই পাঁচ বছর ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। এরপর ছ’বছরের কর্মবিরতি শেষে ২০০২ সালে যোগ দেন ইউনিভার্সিটি অব ডেভলপমেন্ট অলটারনেটিভের ভাইস চ্যান্সেলর পদে।
ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ পিএইচডি করেছেন ১৯৭৭ সালে কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আশির দশকে তিনি জার্মানির হাইডেলবার্গ ইউনিভার্সিটি ও যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট কলেজ ইউনিভার্সিটিতে সিনিয়র ফেলো ছিলেন।
অধ্যাপনার পাশাপাশি লেখালেখির জন্যও তিনি খুব পরিচিত। ইংরেজি-বাংলা মিলিয়ে লিখেছেন পঞ্চাশটির বেশি বই। নিয়মিত কলাম লিখেন। জাতিসংঘের ৪১ তম অধিবেশনে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি।
লেখাটি তিনি লিখেছেন উনিশত আটানব্বই সালের বাইশে জুন মানবজমনি পত্রিকায়। শিরোনাম এখন বাংলাদেশের কি করণীয়? তিনি লিখেছেন যে বাংলাদেশের চারপাশ জুড়ে পারমাণবিক শক্তিধর ভারত, একটু দুরে আরেক মহাশক্তিধর চীন, এবঙ পারমানবিক শক্তিধর পাকিস্তান। যেখানে দশকে পর দশক ধরে দুই পারমানবিক শক্তিধর ভারত পাকিস্তানের মধ্যে শীতল যুদ্ধ লেগে আছে, চীন ও ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে মরিয়া যেখানে, এই দুই শক্তির মধ্যে সমন্বয সাধণ করে আমেরিকা নিজেদের আধিপত্য স্থায়ী করতে যেখানে নানা কৌশল নিচ্ছে, এবং ভূ-রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশের গুরুত্ব্ও অপরিসীম, সেখানে বাংলাদেশের করণীয় কি?তিনি বলেন, এই অবস্থায় বাংলাদেশের সাথে আমেরিকার স্ট্যাটাস অফ ফোর্সেস এগ্রিমেন্ট বা সোফা চুক্তি এশিয়ায় আমেরিকা তার আধিপত্য ধরে রাখতেই করেছে। তার মতে, এই চুক্তির গুরুত্ব দুইট কারণে, এক, মায়ানমার চীনের একটি বার্ধিতাংশের মতোই ভূমিকা রাখছে। দুই. অদূর ভবিষ্যতে এ অঞ্চলের তেল ও গ্যাসের ওপর নিজেদের আধিপত্য জারি রাখা।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর জরিপ থেকে জানা যায়, দুই হাজার বিশ থেকে দুই হাজার পচিশ সালের ভেতরে পৃথিবীর চারটা বড় অর্থনৈতিক শক্তির দুইটিই হলো বাংলাদেশের দুই প্রান্তে চীন ও ভারত। অন্যদুটি আমেরিকা ও জাপান। অর্থাৎ চারটি রাষ্ট্রের তিনটিই এই এশিয়া মহাদেশে অবস্থিত। কোন রাষ্ট্র যখন অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হয়, তখন তার পক্ষে সামরিক শক্তি অর্জন করা স্বাভাবিক। জাপান সামরিক দিকটি উপেক্ষা করলেও চীনের ব্যাপারটি ত পরীক্ষিত। ভারতও আটানব্বই সালের ১১ ও ১৩ মে পারমানবিক বিস্ফোরণ ঘটিয়ে প্রমাণ করলো সে কারও থেকে মোটেও কম যায় না। আমেরিকা স্বাভাবিকভাবেই এসব কিছু পর্যবেক্ষণে রাখছে। ক্লিনটন ক্ষমতায় আসার প্রথম টার্ম শেষ হবার আগেই পাচানব্বই সালে চীন ও ভারতের কাছে পারমানবিক প্রযুক্তি হস্তান্তর করে। সে এশিয়ায় ব্যালেন্স অফ পাওয়ার রাখতে চায়। হিমালয়ের দুই পাশেই এখন পারমানবিক অস্ত্র। ড. এমাজ উদ্দিন এ অবস্থায় সোফা চুক্তিতে সাক্ষরের বিরোধীতা করেন, তিনি বলেন, সোফা চুক্তিতে সই করলে বাংলাদেশ বড় শক্তিগুলোর ক্ষমতার দ্বন্দের ভেতরে নিজেকে হারিয়ে ফেলবে। নিজের সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা্ও হারিয়ে ফেলবে। সোফার প্রস্তাব বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে আসেনি, এ চুক্তির প্রস্তাব এসেছে আমেরিকার লাভালাভের বিচার করেই। এতে নীতনীর্ধারনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সুযোগ কম থাকবে। বাংলাদেশের পুরো সাংস্তৃতিক জবিনে এর গভীর প্রভাব পড়বে। প্রফেসর এমাজউদ্দিন বলেন, এর বিপরীতে বিশ্ব মানবতার স্বার্থে মানব সম্পদের উন্নয়ন, এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের শান্তিপূর্ণ পরিবেশের বিকল্প নেই, তা বিশ্ববাসীকে জানতে হবে, এ ক্ষেত্রে ধ্বংস না, সৃস্টিই হবে আমাদের মূল লক্ষ্য।
বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দকে ভারতপন্থী কিংবা পাকিস্তানপন্থী হওয়ার দরকার নেই। কৗশলগত গুরুত্বের কথায় বিবেচনায় এনে সবাই এখানে আসবেন। তখন তিনি সরকারকে একটা নিরপেক্ষ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করার তাগিদ দেন। এতে করে জটিল আঞ্চলিক সমস্যার সমাধান হবে বলে এ প্রবন্ধে জানান তিনি। প্রতিবেশি দেশগুলো নিজেদের স্বর্থেই এখানে জড়ো হবে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, পচাশি সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের উদ্যোগে আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা সার্ক গঠিত হয়। এ অঞ্চলে জমাট বাধা অবিশ্বাস ও সন্দেহের জমাট বাধা অবশ্বিাস ও সন্দেহ দূর করার একটা জায়গা তৈরি হয়েছে।
....................................................................................
উনিশ আটানব্বই সালের ছাব্বিশ অক্টোবর তিনি বাংলাদেশের কূটনৈতিক ব্যর্থতা নিয়ে লিখেছেন, তখন ভারতের মহারাষ্ট্র সরকার ওই রাজ্যের মোসলমানদের বাংলাদেশি হিসাবে উল্লেখ করে তাদেরকে রাজ্য থেকে তাড়াতে শুর করেন। পশ্চিমবঙ্গ সরকার তখন জানায়, তাদের রাজ্যে দশ লাখ অবৈধ বাংলাদেশি বসবাস করে। ভারত সরকার অভিযোগ করে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি ভারতে বসবাস করে। বাংলাদেশ তখন এ অভিযোগ প্রত্যাখন করেন। শেখ হাসিনা তখন জানান, ভারতে কোন বাংলাদেশি নাই। তখন পরারাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের জানামতে ভারতে কোন বাংলাদেশি নাই। তিনি বাংলাদেশি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এই রকম নরম সুরে কথা বলার প্রতিবাদ জানান। তিনি বলেন, ভারত তার দানবীয় শক্তি দিয়ে প্রতিবেশি ছোট দেশগুলোতে অনিরাপত্তা তৈরি করেছেন। প্রতিবেশিরা ভীত সন্ত্রস্ত থাকে। যেখানে বাংলাদেশ বছরের পর বছর ধরে লাখ লাখ রোহিঙ্গাদের বোঝা বহন করে পুশ ব্যাকের মতো কোন আদিম ব্যবস্থা গ্রহন করে নাই, সেখানে ভারতের এই প্রতিবাদে বাংলাদেশ কোন সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারে নাই। তিনি বলেন, স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশকে আনগত্যবোধের হীনমন্যতা জয় করতে হবে, বাংলাদেশ যাতে কারও দয়ার পাত্র না হয়, সে দিকে নজর দিতে হবে। তার তখনকার লেখা এ সময়ে এস্ওে আমাদের কুটনৈতিক ব্যর্থতার ভেতর দিয়ে প্রতিনিয়ত আমার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি।
............................................................................................
