somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

উপলব্ধি পর্ব-১

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আজকের দিনটা কেমন জানি কাটছে অরন্যেকের। শরীরের ভীতর লুকিয়ে থাকা অসুখগুলো নির্বিচারে মাথা চাড়া দিয়ে ঊঠছে। এদিকে জীবনের চাতুরতায় হারিয়ে যাওয়া সময়ে খুঁজতে গিয়ে মগজের নিউরন সেলগুলো বেপোরোয়া কর্মকান্ডে ব্যাস্ত সময় পার করছে। সব কিছু যেন এলোমেলো। পত্রিকার পাতায় পাতায় ঘুরে বেড়ানো আততায়ী লিখাগুলো খবরের অন্তরালের খবরগুলোকে মলিন করে দিচ্ছে। এই শহর বন্দরের পথে পথে ঘটে যাওয়া ঘটনার সত্য ব্যাখ্যা কেউ দিচ্ছে না। অথচ অরন্যক জানে আসল ঘটনাগুলো কি। কেন ঘটছে এসব। সবার মাঝে কেন এতো হতাশা কাজ করছে তার কারনটাও আজ স্পষ্ট। কিন্তু কিছুই করার নেই। ক্ষমতার পাল্লাটা খুব বেশি ভারি না বলে।।

অরন্যকের কবিতার একটা খাতাছিল সেটা হারিয়ে খুঁজে পেয়ে অরন্যক পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠায় ছড়িয়ে থাকা শব্দগুলো দেখছে আর ভাবছে, কি ছিলো আর আজ কোথায় এসে কোন ঠাসা দেয়ালে শ্যাওলাদের সাথে কথোপকথনে ব্যাস্ত সে। ঘরের কোনের শালিক পাখিটাও কেমন যেন নির্বাক হয়ে বসে আছে। সেই ছোট্ট বেলার হলুদ পাখিটাও মায়ের মতই অনন্ত পথের যাত্রী হয়ে পাড়ি জমিয়েছে অজানা গন্তব্যে। কোথাও কেউ নেই সব যেন নিরবতার অশালীনতায় বিকিয়ে দিয়েছে নিজেদের!

হঠাৎ বেজে উঠা ফোন কলের দিকে তাকায় অরন্যক তার কাজের ফোন, কোন একটা খবরে মনোযোগ দিতে হবে এখন। কিন্তু ধরতে ইচ্ছে করছে না। কি লাভ হবে যা জানবো তা কি বলা যাবে। অনেক অনেক বাধা আছে নোংরা কালো ধোয়ার মত। ইট পাথরের এই শহরে কিংবা গ্রামের সেই সহজ সরল মানুষটাকে ঠকিয়ে কি লাভ হবে। তবুও শুনতে হবে। ফোনটা ধরে অরন্যক, হ্যালো, বলতেই ওপাড় থেকে ভাই গরম খবর। অরন্যক বলে বেশি গরম নাতো কান বা হাত এমনকি মোবাইল ফোনটাও পুড়ে যাবে নাতো। ভাই জানেন একজন পেইন্টার এখন কোটি টাকার মালিক। রাজনীতি তাকে এতো টাকা দিয়েছে। ও আচ্ছা। তথ্য পাঠাচ্ছি। অরন্যকের উত্তর পাঠান। চেয়ারে হেলান দেওয়া অরন্যক ভাবে আর পাঠানো বার্তায় চোখ রাখে। ও আচ্ছা এই ব্যাপার। এটা এখন আর আন্দলিত করেনা। কারন কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরুবে, সাপ খুড়তে গিয়ে এনাকোন্ডা, প্যান্থার সব। এবং রেজাল্ট হবে, মাত্র ১০ ঘন্টার জন্য। তারপর লাউয়ের নাম কদু আর কদুর নাম ল্লাউ। বাহ চমৎকার না ব্যাপারটা।

লিখাটা কেমন জেনো মেড়মেড়ে হয়ে যাচ্ছে। আসেন একটা জোকস বলিঃ জোকসটা পুরনো তবুও বলি

