বৃটিশ আইনজীবী ও যুদ্ধাপরাধ বিশেষজ্ঞ টবি ক্যাডম্যানকে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে না দিয়ে বিমানবন্দর থেকে ফেরত দেয়ায় বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। এর মাধ্যমে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য বিচার প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বলে মনে করছেন বৃটিশ সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী উইলিয়াম গমেজ। তিনি বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ বিচারে বিদেশী আইনজীবীদের সম্পৃক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সুপারিশ করেছেন।
গতকাল সোমবার এক চিঠির মাধ্যমে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে এ সুপারিশ করেন। গত শুক্রবার ঢাকার বিমানবন্দর থেকেই বৃটিশ মানবাধিকার কর্মী যুদ্ধাপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ টবি ক্যাডম্যানকে ফেরত পাঠানো হয় । তিনি জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতৃবৃন্দ ও বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিদেশী আইনজীবী। তিনি একটি সেমিনারে অংশ নিতে এসেছিলেন। টবি ক্যাডম্যানকে ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে গতকাল উইলিয়াম গমেজ প্রধানমন্ত্রীকে এ চিঠি দেন।
চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, ইন্টারন্যাশনাল কভেন্যাট অন সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইটস (আইসিসিপিআর) এ বাংলাদেশ স্বাক্ষর করেছে। ফলে আইসিসিপিআর মেনে আর্ন্তজাতিক মানসম্মত বিচার করতে বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আর বৃটিশ ব্যারিস্টার টবি ক্যাডম্যান আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আটককৃত ৫ জনের প্রতিনিধিত্ব করতে শুক্রবার বাংলাদেশে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, যুদ্ধাপরাধ বিষয়ক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও যুদ্ধপরাধ বিশেষজ্ঞ স্টিফেন র্যাপ ট্রাইব্যুনালে বিদেশী আইনজীবী অর্ন্তভূক্ত করতে গত মার্চ মাসে বাংলাদেশের আইন ও পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়কে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিদেশী বিশেষজ্ঞ ও পরামর্শক নিয়োগ করা জরুরি। তিনি বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধের বিচার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সরকারের পক্ষ থেকে নিশ্চয়তা প্রদানের আহবান জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি নিউইর্য়ক ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক বিবৃতির কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
তিনি বাংলাদেশের আইনশৃংখলা বাহিনীর নির্যাতনের বিষয়ে উল্লেখ করে বলেন, আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আটককৃতদেরকে শারিরীক ও মানসিক নির্যাতনের একাধিকবার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসব অভিযোগ বিবেচনা করার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সুপারিশ করেন। নির্যাতনের এসব অভিযোগ নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছভাবে তদন্ত করতে তিনি সুপারিশ করেন।
তিনি আশা করেন, বাংলাদেশ সরকারের দেয়া ওয়াদা অনুযায়ী আর্ন্তজাতিক মান বজায় রেখে যুদ্ধাপরাধীর বিচার করবে। এ জন্য অভিযুক্তদের নিদোর্ষ প্রমাণ করতে এবং জামিন নিতে তাদের পছন্দমতো আইনজ্ঞ নিয়োগ দেয়ার সুযোগ রাখা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।