somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সুখ-দুখ বিলাস

১৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সুখের অসুখে যদি পেয়ে যাই দুঃখের সেবা; তবে সেও পাশে থাকুক সাধনার মতো করে। তাকে পেলেই বিদ্রোহের চরম উত্তেজনাতেও প্রেম হবে।
দীর্ঘকালের স্বপ্ন ছিল, কোনো এক সন্ধ্যায় চাঁদ তার যৌবন হারিয়ে কেঁদে উঠবে তোমার দুয়ারে। সেই ক্ষণে তুমিও বাতায়নের ওপাশ থেকে গান ধরবে। সেই গানের সুর প্রকৃতির সাথে মিশে গেলে; পাখি হব।
প্রেমিক-প্রেমিকারা যেথায় ফেলে যায় তাদের সকল অভিমান; সেথায় বসে গল্প করব দু’জনে। অভিমান ভাগাভাগি শেষ হলে নীলের সবুজে ফিরে যাব।
ঘুপটি মারা যে পাখিরা নীড়ে থাকে; জীবনের জন্য আফসোস না হয় তারাই করুক! আমি বরং তোমার সাম্রাজ্যে, দরিয়ার পাশে কোনো গাছে বসে সমুদ্র দেখব। সুতরাং ভুল করেও তখন অন্তত দরিয়ার জল কাজলে লাগিওনা। তোমার কাজল ভিজে গেলে কী দেখব?
দীর্ঘ অশান্তির পর যখন শান্তি আসে, তখন আমাদের সকলেরই জঙ্গলের পাখির মতো ছুটাছুটি কিংবা ডাকাডাকির প্রয়োজন হয়, জাত প্রাণিত্বের বৈশিষ্ট্যে। এই যেমন, সম্ভাবনা নেই; তবুও প্রেম আসে গোপনে। ইচ্ছা নেই; তবুও নিবৃত্ত হতে হয় এটির সার্বজনীনে।
বিষের তীব্রতা প্রেম দরিয়ায় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পাশাপাশি, মাটির পচন হলে, দেহের বিন্দুগুলো হারিয়ে যাবে কোনো এক সীমানা ধরে। তারপর ধীরে, বোধহীন জগতের সময় নিজেকে ফিরে পাবে নতুন করে। ভাবনারা জীবন পাবে। বন্ধন তার চুক্তি শেষে মুক্ত হবে। নির্দিষ্ট সময় পর সকল রস স্মৃতি হয়ে যাবে।
তাইতো বস্তুনিরপেক্ষের আজন্ম জিজ্ঞাসা, স্মৃতিচারণে কী লাভ? সেই জিজ্ঞাসার উত্তর দিবে স্বভাব। সে তার মুর্খতা থেকে বলে যাবে-
স্বর্গ দেখেছি নরকের সভায়। সেখানে বুক ভারী করা ব্যদনাদের দ্বন্দ্ব চুকে গেছে। এখন মরণ ক্রিয়া স্থগিত করার জন্য তমালিকার বনে নির্মল অশ্রুর দিঘীর পাড়ে বসে থাকা যায় অপমানের সূত্র ধরে। সত্যি বলতে, লোকালয়ে থেকেও যে নিজের ভিতরে নিজেকে আড়াল রাখে; তাকেই সুখের অধিকার দেয়া হয়।
মরণ, যেমন গোপনে পিরীত করে জীবনের সাথে; তেমন শক্তি অর্জনের জন্য গোপন হতে হবে। জাত পাগলের দল ডাক দিলেই তা বাধ্যবাধকতা নয়। বাউলা ভাব হলেই সবাই সন্যাসী হয় না। সন্ন্যাস কিংবা বৈরাগ্য আমার সাথে যায় না। আমি সংসারের জালে জড়িয়ে থেকেই মুক্ত হব। তুমি পাশে থেকো। অনুভব আড়ালে রেখে তোমার-আমার পড়া হবে গোপনে, দেখা হবে গোপনে, অনুভব হবে গোপনে, জীবন বেঁচে যাবে গোপনে, বারে বার প্রাণের টানে ব্যথারা জমা থাকবে গোপনে।
সেই গোপনের মরণ, মৃত্যুর পূর্বেই মৃত থাকুক যেন কাফনের দায়ভার এড়ানো যায়।
বিমর্ষরা হর্ষের আবাদ জানে না। তবে, চন্দ্রের কুরূপ নক্ষত্রের সমাবেশে মনোহারিতা হলেও জলহীন সমুদ্রে তার আবেশ অপ্রসন্ন হতেই পারে।
দখলদারের দখলেও দখল নেই। শূন্য সময়ে; প্রক্রিয়াধীন জীবনের বৃদ্ধি থাকবে। মেঘের পরে মেঘ কোন এক টানের ফলাফল; ধীরে জ্বলে ওঠা আগুনের দীর্ঘকালের স্থায়িত্বেও প্রশ্ন রাখতে পারে।
ভুল কি অস্বাভাবিক?
অপরাধের ইন্দ্রজাল থেকে কে মুক্ত?
