সবাইকে স্বাগতম !!
আজ আমার জিবনের দুটি দাঁত হারাইলাম
মনে বড় দুঃখ, কি আর কমু !!..,
আপনাদের কাছে দুঃখের কথাটা কইয়া আমি একটু হালকা হই,,
আমার বড় চাঁচাঁ, থাকতো সৌদী জায়গাটার নাম "কাতার" গতকাল রাতে বাড়িতে আসছে, বাড়িতে টিন দিয়ে একটি ঘর দেয়া হচ্ছে, কাঁঠ মিস্ত্রী হাতুড় বাটাল পেরেক দিয়ে কাজ করতেছে
আমার চাঁচাঁ আবার খুব ইমানদার মানুষ, গায়ে এরাবিয়ান জুব্বা,মাথায় বিরাট পাগরী, মুখে ইয়া বড় বড় দাঁড়ি
কালকে আসছে বাড়ি
সকালে মিস্ত্রি এসে হাতুর, বাটাল, পেরেক দিয়ে টিনের ঘরের কাজ করতেছে আর চাঁচাঁ বসে বসে দেখতেছে
আমি ঘুম থেকে উঠেছি সকাল ৮টায়, উঠেই ভাবলাম চাঁচাঁর সাথে তর্ক করবো, ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে ও মুছলিমদের থুতনির জঙ্গল (দাঁড়ী) রাখা সম্পর্কে, (কারন আমি আগে থেকেই একটা দারুন যুক্তি ঠিক করে রেখেছি)তো যেই কথা সেই কাজ, বিছানা থেকে বানরের মতো এক লাফে উঠেই গিয়ে হাজির হলাম চাঁচাঁর সামনে, বললাম চাঁচাঁ কেমন আছেন?
সদোত্তর তো দিলোইনা দিলো এক ধমক,, "" বেটা লেখা পড়া করে দিন দিন গাধা হচ্ছিস "" বড়দের সাথে কথা বলার আগে ছালাম দিতে হয় এটাকি ভুলে গেছিস,,!
আমি বললাম চাঁচাঁ, ছালাম দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই, ছালাম অর্থ শান্তির দুয়া, কিন্তূ যাকে আমি আর যে আমাকে ছালাম দিলো, ছালামের অর্থ যদি হয় আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক, তবে আমিও দেখলামনা কোথায় কখন কবে ও কিভাবে শান্তি বর্ষন হলো, এটা শুধু মাত্র একটা মিথ্যে বাক্য ছাড়া আর কিছুই নয়, কারন ছালাম দেওয়ার পর তেমন কোনো শান্তি বর্ষন হওয়ার দৃশ্য চোখে দেখা যায়না।
আমার কথা শুনে চাঁচাঁ তো রাগে গিজগিজ করতে লাগলো, আমি মনে মনে ভাবলাম যাই হোক চাঁচাঁকে আজ জব্দ করবোই, তাই বাচালের মতো বলা শুরু করলাম যাকে একধরনের বিতর্ক বলা চলে,, বললাম চাঁচাঁ ইসলামের অনেক বিষয় আছে যা অনর্থক, যেমন মুছলমানদের দাড়ি রাখাটা জংলা পশুদের মতো কাজ, কারন আমি লেখা পড়া করে শিক্ষত হচ্ছি, এখন বুঝতে পারছি, আমি একজন যুক্তিবাদী, আসুন চাঁচাঁ যুক্তি দিয়ে তর্ক করি,
তারপর বললামঃ
দাড়ি রাখা একটা অনর্থক কাজ, এটা রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই, আমার যুক্তি হলো মানুষ যখন জন্মায় তখন দাড়ি থাকেনা, তাই মানুষ বড় হলে যখন দাড়ি হবে তখন সেটাকে চেছে ফেলতে হবে, মনে রাখবেন এটা মানুষের জন্মগত বৈশিষ্ট !! এটা বলে আমি চোখ বন্ধ করে খিক খিক করে দাঁত বের করে হাসতে লাগলাম। ( কারন আমার যুক্তির মোকাবেলা কেউ কোনো দিন করতে পারেনি)
