আমারে তুমি কোন রূপে খুজেছো, সাদা-কালো রং; নাকি উদ্দম যৌবনের বৈষম্যে?
জানালা দিয়ে সক্রেটিসের পাঠশালা চোখে নাও;
দেখো, হাজারো মূর্খের ভীড়ে বড় অজ্ঞজনই বলছেন, “আমি জানি যে, আমি কিছুই জানি না”। তার সেই পুস্তকহীন কল্পনার ভান্ডার থেকেই জাগ্রত হতে থাকল, “'নৌ দাইসেল্ফ (নিজেকে জানো)”।
রাঙ্গা প্রভাতের পূর্ব ক্ষণ,
কিংবা প্রাক-সক্রেটীয় দর্শন,
হয়তোবা এনাক্সাগোরাসের পূর্ব অন্য কোনো অজানা ভূবন;
দেখেছে, ভেবেছে, বলেছে, বেঁচেছে, মরেছে।
সুতরাং তন্দ্রার তরল বাষ্প হয়ে জাগরিত জীবনে জমা হলে, মূর্খের ভীড় থেকেই কোনো এক ব্যাতিক্রমী বোধ শ্রান্তির আসরে নিজের অবস্থান তৈরি করে, পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠায় জ্ঞানের যাত্রাকে উপযুক্ত করে।
আসমানের রূপে, যখন চাঁদের চাদোয়ায় কল্পনার ভাজে ভাজ আসে; তখন সমগ্র পৃথিবীর জ্ঞান সারিবদ্ধ হয়। একে একে তোমার আবেশ, উদ্দীপনায় তরঙ্গ সৃষ্টি করে। সত্যি বলতে, তার পর পরই জ্ঞানের তিয়াস অঙ্গাঙ্গিতে মিশে যেতে চায় তীব্রতার কোমল বোধে।
প্রিয় অনুভব আমার,
জানি, তুমি কোনো পুস্তক নও। নও কোনো প্রাকৃতিক সৌরভ; তবুও টান আসে। তোমার সেই টানে জ্ঞানের সাথে স্রষ্টার সৃষ্টিরা ভাবনার দোলনে আন্দোলিত হয়।
জন্ম-মৃত্যুর ছায়ার মতো বক্ষের পাজরের কাঠিতে ঝুলে থাকে যে বোধ, তার জন্য মায়া নিতে নিতেই, এক সময় মানুষ ভালোবাসতে শিখে। ভালোবাসার বোধ সীমানা ডিঙ্গাতে পারলেই, লোভের মৃত্যু হয়। মৃত সে লোভের কবরেই নির্বাসিত হয় হিংসা ও ঘৃণা।
যার জন্ম নেই; তার মৃত্যু দেখবে কীভাবে? পাপের দাঁতও কামড় বসাবে পাপে; দেখে নিও। সময়ের ফলাফল দিক ভুলে গেলেও; তার সাথে গোপনে কিংবা প্রকাশে সাক্ষাৎকার হবেই হবে।
ভিন্ন কোনো জগতে, অনন্য বিশ্বাসে, সকল মহতের ভাবশিষ্য সক্রেটিক্সরা ভাবে।
যে রাজনীতিতে রাজা নেই, সেই রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার জন্যই তারা জ্ঞানের চর্চা করে। এক একটি দেহ, এক একটি সাম্রাজ্য। এ সাম্রাজ্যের সম্রাজ্ঞীই সম্রাট; সম্রাটই সম্রাজ্ঞী। নদী দেখো, সমুদ্র দেখো, দেখো আকাশ। তারা লিঙ্গ ব্যতীতই টিকে আছে।
তাদের দেখার জন্য, অভিস্রবণ করার জন্য জাত-পাতের বিভাজন নেই।
হাসির কাদন দেখার জন্য যে ভীড়ের উদয়; তা কান্নার হাসিতে প্রয়োগ করলেই কাননের সবুজ পাতাতেও পুস্প সৌরভ ধরা দিবে।