রাস্তায় দাঁড়ানো এক ব্যাক্তিকে আরেক ব্যাক্তির প্রশ্নঃ ভাই পথটা কি হাসপাতালের দিকে গেছে?
রাস্তায় দাঁড়ানো ব্যাক্তির উত্তরঃ ভাই রাস্তার কি ডায়রিয়া না আমশয় হইছে যে হাসপাতালে যাবে?
সরল প্রশ্নের উত্তর উনি গরল করেই দিলেন। হাঁ পথ সর্বত্রই যেতে পারে, সংসদ থেকে পতিতালয়। লাশ ঘর থেকে আঁতুড় ঘর। কিন্তু বিসিবি বনাম সাকিব কিংবা ক্যাসিনো বনাম রাজনীতির পথ কোথায় যাচ্ছে? আমরা এখনও কেউ জানিনা।

এই বার আসি ডিজিটালাইজেশন এর যুগে। একজন অরন্যককে বললো ভাই আপনিতো অনলাইন আউটসোর্সিং এর ব্যাবসা করেন। তা ভাই আমি যদি ২০ লাখ টাকা দিয়ে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ওয়েবসাইট বানাই তবে এবং আমার ইনকাম আসলে ব্যাংক আমাকে লোন দিবে, সরকার তো বলছে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে যা যা করার সব করবে। অরন্যক অনেক্ষন হাসলো, বেশ উচ্চস্বরে হাসলো। আর বললাম ভাই ২০ লাখ না আপনি ২০ কোটি টাকা ইনভেস্ট করেন মাসে ২০ লাখ টাকা বাংলাদেশে বৈদেশিক মুদ্রা আনেন তবুও ব্যাংক আপনাকে বলবে ভাই আপনার প্রজেক্টতো ধরা যায় না, ছোঁয়া যায়না। কেমনে কি? অথচ আপনি হয়তো টাকাটা তাঁর ব্যাংক দিয়েই আনছেন। এবং সেই ব্যাংক জানেও আপনার ইনকাম কোথা থেকে আসছে। আমাদের ডিজিটালাইজেশন হচ্ছে, আপনি কষ্ট করে দিনরাত মার্কেট প্লেইসে বসে থাকবেন, টাকা কামাবেন আর সেটা বাংলাদেশে নিজেই কষ্ট করে ট্রান্সফার দিয়ে আনবেন আর খরচ করবেন দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ করবেন আর বিনিময়ে টোটাল ইন্টারনেট ফেসিলিটির ৫ ভাগের কম পাবেন সবাই মিলে। এবং বসে বসে দূর্নীতির চিত্র দেখবেন। আমরা আসলে ডিজিটাইলেশনে নেই, আছি ভাজিটাইলেশনে। প্রতিদিন প্রতিনিয়ত আপনাকে ভাজবে। আর কিছু জানতে চান, না ভাই থাক; বুঝছি। দেখি ৬ মাসের মধ্যে আমার প্রজেক্টটা এখানেই দাঁড় করাই এবং সব গোছাই পাসপোর্ট তো করাই আছে। কোন একটা দেশ দেখে এপ্লাই করি। যাইগা। অরন্যক উত্তরে বললো আচ্ছা।


অরন্যক একা একা হাঁটছে, আর ভাবছে, সব কিছুর দূরত্ব যদি দূরন্তপনায় অতিক্রম করা যায়। তবে দূর্নীতির ব্যাধিটাকে একেবারে নির্মূল করা কেন যাবেনা দূরন্ত অভিযানে। অরন্যকের আজ খুব ছেলে বেলার কথা মনে পড়ছে। সেই দূরন্ত শৈশব, খেলার সাথী, পাখির কলতান আর সেই গানঃ
এই যে হলুদ পাখি,
বসে জামরুল গাছের ডালে
কত ডাকা-ডাকি
আমার শৈশবের সকালে।

একদিন গেলো উড়ে
জানিনা কোন সুদূরে!
ফিরবে না, সেকি ফিরবেনা
ফিরবেনা আর কোনদিন?


সবাই ভালো থাকুন, সন্দর থাকুন। এই কামনায় বিদায় বলার কি দায় না থাকলেও বিদায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:২৪
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×