এতক্ষন আমার বকবক শুনে চাঁচাঁ রাগে অগ্নিশর্মা হয়ে ক্ষেপে গিয়ে কাঁঠ মিস্তিরি যে হাতুড় দিয়ে কাঁঠের তক্তায় পেরেক মারতেছিলো সেই লোহার হাতুর দিয়ে আমার দাঁতের মধ্যে মারলো এক বারি, দাত ভেঙ্গে গিয়ে রক্ত বের হতে লাগলো, আমি বুঝতেই পারিনি কি ঘটে গেছে আমার হাঁসি মুখে, হঠাৎ এতো জুরে চাপট আঘাৎ পড়বে আমি কল্পনাও করতে পারিনি, আমার নিজের আপন চাঁচাঁ এমন নিষ্ঠুর ব্যাবহার করবে কোনো দিন ভাবিনি,
তো তারপর চাঁচাঁ আমাকে বললেনঃ
মানুষের জন্মগত বৈশিষ্ট যদি হয় যে জন্মের সময় মানুষের দাঁড়ি থাকেনা, তাই জন্মগত বৈশিষ্ট রক্ষার জন্য বড় হলে যখন দাঁড়ি গজাবে তখন সব দাঁড়ি গুটিয়ে গুটিয়ে উঠিয়ে ফেলতে হবে,
তুর যুক্তিতে যদি তাই হয় তবে আমার যুক্তিতে "জন্মের সময় মানুষের দাঁত থাকেনা, যখন বড় হবে ও মুখে দাঁত গজাবে তখন জন্মগত বৈশিষ্ট রক্ষার জন্য আজকের মতো
আমার হাতের লোহার হাঁতুর ডান্ডা দিয়ে তুদের মতো যুক্তিবাদীদের সব দাঁত ঠুকিয়ে ঠুকিয়ে উঠিয়ে ফেলতে হবে " কারন জন্মগত বৈশিষ্ট রক্ষা করতে হবে তো.. ;!
আমি বললাম চাঁচাঁ মাফ চাই,, আমি আর জিবনেও এই ধরনের অযুক্তিক কথা বার্তা কইমুনা, আমারে মাফ করি দ্যান,,,, চাঁচাঁ শান্ত হলেন, আমি বুঝতেও পারিনি চাঁচাঁ আমাকে এভাবে পথ দেখাবে, ও আমার বন্ধ চোখ খুলে দিবে, আমি যে একটা বদ্ধ পাগল হয়েছি নাস্তিক হয়ে তা বুঝতে পারলাম।
আমার এতো সুন্দর যুক্তিটাকে ঘার ধরে অযুক্তিক বানিয়ে দিলো..
তারপর থেকে বিছানায় শুয়ে শুয়ে ব্যাথায় কাঁদছি, আর ভাবছি চাঁচাঁকে মুখ দেখাবো কি করে লজ্জা হচ্ছে চাঁচাঁ যদি ভালো করে জানে আমি একটা নাস্তিক, তাহলে বাড়ি থেকে বেরও করে দিতে পারে, আবার ভাবছি গোপনে নাস্তিকতা ঠিক রেখে এগিয়ে যাওয়া একেবারে অসম্ভব,, কি করে কি করি তা দিশে পাচ্ছিনা, আমি এখন জমের মুখে, অবশেষে আমি অনেক চিন্তা ভাবনা করে বুঝতে পারলাম ধর্মীয় জিবনের কোনো বিকল্প নেই, তাই পূর্বের নাস্তিকতার ভুত মাথা থেকে নামিয়ে উচ্চ স্বরে বলতে বাধ্য হচ্ছি ব্লগে থাকা সকল নাস্তিক ভাইয়েরা আমি সত্যকে পেয়েছি ! ! !.....,
কোনো নাস্তিক ভাইয়ের যদি এখনো শুভ বুদ্ধি উদয় না হয়ে থাকে তবে, উক্ত নাস্তিক ভাইয়ার জিবন থেকে শিক্ষা নিন, সবাইকে ধন্যবাদ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে মে, ২০১৬ রাত ১০:০৭