আজকাল মুক্তমনার নাম শুনলেই মনে করা হয় ইসলাম বিরোধী;
কেউ বা চাপাতি নিয়ে রেডী হয় মুক্তমনার কামসাড়া করে দিতে;
আসলে মুক্তমনা মতবাদ সম্পর্কে তাদের ধারনা কম
আসুন আজ জেনে নিই মুক্তমনা সম্পর্কে সঠিক তথ্য সমূহঃ
মুক্তমনার পরিপূর্ণ অর্থ হলো স্বাধীন মন থেকে কথা বলা, লিখা ইত্যাদী।
মুক্তমনার প্রকারভেদঃ
১/আস্তিক মুক্তমনা
২/ নাস্তিক মুক্তমনা
৩/ নিরপেক্ষ মুক্তমনা
★আস্তিক মুক্তমনার বিবরনঃ
যে মুক্তমনা নিজের ধর্মে দিক্ষিত ও পারদর্শী, অথবা এর বিপরিত শুধু ধর্মকে শ্রদ্ধা করে এমন মুক্তমনারা, তাদের মুক্তমন থেকে সর্বদা নাস্তিক মুক্তমনাদের
ও যারা মানব জাতীর অমঙ্গল কামনা করে তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন মন থেকে কথা বলেন,, এটা আস্তিক মুক্তমনার চিহ্ন বা পরিচয় ।
★ নাস্তিক মুক্তমনার বিবরনঃ
যে মুক্তমনারা শুধুমাত্র আস্তিকদের বিরুদ্ধে তথা ধর্মের বিরুদ্ধে স্বাধীন মন থেকে কথা বলে বিষেশ করে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে ;
তাদের অন্য কোনো টপিক নেই ইসলাম বা ধর্ম ছাড়া,
এটাই নাস্তিক মুক্তমনার চিহ্ন বা পরিচয় ।
★নিরপেক্ষ মুক্তমনার বিবরনঃ
যে মুক্তমনারা আস্তিকতা ও নাস্তিকতা উভয় দিক কে দূরে রেখে, ব্যতিক্রমধর্মী বিষয়ে স্বাধীন মন থেকে কথা বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে থাকে তাদের টপিক,
এটাই হলো নিরপেক্ষ মুক্তমনার চিহ্ন বা পরিচয়।
পর্যালোচনাঃ
উপরে বর্নিত মুক্তমনাদের প্রকারভেদে
আমরা পেয়েছি ৩প্রকার মুক্তমনা
এবার দেখা যাক এদের মধ্য সর্বশ্রেষ্ঠ মুক্তমনা কারা
প্রথমঃ
আস্তিক মুক্তমনা, এরা সাধারনত নাস্তিক মুক্তমনাদের বিপক্ষ নিয়ে থাকেন, কারন নাস্তিক মুক্তমনারা আগে আস্তিকদের ধর্মানুভূতিতে আঘাৎ দিয়ে থাকে যার ফলে তারা নাস্তিক মুক্তমনাদের বিপক্ষে গিয়ে স্বাধীন মন থেকে কথা বলেন,
এতে আস্তিক মুক্তমনাদের কোনো দুষ প্রমানিত হয়না, কেউ (আগে) একটা চর দিতে আসলে তার হাত ধরে ফেলা অন্যায় নয় বরং অধিকার।
যেহেতু আস্তিক মুক্তমনারা ততক্ষণ পর্যন্ত নাস্তিক মুক্তমনাদের বিরুদ্ধে স্বাধীন ভাবে কথা বলেননা, যতক্ষণ পর্যন্ত নাস্তিক মুক্তমনারা আস্তিকদের ধর্মানুভূতীতে আগে আঘাৎ না করে।
এছাড়া আস্তিক মুক্তমনারা বিভিন্ন টপিকের উপর স্বাধীন মন থেকে কথা বলেন, যেমন চুর, বদমাইশ, লুচ্চা, গুন্ডা, ধর্ষনকারী, ছিনতাইকারী, নিরীহ মানুষের সম্পদ আত্মসাদকারী, এতিমের মাল ভক্ষনকারী, সুদ আদান প্রদানকারী, ঘুষ আদান প্রদানকারী, যৌতুক আদান প্রদানকারী, ইত্যাদী যতরকম যাবতীয় অন্যায় কাজ রয়েছে তার বিরুদ্ধে আস্তিক মুক্তমনারা স্বাধীন মনথেকে কথা বলেন,
সব বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে
এই দৃষ্টিকোণ থেকে, আস্তিক মুক্তমনারাই প্রথমত শ্রেষ্ঠ।
দ্বিতীয়ঃ
