হাফেজ মো. নুরুজ্জামান হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি গ্রামের কৃষক সৈয়দ আলী ও রোকেয়া বেগমের ছেলে। তিন ভাই ও তিন বোনের মধ্যে নুরুজ্জামান সবার ছোট। তিনি চট্টগ্রামের শ্যামলী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অটো মোবাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বাতাসচালিত দ্রুতগতির সাইকেল উদ্ভাবন করেছেন তিনি । তেল বা পেট্রোল ছাড়াই শুধু সিলিন্ডারে একবার বাতাস ভরে সাইকেলটি ৪০ কিলোমিটার যাবে যার ঘণ্টায় গতিবেগ ৮০ কিলোমিটার। নামে বাতাসচালিত সাইকেল হলেও এটি দেখতে অবিকল মোটরসাইকেলের মতো। শুধু বাতাসের সাহায্যে চলা পরিবেশবান্ধব এ যানের অন্যান্য ক্রিয়াকলাপও মোটরসাইকেলের মতো।
চলতি বছরের ৫ মার্চ হবিগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এলাকায় আনুষ্ঠানিকভাবে বাতাস চালিত মোটরসাইকেলে চড়েন এর উদ্ভাবক হাফেজ নুরুজ্জামান। তার উদ্ভাবিত সাইকেল চালাতে লাগবে না তেল-পেট্টোল। শুধুমাত্র বাতাসের ওপর ভর করেই চলবে পরিবেশ বান্ধব এ সাইকেলটি।
অভাবনীয় এই আবিস্কারের পর হাফেজ নুরুজ্জামান সেদিন বলেছিলেন, ৮৩৩টি এসআই পরিমাণ বাতাসে এ সাইকেলটি এক কিলোমিটার রাস্তা চলতে সক্ষম। এটি চালনায় কোনো তেল-গ্যাসের প্রয়োজন নেই। তবে এতে অল্প পরিমাণে মবিলের ব্যবহার রয়েছে। এটি এখনও পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রয়েছে এবং এটি আরও উন্নতভাবে তৈরি ও সর্বত্র বাজারজাত করতে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন।
সেদিনই এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী হাবিবুর রহমান বলেন, উদ্ভাবক নুরুজ্জামান সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও উন্নত প্রযুক্তির মোটরসাইকেল তৈরি করতে পারবেন।
কিন্তু সেই পৃষ্ঠপোষকতা আর পাওয়া হয়নি নুরুজ্জামানের। তার আবিস্কারের প্রতি কোন মুল্যায়ন করা হয়নি। আমরা এমন একটি দেশে বাস করি যেখানে মেধার কোন মুল্যায়ন নেই নুরুজ্জামানের অকালে সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হওয়ার মাধ্যমে প্রমান হলো।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রথম বাতাসচালিত মোটরসাইকেলের উদ্ভাবক হবিগঞ্জের হাফেজ নুরুজ্জামান (৩০) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।রোববার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ২টায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুরে প্রাইভেটকার-ট্রাকের সংঘর্ষে নুরুজ্জামানসহ ৪ যাত্রী নিহত হন।
প্রশ্ন উঠেছে ঘাতক ট্রাক চালককে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি কেন?