খাপছাড়া মানুষের ভীড়ে খাপওয়ালা জন কে?
মনে রেখো অহংকারি বোধ আমার, মরিয়া গেলেও পাবে না তারে; সেও পাবে না কোনোদিন তোমারে । এই পৃথিবীতে কেউ কাউকে পায় না। এটা সম্ভব নয়।
মরণের যাতনা লিপিবদ্ধ হয় যে ঘুমে, সেই নিদ্রার হিসাব হারিয়ে যায় যদি দূর কোনো অসীমে। তবে অধিকাংশ আত্মারা চির নীলাভে নীল হবে!
প্রতিটি মানুষ, সময়ের প্রেমে পড়ে। সময়ের বিরহ, চলমান প্রক্রিয়া। কাল যত কালের গভীরে হারিয়ে যাবে, স্মৃতির রঙ ভাঙতে থাকবে। তখন প্রশ্ন উঠবে- তুমি কি আলো; নাকি অন্ধকার?
মৃত্যুর মতো সত্য নাকি অদেখা অস্পষ্টতা ধাঁধাঁর?
তুমি দেখে, হেসে দাও; আহা, তাতেই যেন আমার হয়ে যাও।
বাস্তবতার গল্প যদি শুনতে চাও তবে নিকটের চেয়েও কাছের অনুভবে কান রাখো। শুনতে পাবে বাস্তব বোধ। পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণ একে-অন্যের কাছে দায়বদ্ধ। ভালোবাসার এ দায়বদ্ধতা থেকে কেউই মুক্ত নয়।
সে দিনের একটি ভাবনা:
কোথা থেকে যেন একটি বিড়াল এসেছে গত ৪/৫ মাস হলো। মাছের কাটা স্বযত্নে দিই বলে বেশ বুঝতে পারে আমাকে। খাবার সময় পাশে এলে বলি নেইরে, মাছ নেই। ও বুঝে যায়, মাছ নেই। কোনো রূপ বিরক্ত করে না। মাঝে মাঝে ভুল করে ওর লেজে পা মাড়িয়ে দিলেও জাস্ট চিৎকার করে ওঠে কিন্তু ফির আঘাত করে না। সেদিন হঠাৎ করে, সেই বিড়ালটিকে দেখে অন্য একটি প্রাণির কথা মনে পড়ে গিয়েছিল।
আমাদের কয়েক ঘরের উঠোনে চড়ে বেড়ানো একটি কুকুর ছিল। গত ৩/৪ মাস হলো মারা গেছে। সেটিও ঠিক এমনই ছিল।
রাত ১২ টা কিংবা ১টার দিকে কোথা থেকে এলেও দূর থেকেই ও সব বুঝতে পারত। কোনোরূপ শব্দ করত না। বরং বাড়ি প্রবেশের আনেক আগে থেকেই আমাকে যেন রিসিভ করে নিয়ে যেত।
ইদানীং বাড়ির মুরগি কিংবা হাঁসকেও দেখছি, পাশাপাশি ঘোরাফেরা করে।
কে যেন অভয়ের ভ্যাকসিন দিয়ে দিয়েছে।
আমাকে ওরা কেউই ভয় করে না।
ধারণা হল: আস্থার চর্চায় বিশ্বাস পোক্ত হয়।
বিশ্বাস ও আস্থা সমার্থক হলেও বর্ণের রূপ ভিন্ন। সেই ভিন্নতা, উদ্দেশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না। জ্ঞানের সাথে বোধের প্রেম হলেই প্রাণের মুক্তি হবে।
আউলার মনে, বাউলার জন্য অনুভূতিপ্রবণতার ঝোক এলে, বোধের সভায়, সাধনার রূপ স্থির হতে থাকবে। ধীরে ধীরে অহংকার, পরচর্চা কিংবা হিংসার মতো রোগ বিলীন হবে। মৃত্যুর চেয়ে বড় ধ্যান আর কিছু নেই। জীবন-মৃত্যুর পাশাপাশি বসবাসই উচ্চতম ধ্যান।
এ ধ্যানমগ্নতার অভাবেই মানুষের বন্ধন মুক্ত হয় না। ধন-সম্পদ, স্ত্রী-পুত্র-পরিজনের বন্ধন তীব্রতা, মৃত্যু ভাবনাকে দূরে রাখে। আবার এই বন্ধনই মৃত্যুকে, শোকের চাদড়ে মুড়িয়ে, বিদায়ের করুণ অনুভবে, চির সত্যের সৌন্দর্য্যতে প্রকাশ করে।
বন্ধনের স্বাধীনতায় মুক্তি পাক সকল বন্ধন!
তুমিও সময় হলে, জীবনের মতো বুকের পাজর ছেড়ে চলে যেও; জীবন্ত সত্তা তোমাকে পাক! প্রাণের মেলায় তোমরা জীবিত থাকো।
----
----- সুখ-দুখ বিলাস
----- আব্দুল্লাহ আল- মাহমুদ।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৩৮
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×