নাস্তিক মুক্তমনা, এরা প্রথমত অন্যান্য টপিক মাথার মগজ থেকে বেড় করে দিয়ে একটি টপিক মাথায় ঢুকিয়ে নিয়ে স্বাধীন মন থেকে কথা বলে আর তা হচ্ছে "ধর্ম" বা ইসলামের বিরোধীতা
তারা যতদিন বেচে থাকে এই একটি টপিক মাথা থেকে বেড় করেনা, ও সর্বদা চেষ্টা চালিয়ে যায় বহুল প্রচলিত ও সু প্রাচীন সভ্যতা "ধর্ম " কিভাবে শেষ করে দেয়া যায় বা ধর্ম থেকে টেনে হেঁচড়ে কিভাবে সন্মানিত ধর্মাবলম্বীদেরকে বাইড়ে আনা যায়,
এই অপচেষ্টা চলতে থাকে তাদের জিবন ভর
তাদের মেধা ও বুদ্ধি দিয়ে সমাজ গড়ার প্রচেষ্টা করা তো দূরের কথা নিজের জিবনকে যেমন হেলা অবহেলা করে ঠিক অন্যের জিবনকেও, এবং তারা একটি বিষয় প্রমান করার অপচেস্টা করে আর তাহলো
"মানুষের জিবন অনর্থক" অবশ্য বিবেক বুদ্ধি সম্পন্ন মানুষের জিবন অনর্থক নয়,
মানুষের কোনো সৃষ্টিকর্তা নেই, কোনো সৃষ্টিকর্তা ছাড়া এসব হয়েছে, যদিও নৌকা তৈরী করতে গাছ লাগে গাছ কাটতে লোক লাগে, তক্তা করতে লোক লাগে নৌকার কাঠ একত্র ও জোড়া লাগাতে লোক লাগে, নৌকা সঠিক ভাবে চালাতে লোক লাগে, যা কিছু আছে তা কেউ না কেউ তৈরী করেছে অথচ তাকে নাকি কেউ তৈরী করেনি ?
গাজাখুরী চিন্তা ভাবনা
মানুষ সৃষ্টি হয়েছে এমনি এমনিই, যদিও মানুষ এমনি এমনিই সৃষ্টি হয়নি, মানুষের জিবন আর ছারপোকার জিবন এক কথা নয়;
মানুষ বানর থেকে এসেছে, মানুষের পূর্ব রূপ বানর, যদিও মানুষের বংশ মানুষ থেকেই হয়েছে;
মানুষের জিবন যাপন করে কোনো লাভ নেই, বেচে থাকা মানে উপভোগ, কিন্তূ উপভোগের সাথে যে দুঃখ কস্ট, অসুখ বিসুখ, মৃত্যু যন্ত্রনা সামনে রয়েছে সেটা তারা মনে করতেই নাকি কস্ট হয় তাহলে বেচে থাকা মানে শুধু উপভোগ হলো কি করে ? আজব তো;
দুনিয়াটা মস্তবড় খাও দাও আর ফুর্তি করো,
বাপের হোটেলে খেতে পারলে একটু আক্টু ফুর্তি করা যেতেই পারে, এটা স্বাভাবিক, অস্বাভাবিক নয়;
বিশেষ করে তারা ধর্মগ্রন্থের বিকৃত অর্থ করে, ভুল ভাবে ব্যখ্যা করে, ও ন্যায়ের বিপক্ষে থেকে অন্যায় করে, এবং ব্যক্তি আক্রমনাত্মক কথা তাদের আলোচনায় পূর্ন থাকে, ধর্মের মহানায়কের ব্যক্তিত্বের উপর মিথ্যা রটায়, ও ধর্মপালনকারী সহানুভূতিশীল মানুষদের ধর্মানুভূতিকে চুর্ন করে, যা ধর্ম পালনকারী সৎ মানুষদের কোমল হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করে,
আর তারা আরো অনেক গাজাখুরী বিষয় নিয়ে উপস্থিত হয় যা মানব জাতীর জন্য সম্পূর্ণ অকল্যানকর ,
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা গেলো নাস্তিক মুক্তমনারা গবেট মূর্খ, তারা জাতীর নিকৃষ্ট সন্তান, মানবতার শত্রু, আগে ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টিকারী,
তাদের উদাহারন যে ডালের আগায় বসে আছে সেই ডালে বসে সেই ডালের গোড়া কাটে এতে নিজেরাও মরে গাছের নিচে লোক থাকলে ঐ বেচারাও মরে, কেনো তাদের এমন পাগলামী করতে হবে ?