জানা-অজানা লোকেদের অবস্থা ফিরে ফিরে দেখার জন্য যে চোখ ভাষার বাজারে নিজেকে নিলাম করে না; সে চোখের তিয়াস পরিচিত হোক বা না হোক, এটিকে পাহারাদার ভাবা যাবে না। অবসান বলো না; পৃথিবীর জটিল জটিল সমীকরণের মতো তোমার-আমার সম্পর্ক সমাপ্তি টানার নয়।
প্রিয় সাতিশয়েরা আমার,
তোমাদের ঘর নেই; নেই জীবন-মৃত্যুর অনুভব। ভাব এমন, যেন স্বর্গের সিঁড়ির গল্প যারা জানে; তারাই যুগে যুগে যুক্তি ও সত্যের সামনাসামনি বসে নির্দিধায় হেমলক পান করে। তারা বোধহয় জানে, এক সক্রেটিক্সের মৃত্যুতে জন্ম হয় শত শত প্লোটোর।
এক সক্রেটিক্সের সত্যের প্রণয়ের পরিণতিতেই সামনে আসে হাজারো অ্যারিস্টটল।
তারা বেঁচে থাকুক, মৃত্যুর মতো দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে।
প্রজন্মের ভিক্ষুক ঘাস চায় না; অথচ সবুজের বর্ণ তার সৌখিনতা। সত্যের হোকাররা রাজনীতি করতে করতে ক্ষুধার্ত হাসির ভয়াবহতায় নিজেকে বিলিয়ে দিলেও, নিজেকে পায় না। অমৃত হতাশার জন্য এক পাল নাগরিকের মিছিল, ঘুর্ণায়মান হয় মিথ্যার ভাগ্য সন্ধানে। সেখানে ছোট-বড় বিভেদের দ্বন্দ্বরা জল পরিদের পাকস্থলিতে আজন্ম দুগ্ধের সন্ধান করে।
শত্রুদের ভীড়, হতে পারে ফসলের সুষম বন্ঠন। বন্ধুর অশ্রু কিংবা মায়াতে রইতে পারে ধ্বংশ হওয়ার বিদ্রোহী প্রবণতা। আত্ম বিবেচনার নিজস্ব কামনা; হতে পারে সত্যের যাতনা। তাই রূপ, মনঃ সাধনা, ঝুকে যাওয়া জৈবিক প্রবঞ্চনার মুক্তি না হোক!
সব সময় মুক্ত স্বভাব ভালো নয়, প্রিয়। মুক্তরা যুক্ত করে আইনের অপরাধ।
দেখো, অদেখার ঝাপসা আরশিতে, রঙ্গিন তার রং চুরি করে।
তালিকাভুক্ত সত্যের বিপক্ষে কত সত্যরা বিদ্রোহ করে; যদি তুমি বুঝতে! নিয়মের হর্তা-কর্তাদের মতো নিঠুর, নাকি নিয়ম মান্যকারী গোলামের মতো বিধুর,
তুমি কি জানো? বিধিসম্মত মানুষের ভীড় সব সময় ভালো নয়, প্রিয়।
ভীতিবিহ্বল আখ্যান দেখানোর জন্য যারা উতলা, তারা কি নিজের অন্তরের গহীনের ভয় চিবিয়ে খেয়েছে? সম্ভাবনার জুয়া দিয়ে অপরাধ করা যায়; কিন্তু ফলাফলের দায় এড়ানো যায় না। মশা কিংবা মাছির অস্তিত্ব দেখো; তাদের সাথে কি কেউ ভালোবাসার প্রাসাদ নির্মাণের চুক্তি করতে পারে? খায় খায় স্বভাব ভালোবাসার যোগ্য নয়, প্রিয়।
বন্ধু আমার, যখন নিথর হবো; এই পৃথিবী, এই নীলাকাশ হতে অধিকার হারাবো কিসমত ওয়ালাদের মতো। তখন অস্তিত্বহীন হলেও সম্ভাবনার দিকে দেখো, সক্রেটিক্সের দেখা পাবে।
#ভাবনাই #সক্রেটিক্স
#আব্দুল্লাহ #আল- #মাহমুদ;
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুন, ২০২২ রাত ১০:০৯