রাতের নিস্তব্ধ আকাশ। খোলা রাস্তায় একা একা হাঁটছি। যান্ত্রিক ভেঁপু আর মানব মেলা থেকে কিছু সময়ের জন্য বিরতি নিয়েছে শহর। মাথার উপর একটি পূর্নিমা থাকলে ভাল হত। স্রষ্টা যদি জোছনা তৈরীর ক্ষমতা মানুষকে দিতেন, তবে এই মুহুর্তে ফুটবলের সমান একটি জোছনা আকাশে টানিয়ে দিতাম। কারন হাঁটতে হয় জোছনার আলোয়, অন্ধকারে হাঁটে পলাতক আসামীরা।
অবশ্য অন্ধকার থাকায় আজ ভালই হয়েছে। আমার যে খুব মন খারাপ তা কেউ বুঝতে পারছেনা। রাকিব একবার বলেছিল, মন খারাপ থাকলে নাকি আমায় পৃথিবীর সবচেয়ে অসহায় মানুষটির মত লাগে!
হাজারো নক্ষত্রবীথি জেগে আছে আমার সাথে, আর জেগে আছে নিওন বাতির লাইটগুলো। শহীদ মিনার পার হয়ে পলাশীর দিকে এগুতে থাকি। সেখান থেকে পিলখানা রোডের দিকে যাব। এলোমেলো পায়ে গন্তব্যহীণ পথে হাঁটতে খারাপ লাগছেনা। লোকালয়ের যন্ত্রনাময় গুন্জরন থেকে নিঃশব্দ পথের নিশ্চুপ পথিক হলে মনে হয় খারাপ হত না। অন্তত এই মুহুর্তে তাই মনে হচ্ছে...
কি অদ্ভূত আমাদের জীবন ব্যবস্থা। কষ্ট দিয়ে পিষ্ট হলেও নষ্ট সময়ে যথেষ্ট সুখে থাকার অভিনয় করতে হয়। বন্ধবান্ধবদের দেখাতে হয় বাসি হয়ে যাওয়া হাসি মুখ। এই উত্তপ্ত নগরীতে মাঝে মাঝে বিদ্রোহী হতে ইচ্ছে করে। যান্ত্রিক জীবনের কোলাহলকে উড়িয়ে দিয়ে হিরোসিমা নাগাসাকি বানাতে ইচ্ছে করে প্রতিটি হৃদয়। আমি ভীতু বলে হয়ত পারিনা, কিংবা ক্ষমতারও অভাব হতে পারে।
কতক্ষণ এভাবে হেঁটেছি জানিনা। ক্লান্তিতে পা আড়ষ্ঠ হয়ে আসছে। চোখের পাতা বন্ধ হয়ে আসছে প্রবল ঘুমে। এখন কয়টা বাজে? শহর কি জেগেছে? জেগে ওঠার আগেই আমায় রুমে ফিরতে হবে। এই অসহায় চেহারা কাউকে দেখাতে চাইনা। যে কষ্ট আমি একা পেয়েছি তার ভাগ আর কাউকে নিতে দেবনা।
সাদা কালো মনের প্রতিচ্ছবিতে একটি রঙিন প্রজাপতি উড়লে খুব কি লোকসান হত পৃথিবীর ???
১৩.০৮.১৫
বৃহস্পতিবার
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:৫৯