বাংলাদেশের পরিস্থিতি বিগত যেকোনো সময়ের তুলনায় এখন অনেক বেশি বিক্ষুব্ধ, তবে সম্মিলিত ক্ষোভ প্রকাশিত হতে পারছে না, আংশিক রাজনৈতিক দলগুলোর নিজস্ব অবকাঠামোগত দুর্বলতার কারণে, আংশিক অনির্ধারিত মেয়াদে ক্রিয়ারত আপাতশিথিল জরুরী অবস্থার কারণে। তবে অস্থিরতার উত্তাপ সবার গায়েই লাগছে কম বেশী।
মূলত এখন আপোষ এবং সমঝোতা, সহিষ্ণুতা এবং বিদ্রোহ পাশাপাশি চলমান। ক্ষমতার রশি কার হাতে? নিয়ন্ত্রন করা এবং নিয়ন্ত্রিত হওয়ার ভুমিকায় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা।
নিরাপদ পলায়নের রাস্তা খুঁজতে উদগ্রীব ১১ জন উপদেষ্টাকে অন্তত এই প্রশ্নের উত্তরটা দিতে হবে জনগণকে। আদতে গত ২০ মাসে বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে কোন পথে। আমরা গণতন্ত্রায়নের রাস্তা কতটুকু পাড়ি দিয়েছি? আমাদের লাইনচ্যুত গণতন্ত্রের রেলগাড়ীটা আদৌ কি সঠিক লাইনে উঠেছে? আমরা রেড সিগন্যালে আটকে আছি অনেক দিন। গনতন্ত্রের রেলগাড়ী কি গ্রীণ সিগন্যাল পেয়েছে এই ২০ মাসে। সার্বিক পরিস্থিতি ১১ই জানুয়ারীর আগের তুলনায় কি উন্নত এখন?
অবশ্য দায়বদ্ধতাহীন স্বেচ্ছাচারী রাজন্যের ভুমিকায় থাকা এই ১৬ জন উপদেষ্টার দায়িত্বের ভেতরে এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তাদের নিজস্ব দায়বদ্ধতাহীনতার কারণেই তারা বিভিন্ন বক্তব্য দিতে উদগ্রীব হলেও আদৌ আমাদের অগ্রগতি হলো কি না এটা নিয়ে কোনো বক্তব্য দিতে নারাজ।
প্রধান উপদেষ্টা রাষ্ট্রীয় সফরে সস্ত্রীক বিদেশ ভ্রমনে যাচ্ছেন , সেখানে রাষ্ট্রীয় সংবর্ধনা পাচ্ছেন, আমাদের গর্বে বুক ফুলে উঠবার কারণ রয়েছে । তবে মূলত দ্বি-পাক্ষিক আলোচনা এবং বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির তুলনায় প্রধান উপদেষ্টার লিখিত বক্তব্য এবং প্রেস কনফারেন্সের মূল প্রতিপাদ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করা।
জাতিসংঘে গত ১ বছরে প্রধান উপদেষ্টা ২বার বক্তৃতা রেখেছেন, দু বারই তার বক্তব্য মূলত নির্বাচনকেন্দ্রীক ছিলো। প্রথম বার তার বক্তব্য ছিলো অবশ্যই দ্রুততম সাম্ভাব্য সময়ের ভেতরেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশে। উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা এই বিষয়ে তৎপর। দ্বীতিয় এবং সাম্প্রতিক সময়ে দেওয়া ভাষণেও একই সুর, ১৮ই ডিসেম্বর অবশ্যই বাংলাদেশে নির্বাচন হবে। নির্বাচন হওয়া বিষয়ে কোনো সংশয় রাখছেন না প্রধান উপদেষ্টা। বোধ হয় ২০ মাসে এই প্রথম নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন উপদেষ্টা প্রধান।
তিনি যেখানেই যাচ্ছেন সেখানেই একই বক্তব্যের তসবি পড়ছেন। অবশ্যই নির্বাচন হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ করবার জন্যই উপদেষ্টা পরিষদ কাজ করে চলছে। সেটা ইউরোপ আমেরিকা, এশিয়া দেশের গণমাধ্যম এবং বৈদেশিক গণমাধ্যম, সবার সামনেই নির্বাচনের জপ চলছে। এরপরও বোধ হয় সবাই ঠিক নিশ্চিত হতে পারছে না , নির্বাচন বিষয়ে নিঃসংশয় হয়ে উঠবার পরিস্থিতি বোধ হয় বাংলাদেশে কোনো কারণে অনুপস্থিত।
মূলত জরুরী অবস্থা বিষয়ে একটা গোঁড়ামির আশ্রয় নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ এবং প্রশাসন। উপদেষ্টা পরিষদ এবং প্রশাসন বাংলাদেশের ভেতরের চাপ বিক্ষোভের আঁচ অনুভব করছেন। যেকোনো মুহূর্তেই পরিস্থিতি বিস্ফোরণউন্মুখ হয়ে উঠতে পারে এই বিষয়ে তারা অবহিত।