একটু সুখে আছে তো তাই বুঝি ভুতে কিলায়,
কি সুন্দর একটি সুখের জিবন, এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল, অথবা ল্যাপটপ কম্পিউটার, ইন্টারনেট সেবা, ব্লগিং করার সময়,বাবার টাকা, অথবা নিজের টিউশনির টাকা,
বাবার হোটেলে খাওয়া, আহ্ কতো সুখ; এই সুবিধা সুখের মুহূর্ত সময় ইনজয় করার কতো বিষয় আছে, কতো বিনোদনের উয়েবসাইট আছে
কতো শত টপিক আছে,
ঠিক এই সুসময় মুহূর্তে ইসলাম তাকে কি করলো?
কি মাথায় বাড়ি মারলো ? যে শত টপিক ফেলে দিয়ে আর কিছু নয় ইসলামের বিপক্ষে লিখতে হবে ???
মানুষ এতো সুন্দর সময়ে বা উপভোগের জিবনে কি করে এতো গর্ধব মার্কা ঢেউ টিন হতে পারে তা আমার বুঝে আসেনা,
কেনো ? আর কোনো টপিক ছিলোনা ??
আর কোনো ক্ষেত্রে মুক্তমনে কথা বলার অধিকার ছিলোনা,?
আমার জিবনে কোনো দিন কোনো নাস্তিক মুক্তমনাকে জাতীয় অন্যায় যৌতুকের বিরুদ্ধে লিখতে দেখিনি,
সুদ ঘুষ তো আছেই,
কে তাকে বলেছে বা কে ঘুষ দিয়েছে তাকে ইসলামের বিরুদ্ধে লিখতে ? ইসলামের মহানায়কের চমৎকার ব্যক্তিত্বের উপর মিথ্যে অপবাদ ছুড়ে মারতে ?
বা ইসলামের গ্রন্থ সমূহের ভুল ব্যখ্যা করে নিরীহ ও সৎ ধর্মপরায়ন মানুষকে বিভ্রান্ত করতে ??
ও বুঝতেপেরেছি অন্য টপিক মাথায় থাকবে কেমনে ?
মানি ও মাল পানি পাইলে মানুষ তো খুনও করতে পারে, তাহলে তারা সামান্য একটি কাজ ধর্মের বিরুদ্ধে লেখা, এটা পারবেনা কেনো ???
বাহ্ চুরাচালানি ভালোই গ্রহন করা হচ্ছে , ইসলামের বিরুদ্ধে লিখে লিখে ভালোই আর্নিং হয়, ঘরে বসে বসে ইনকাম ক্ষতি কি ?
এতে আরো প্রমান হয় নাস্তিক মুক্তমনারা নিজেরাই অন্যায় কাজে লিপ্ত তাহলে অন্যায়ের বিরুদ্ধে টপিক নিয়ে লিখবে কার বাবার সাধ্যে???