বাংলাদেশ চায় রাষ্ট্রনায়ক শিরোনামের একটি লেখায় তিনি বলেন, রাষ্ট্রনয়করা দল গড়ে তোলেন কেবল বর্তমানের জন্যই না, আগামিদিনকে সামনে রেখে, রাষ্ট্রনায়করা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে হলেও জাতীকে ঐক্যবদ্ধ করতে মূল ভুমিকা পালন করেন। যদিও বর্তমান রাষ্ট্রনায়ক দাবীদাররা এর বিপরীত ভূমিকা পালন করছেন, জাতির বিভক্তির সুবিধা নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করছেন। একজন রাষ্ট্রনায়ক বর্তমানে অতীতকে ভোলেন না। তার একটি রাজনৈতিক দল থাকে বটে,তবে তিনি দলের উর্দ্ধে উঠে জনগণ ও জাতির কল্যানেই বেশি মনোযোগি হন। রাষ্ট্র ক্ষমতাকে তিনি জনগনের উন্নয়নে ব্যবহার করেন। এর মাধ্যমে কোন সুযোগ-সুবিধা লাভের উপায় হিসাবে ব্যবহার করেন না। ব্যক্তিস্বার্থ, দলীয় স্বার্থ কিংবা পারিবারিক স্বার্থে তিনি রাজনীতিকে ব্যবহার করেন না। এখানে তিনি রাজনীতিবীদদের সমালোচনা করে লেখেন, বাংলাদশের বিপুল জনশক্তিকে একটি দক্ষ শ্রমশক্তিতে রুপান্তরিত করার কোন পরিকল্পনা বর্তমান রাজনীতিবীদরে মধ্যে নাই। রাজনীতিবীদদেরকে প্রতিহিংসা পরায়নতা ত্যাগ করে, সংকীর্ণতার উর্দ্ধে উঠে জাতীকে ঐক্যবদ্ধ করে সামনে এগিয়ে যাতে ভূমিকা রাখেন সে আহ্বান জানান। (দৈনিক মানবজবীন, ২ মার্চ, ১৯৯৮)
-------------------------------------------------------------
আটানব্বই সালের নয় ও দশ জুনের চারশ কিলোমিটারের লংমার্চে দেশনেত্রী যে পার্বত্য জনগণকে শান্তির ডাক দিয়েছিলেন, সে ডাককে তিনি স্বাগত জানিয়েছিলেন। আ্ওয়ামী লীগ সরকারের তখনকার শান্তিচুক্তির বিরুদ্ধে করা ওই লংমার্চ সম্পর্কে তিনি লিখেছেন, বেগম জিয়া লংমার্চের পূর্ব পর্যন্ত ছিলেন একজন খ্যাতিমান, জাতীয়তাবাদী দেশনেত্রী, লংমার্চের পর তার প্রতিকৃতি হয়েছে আরো বৃহদাকার, বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ও মহিমান্বতি। এ লংমার্চকে তিনি জাতীয় স্বার্থের বিরোধি, ফ্যাসিস্ট, পরনির্ভর ও ষড়যন্ত্রপ্রিয় ক্ষমতালোভীদের জন্য এক অশনিসংকেত হয়েছে। কায়েমী স্বার্থবাদী ছাড়া সকলেই শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে চায়। উপজাতী , অ-উপজাতী কিংবা বাঙালি হিসাবে নয়, সবাই বাংলাদেশের গর্বিত নাগরিক হিসাবে বসবাস করতে চায় শান্তিপূর্ণভাবে। সবাই বসবাস করতে চায় বাংলাদেশি হিসাবে। তিনি বলেন, এতে পরনির্ভরশীলতা, অবশ্বিাস ও বাচালতা ঝড়া পাতার মতো খসে পড়বে। বিপরীতে দেশের স্বার্থ সংরক্ষণকারী উদ্যোগের জোয়ার বইবে। (১৫ জুন, ১৯৯৮, দৈনিক ইনকেলাব)।
কখনো ঐতিহাসিক ঘটনা নতুন নেতৃত্ব তৈরি করে আবার নতুন নেতৃত্ব ঐতহাসিক ঘটনার জন্ম দেয়, শহীদ জিয়ার ক্ষেত্রে এর দুইটাই সত্য বলে জানালেন ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ। একাত্তরের মার্চের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তহীনতার ভেতরে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে তিনি যেমন সৃষ্টিশীল নেতৃত্বের পরিচয় দিয়েছিলেন, তেমনি পচাত্তরের সাতই নভেম্বর দেশ পরিচালনার দায়িত্বত নিযে বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি আমূল বদলে দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, সাতই নভেম্বর সিপাহী জনতার স্বতঃস্ফূর্ত বিপ্লবের ফলশ্রুতি হলো জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আরোহন। এটা কোন সমারিক অভ্যুত্থান কিংবা আলদা কিছু ছিল না । বহুদলীয় গণতন্ত্রের ক্ষেত্র তৈরি ও একদলীয় শাসন ব্যবস্থার অবসান হয়েছে এর মাধ্যমে । জিয়াউর রহমানের ক্ষমতারোহনের মধ্য দিয়েই সংবাদপত্রের মুখ, চোখ, কান খোলা ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ একসাথে চলা শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপতি জিয়া ছিলেন জনসাধরণের মানুষ ও জনগণের অকৃত্রিম বন্ধু।