মানবাধিকার রহিত ২০টা মাস অতিক্রম করে আসলাম আমরা। সীমিত গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মূলত অলিখিত নিয়ন্ত্রন এবং প্রকাশ্য হুমকির ভেতর দিয়ে যাচ্ছে মূদ্রন শিল্প। বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক সরকারে চামড়াছিলা কলাম লিখিত হচ্ছে তবে সেটাও কিছু কিছু সম্পাদকের কাঁচির নীচে কাটা পড়েই প্রকাশিত হচ্ছে।
মানবাধিকার স্থগিত থাকবার এই ২০ মাসের প্রথম দিকটাতে জনগণের উচ্ছ্বাস কম ছিলো না। বরং অনেক বেশী উচ্ছ্বসিত হয়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকার এবং সামরিক হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছিলো জনগণ। এমন কি জরুরী অবস্থা জারী এবং রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করবার সিদ্ধান্তকেও মেনে নিয়েছিলো হাসি মুখে। তবে মূলত হাইপ্রোফাইল চাকুরি করা এইসব জনবিচ্ছিন্ন মানুষের সাধারণ মানুষের চাহিদা বুঝতে অনেক সমস্যা হয়েছে। তারা বাংলাদেশে থেকেও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন এবং নির্বাসিত জীবন যাপন করেছেন ।
বাজারে খাদ্যদ্রব্যের দাম কত হওয়া উচিত এবং বাংলাদেশের সামগ্রীক উৎপাদন বিবেচনা করলে এই সময়ে বাজারে চালের দাম কোথায় স্থির থাকা উচিত এই বিষয়ে কোনো ধারণা নেই অর্থনীতিতে পিএইচডি করে আসা প্রধান এবং অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টার। চাহিদা- যোগান রেখা, বিশ্ববাজার, তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, এইসব বিষয়কে তারা অজুহাত হিসেবে দাঁড়া করিয়েছেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং এর প্রতিক্রিয়াও দায়ী হয়েছে। এখনও অভিযুক্তের তালিকায় উঠে আসে নি গ্রীণ হাউজ ইফেক্ট- যার কারণে বৈশ্বিক জলবায়ুতে পরিবর্তন অযোগ্য একটা বিবর্তন ঘটে গেছে। এটাকেও মূল্যস্ফ্রীতির জন্য দায়ি করা যেতো। শিক্ষিত মানুষেরা এটা না করে তাদের অসীম বিবেচনার পরিচয় রেখেছেন।
আমরা কতটুকু আগালাম এবং কতটুকু পিছালাম এই নিয়ে একটা আলোচনা হতেই পারে। বিবেচিত হতে পারে আদৌ রাজনৈতিক নিপীড়ণ প্রয়োজনীয় ছিলো কি না।
১২ই জানুয়ারী ২০০৭এর সকাল থেকে যা মনে হয়েছে এখনও সেই ভাবনাকে আমার কোনো ভাবেই বদলে দেওয়ার যুক্তি পাচ্ছি না। এখন মূল গোলোযোগ সেই সব অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপের সাংবিধানিক বৈধতা এবং ভ্রান্ত কর্মকান্ডের যথার্থতা প্রতিপাদনের প্রচেষ্টা। মূলত গত ৪ মাসের উপদেষ্টা পরিষদের কর্মকান্ড এই নির্দিষ্ট একটি লক্ষ্যকে পুরণের বিভিন্ন প্রচেষ্টা।
সাংবিধানিক বৈধতার প্রশ্নটা গুরুত্বপূর্ণ, সেটা গত বছর এপ্রিল মাসেও যেমন গুরুত্বপূর্ণ ছিলো এই সেপ্টেম্বর মাসের শেষেও একই রকম গুরুত্ব বহন করে বৈধতার প্রশ্ন। জরুরী অবস্থায় সর্বোচ্চ মেয়াদ বিষয়ে বাগ্মিতার সুযোগ পেয়ে সংবিধান বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য এবং আমার নিজস্ব অনুভবের পার্থক্যও লিখেছিলাম একদিন। আমি আগামি বছরও এই অনুভবটাকেই ধারণ করবো। ১১ই জানুয়ারীর রাতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করবার কোনো প্রয়োজন ছিলো না। প্রয়োজন ছিলো না রাজনৈতিক নিপীড়ণ এবং রাজনৈতিক শোধনের নামে মাইনাস টু ফর্মুলার পৃষ্ঠপোষকতা করা কিংবা নিজস্ব উদ্যোগে বিকল্প একটা রাজনৈতিক মঞ্চ তৈরির তোড়জোর করাও অপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ ছিলো।