তাছাড়া নাস্তিক মুক্তমনাদের নৈতিকতার কোনো উৎস নেই,,
এসব দৃষ্টিকোণ থেকে প্রমানিত হয় তারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী সম্প্রদায়
অতয়েব নাস্তিক মুক্তমনাদের শ্রেষ্ঠত্ত্বের কোনো স্থান আর থাকলোনা, সর্বনিম্ন স্তরে নেমে আসলো ।
তৃতীয়ঃ
নিরপেক্ষ মুক্তমনা, এরা আস্তিকতা বা নাস্তিকতা ছেড়ে নিজেদের পরিচিত করে মানবতাবাদী হিসেবে
তাদের থাকে আলোচনার জন্য বিভিন্ন টপিক
বিষেশ করে তারা সাংসারিক, পারিবারিক, সমাজিক, রাষ্ট্রীয়, এবং বিভিন্ন দিক নিয়ে তারা আলোচনা করেন, কোনো আস্তিক যা করেন তাতে তাদের কোনো কিছু যায় আসেনা,
আবার কোনো নাস্তিক যা কিছু করে তাতেও তাদের কিছু যায় আসেনা,
আস্তিক ও নাস্তিক উভয় প্রকার মুক্তমনাদের সাধুবাদ জানায় তারা,
বিশৃঙ্খলা চায়না, এবং ধর্মীয় অনুভূতিকে শ্রদ্ধা জানাতেও কৃপনতা করেনা,
কোনো বিষেশ টপিক নিয়ে আলোচনাকালে তাতে আস্তিক নাস্তিক কেউ আঘাৎ পেলে ক্ষমা চেয়ে নেয় তারা,
তবে তারা যেহেতু ধর্ম নিরপেক্ষ থাকে তাই তাদের লেখা এতোটা ফলপ্রসূ হয়না যতটা ফলপ্রসূ হয় আস্তিক মুক্তমনাদের লেখা,
নিরপেক্ষ মুক্তমনাদের লেখা ফলপ্রসূ না হওয়ার কারন তারা আলাদা জিবন বিধান তৈরী করতে চায়, অথচ ধর্ম পরিপূর্ণ জিবন বিধান, যা সুপ্রাচীনকাল থেকেই সৃষ্টিকর্তার পক্ষ থেকে মনোনিত মানুষের মাধ্যমে যুগে যুগে তৈরী হয়েছে,,
আর নিরপেক্ষ মুক্তমনারা নিজেদের নৈতিকতা নিরপেক্ষতা থেকেই বজায় রাখতে শিখে, বিশৃঙ্খলা করা যাবেনা, কাউকে আঘাৎ দেয়া যাবেনা, চুরি, ডাকাতি, ইভটিজিং, অন্যায় কাজ এসব করা যাবেনা এটা করলে অন্যের অধিকার নস্ট হয় ইত্যাদী নৈতিক দিক বিদ্যমান থাকলেও তা এসেছে ধর্ম থেকে, আর এই নিরপেক্ষতা এক সময় নাস্তিকতার দিকে নিয়ে যায়,
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা গেলো তাদের মধ্যে ধর্ম না থাকলেও তাদের মধ্যে ধর্মের গুন আছে এ হিসাবে তাদের শ্রেষ্ঠত্ত্ব নাস্তিক মুক্তমনাদের থেকে বহু উপরে উঠে যায়,
এ পর্যালোচনায় নিরপেক্ষ মুক্তমনাদের মুক্তমনা হিসেবে বলা যায়, তারা দ্বিতীয়ত শ্রেষ্ঠ ।
শেষ আহবানঃ
আমাদের আলোচনা থেকে শিক্ষা নিন, প্রিয় নাস্তিক মুক্তমনা ভাই আপনি আপনার টপিক চেঞ্জ করুন অযথা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি থেকে দূরে থাকুন, কারো উপর ব্যক্তি আক্রমন অনুভূতিতে আক্রমন থেকে দূরে থাকুন, প্রয়োজনে ধর্মে আসুন, না পারলে নিরপেক্ষ থেকে যার যার কাজ তাকে করতে দিন আর শ্রেষ্ঠত্ত্বের মুকুট বুঝে নিন, সবার প্রতি শুভকামনা রইলো.....
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:২৫