কেবল তোষামোদকারীদের ওপর নির্ভর না করে সরাসরি জনজীবনের সুষ্ঠু ও সঠিক তথ্য সংগ্রহ করেছেন। জিয়া জনগণের কাছের মানুষ ছিলেন। পানির সরবরাহ বাড়লে ধনী কৃষকরা আরও ধনী হবে, কারণ, কৃষিকে প্রাণবন্ধ করতে পানির কোন বিকল্প নাই। সাতাত্তুর সালে বাংলাদেশ-ভারত পানি বণ্টন চুক্তি সইয়ের পরপরই শহীদ জিয়ার এই খালকাটা প্রকল্প আুসে। অধ্যাপক এমাজউদ্দিনন আহমেদ জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে বলেন, শহীদ জিয়া বাংলাদেশের ইতহাসের একটি গরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
সাতই নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব বাংলাদেশের রাজনীতির স্বতন্ত্র প্রকৃতিরই একটি ধারা। এ বিপ্লবের মাধ্যমে তিনি জাতীয় আকাঙ্খার মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠেছেন।বাকশাল বিরোধী চেতনার সুষ্পষ্ট অভিব্যক্তি। তিনি সিপাহি জনতার সামনে ত্রাতা হিসাবে দাড়ালেন । পরনির্ভরশীলতার সকল বাধা দূর করে জাতীয়তাবাদী চেতনায় সব বৈষম্য ও অনাচার দূর করতে ও জাতীয় সংহতি প্রতিষ্ঠা করতে । তিনি চেয়েছিলেন, বাংলাদেশ নিজের ওপর আস্থা রেখে মাথা উচু করে দাড়াক। আর বেগম খালেদা জিয়া আত্মনির্ভরশীলতার দুর্দমনীয় স্পর্ধার চূড়ায় অবস্থান করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ অত্যন্ত সহজ-সরল, দুবেলার অন্ন, মোটা কাপড়, মাথার ওপর চালা, নিরুপদ্রপ জীবন, একটু সুস্থতা এবং খানিকটা শিক্ষা জীবন যাপনের ক্ষেত্রে এই তাদের দাবি দা্ওয়া। আর এতটুকু পেতে তাদের হাড় ভাঙা খাটুনি খাটতে হয়। ক্ষমতাসীনরা তাদেরই হাত সাফাই করে বিলাসী জীবন যাপন করেন। বিদেশিদের কাছ থেকে তাদের নামে ঋণ এনে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হন। রাজনীতি যখন জনগনের কল্যানে হবে তখন দেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে বলে মনে করছেন তিনি। অথচ বাংলাদেশের গণতন্ত্রে প্রতিযোগিতার বদলে বৈরিতা আছে। ক্ষমতাসীনরাই রাষ্ট্রের সকল সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। যেখানে জনগনের কোন স্থান নাই। রাজনীতিবীদদের মুখ থেকে আজ সংঘর্ষে উৎসাহিত করা ছাড়া অন্য কোন কথা বলতে পারে না। কাজেই্ রাজনীতিতে এ অবস্থার পরিবর্তন আনতে হবে।
ড. এমাজউদ্দিন তার প্রতিটি লেখায় জাতীয়তাবাদী রাজনীতিকে বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক চরিত্র বলে উল্লেখ করেছেন। এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার ভুমিকাকে তিনি ভূয়সী প্রসংশা করেছেন। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া হলেন বাংলাদেশের রাজনীতির প্রধান চরিত্র। তিনি লেখেন, যারা জীবন বাজি রেখে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছে, তাদের স্বাতন্ত্র্য প্রীতির অহংকার কেউ কেড়ে নিক তা অসহ্য, অগ্রহণযোগ্য। এটিই হলো জাতির অধ্যাত্মসত্তা। চারিত্রিক অলংকার। বেগম খালেদা জিয়া তা সঠিকভাবে অনুধাবন করতে পেরেছেন। জিয়াউর রহমান যেমন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে সম্বিতহীন জাতিকে স্বাধীনতার অগ্নিপথে আহ্বান জানান। আত্মত্যাগের বিস্তীর্ণ প্রান্তরে সকলকে আহ্বান জানান। খালেদা জিয়া রাজপথের আন্দোলনকে একাত্ম হয়ে সে আহ্বানকে অনুভব করেছেন বারবার।
পরমান নিয়ে বিশ্বে কি হচ্ছে, ইউরোপে যেটা পরমানু যু
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই জুন, ২০১২ রাত ১:০৮