এই সব অযথার্থ কাজের বৈধতার স্বীকৃতি কিংবা আশ্বাস না পেলে বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ তাদের বর্তমান স্বেচ্ছাচারী ক্ষমতার আরও অপপ্রয়ং করবেন এবং তারা এটা করতে প্রস্তুত।
দর কষাকষির কোনো সুযোগ তারা বাদ দিতে নারাজ। তাই হাসিনার জামিনের বিরোধিতা করছে সরকার। একই কারণেই খালেদাকে অভিযুক্ত করে চার্জশীট দাখিল হয়েছে। এটা দর কষাকষির প্রয়োজনেই উপদেষ্টা পরিষদ নিজের কাছে রেখেছে। এই মুহূর্তে আশ্বস্ত করলেই আওয়ামী লীগ যদি সকল অযথার্থ পদক্ষেপের বৈধতা দিয়ে দেওয়ার প্রশ্নে সম্মতি জানায় তাহলেই হাসিনার জামিন দ্রুততম সময়েই হয়ে যাবে। একই ভাবে যদি নিশ্চিত ভাবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিষয়ে গোঁ ছেড়ে দেয় চার দলীয় জোট তবে খালেদার নাম চার্জশীট থেকে মুছে ফেলা হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোকে চাপের ভেতরে রাখবার কৌশল রপ্ত করেও আদতে লাভ হয় নি তেমন। রাজনৈতিক শোধন না হলেও অন্তত এই সরকারের সাফল্যে যুক্ত হবে কতগুলো চিহ্নিত রাজনৈতিককে অবসর গ্রহনে বাধ্য করবার দক্ষতা। রাজনৈতিক সংস্কৃতি বদলের কোনো সম্ভবনা না থাকলেও কতিপয় রাজনৈতিক অবসরে গিয়েছেন বাধ্য হয়ে এটাই বোধ হয় ১১ই জানুয়ারী ঘটবার একটা ভালো দিক।
দুর্নীতি প্রমাণিত করতে না পারলেও হাওয়া ভবন এবং এর সংশ্লিষ্ঠদের বিষয়ে নির্মম হতে হয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে। মূলত সংবাদপত্রের প্রচারণা এবং সাধারণ মানুষের বিশ্বাসের কারণেই এদের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে সরকার। একই কারণে নিজস্ব আগ্রহ না থাকলেও র্যাংগস ভবন ভাঙবার সিদ্ধান্তও নিতে হয়েছে সরকারকে।
অনেক ইস্যুই থলে থেকে বের করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার, নিজস্ব আগ্রহ না থাকলেও তার যুদ্ধাপরাধী ইস্যু নিয়ে রাজনীতির কুটকৌশলে লিপ্ত ছিলো। ধর্মীয় ইস্যুতে গড়ে ওঠা বিক্ষোভকে দমানোর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তারা নির্লিপ্ত ছিলো এই বিষয়ে। এখনও তারা মূলত নির্লিপ্ত, নিজস্ব সফেদ জোব্বা আরও সফেদ করবার প্রচেষ্টা তাদের এখনও আছে। তারা রাজনৈতিক হানাহানি তৈরির প্রচেষ্টা করছে। এবং এই প্রচেষ্টার সফল হলে অন্তত তারা নিজেরা ভালোত্বের সনদ নিজেদের হাতে তুলে দিতে পারবেন।
বহুমুখী দোলাচল। অপ্রয়োজনীয় মূল্যস্ফ্রীতি এবং দরিদ্র মানুষের হতদরিদ্র হয়ে উঠবার এই রাজনৈতিক সংস্কারপ্রক্রিয়ায় বলি হয়েছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। তাদের পক্ষে রাজনৈতিক ভাবে সংগঠিত হওয়ার কোনো উপায় ছিলো না। বরং নির্মম ভাবেই এইসব অসন্তোষ দমন করা হয়েছে।
দেশের প্রধান রপ্তানিমুখী খাত গার্মেন্টস শিল্পের হোতারা এই সুযোগে সেসব রাজনৈতিক সংগঠন শ্রমিক ইস্যুতে কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে সফল হয়েছেন। তাদের কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছেন, কয়েকজন ফেরার। তবে যোগাযোগ প্রযুক্তি অনেক উন্নত হয়েছে। গার্মেন্টস শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষও একই প্রক্রিয়ায় এই রাজনৈতিক দর কষাকষির একটা মাধ্যম। এখানেও শ্রমিকেরা মূলত রাজনৈতিক দাবার গুটি।
উপদেষ্টাগণ নিরাপদ পশ্চাতসরণের উপায় খুঁজছেন হন্যে হয়ে। এবং তারা বিকল্প একটা কাঠামো নির্মানের জন্যই অনেকগুলো বুদ্ধিমান পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। তার একটা উপজেলা কাঠামো এবং স্থানীয় সরকার কাঠামোকে ঢেলে সাজানো এবং এই ব্যবস্থার সংস্কারের উদ্যোগ। তবে রাজনৈতিক দলগুলোও এই সংস্কার উদ্যোগের বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে।
রাজনৈতিক ক্ষমতা খর্ব হয়ে যাওয়ার যেকোনো সম্ভবনাই এটা রদ করতে চায়। একই রকম অমঙ্গল আশংকায় তারা প্রয়োজনীয় সংস্কার হলেও এর বিপরীতে অবস্থান নিয়েছে। অন্তত আমার অভিমত এমনটাই। আমি এই পদক্ষেপকে সমর্থন করি। স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় ব্যনারে নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ থাকলেও নির্বাচিত প্রতিনিধি হওয়ার পরে তার রাজনৈতিক পরিচয় মুছে ফেলে স্থানীয় সরকারের গণ্যমান্য প্রতিনিধি হয়ে উঠতে হবে। পরবর্তীতে তিনি রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিত্ব করতে চাইলে সেটা তার নিজস্ব বিবেচনা। তবে স্থানীয় পরিষদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের সরাসরি জাতিয় পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের খপ্পর থেকে মুক্ত রাখবার জন্য হলেও এটার প্রয়োজন আছে। এবং বাংলাদেশের রাজনীতিতে উপদলীয় কোন্দল এবং নিজস্ব মতাদর্শিক মানুষদের সাথে সখ্যতার ইতিহাস মনে রাখলে এটা আমি নিশ্চিত উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে রাজনৈতিক পরিচয় মুছে নির্বাচিত হতে হলে জেলা পর্যায়ের বড় বড় নেতারা জাতিয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হওয়ার বাসনায় সেখানে নির্বাচন করবেন না।
এবং প্রত্যেকের কর্মপরিধি যেহেতু নির্ধারিত হয়েই থাকবে তাই অহেতুক খবরদারি হাত থেকেও রক্ষা করা যাবে । রাজনৈতিক দুর্নীতির যেই ধারা প্রচলিত সেটাকেও স্থগিত করার প্রক্রিয়াটাও সাফল্যের মুখ দেখতে পারে।
মূলত উপজেলার বাজের প্রণয়ন এবং এই বাজেট বরাদ্দ কোন খাতে ব্যয় হবে, উন্নয়ন বাজেটে কোন খাতে টাকা আসবে স্থানীয় সরকারের তহবিলে এটা নির্ধারণ করবেন স্থানীয় সরকারের সদস্যরা। এটাই মূলত দুর্নীতিচক্র গড়ে উঠবার পথকে বাধাগ্রস্থ করবে। এমনিতে এমপিগণ নিজস্ব প্রভাব খাটিয়ে উন্নয়ন বাজেট বরাদ্দ নিজের এলাকায় নিয়ে গিয়ে দলীয় কর্মীদের ভেতরে বন্টন করে আনুগত সন্ত্রাসী বাহিনী তৈরি করে ফেলেন। নিজেরা সামন্ত প্রভু হয়ে যান। স্থানীয় সরকার শক্তিশালী হলে এমন সামন্তপ্রভু তৈরি হবে না।
রাজনৈতিক দল, বিশেষত ৪ দলিয় জোট এটার বিরোধিতা করছে। এবং তাদের অনুগত কলামিস্ট এসব বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করছে। আমি তাদের সাথে দ্বিমত পোষণ করি।
রাজনৈতিক দলের দেশের প্রতি আনুগত্য প্রকাশের একটা সুযোগ এসেছে বর্তমানে। তারা এইসব ক্ষুদ্রতা ভুলে রাজনৈতিক অস্তিত্ব এবং নিজস্ব অস্তিত্বের প্রয়োজনেই হানাহানির এই তত্ত্বাবধায়কীয় উদ্যোগ থেকে নিজেদের বিরত রাখবেন, উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পক্ষে মত দিবেন এবং একই সাথে নিজস্ব সুস্থ রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিকাশের পদক্ষেপ নিবেন। এই আশাই করতে পারি এই অন্ধ সময়ে।