**উড়ছে গাড়ী যাত্রাবাড়ী:
চিটাগং থেকে ঢাকা যাব।টিকেট কাটতে গেলাম তাই স্টেশনে।রেল যে কেমনে লোকসানী খাত হয়?দুই দিন আগে গিয়াও টিকেট পেলাম না।অগত্যা বাসই ভরসা। যাওয়ার দিন টিকেট কাটলাম হানিফের।সকালে বাসে উঠলাম।খারাপ না।সাড়ে আট টার গাড়ী ছাড়ল ৯টা ১৫ তে।আমি ও আমার বন্ধু সিটে বসে ঘুমানোর পরিকল্পনা বাস্টবায়নে ব্যাস্ত হলাম।গাড়ীও চলছে দুরন্তগতিতে। আবারও ভাবলাম খারাপ না।১৫ মিনিটও না যেতেই বিশাল এক হার্ড ব্রেকে ঘুম ভাংলো।দুনিয়ার প্রতি অদ্ভুত রাগে রাগী হয়ে যেভাবে চালক গাড়ি চালাল তাতে আর চোখে ঘুম নাই। এর পর কুমিল্লায় এল যাত্রা বিরতি। দেখলাম মানুষ যে খায়। আমাদের খাওয়ার ইচ্ছা নাই। তাই এক বোতল পানি কিনেই বাসে উঠলাম।এই বাসে কোন বিদেশী উঠলে নিশ্চিত ভাবত বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ১৫০০০ মা.ড. এর উপরে। একেক জন যা মার্কেটিং করল দেখার মত।গাড়ী ছাড়ল ,এবার দেখি মাথার পিছে আলতো টান। তাকিয়ে দেখি পিছনের সিটের পিচ্চিটা আমার ছোট ছোট চুল ধরে দাড়িয়ে আছে।ভালৈ লাগলো। আর তার যে ছড়া পড়া ???এর পর আবার হার্ড ব্রেকে সামলাতে না পেরে আমার কান ধরে ঝুলে রইল।পণ করলাম ঢাকা গিয়েই ট্রেন এর টিকিট তারপর অন্য কাজ। বাসকে না বললাম।১টা ৩০ বাজে আসলাম ঢাকা ,নেমেই কমলাপুর স্টেশনে দৌড়।প্রভাতীর দুই টিকেট গেলাম খালার বাসায়।

**বইমেলা:
ঢাকায় আসলাম আর বইমেলায় যাবনা?আর আগে কখনও যাই নি আমি । তাই প্রচন্ড আগ্রহে শেওড়াপাড়া থেকে রওনা হলাম ৫ টায়। ভলভো বাসে শাহবাগের উদ্দেশ্যে চললাম।হায়রে জ্যাম।ভোলভো তো চলতেই ভুলে গেলো।সময় যে কি পেইন তা টের পেলাম হাড়ে হাড়ে। :!! :!! আর বাসগামী মানুষের কথা আর ...।অবশেষে ৭টা ৩০এ এলাম শাহবাগ,এসেই নতুন বিপদ বইমেলার রাস্তা তো জানিনা।রিক্সারে বলি বাংলা একাডেমী যাবা।সোজা জবাব "না।।আরেকজনরে বলি বইমেলায় যাবা---"না"।আইডি্যা !!!!মানুষের ভীড় যেদিকে যায় সেদিকে যাব।আর খেয়াল রাখবে opposite direction মানুষ বই হাতে আসে কি না।যদি আসে মানে আমি রাইট পথে আছি।এভাবে মানুষের সাথে এসে ২৫ মিনিট হেটে বইমেলায় প্রবেশ ।আহা কি আনন্দ?




কত বই আর বই। মনুষ আর মানুষ।টিউশনির টাকা, বাজারমারা টাকা ইত্যাদি দিয়ে বেশ কিছু বই কিনলাম যার অধিকাংশই উপহারকৃত হয়ে গেল।এত কাজিন যে কেন থাকে।শাহবাগ ফেরার পালা।বুক ফুলিয়ে হেঁটে আসলাম শহীদ মিনার পর্যনত।তার পর হা হয়ে গেলাম।সামনে তিনটি রাস্তা। হে খোদা কোনটা দিয়ে আসছি ভুলে গেছি।রিক্সা দিয়ে এলাম।চড়াই উৎরাই পেড়িয়ে খালার বাসায় আগমন।খেয়েই ঘুম.
***মিশন ধোলাইখাল:
পরদিন সকালে বাসা থেকে ধোলাইখালে গেলাম প্রযেক্টের কাজে।সন্গী হল বুয়েটের বন্ধু কামরুল।উদ্দেশ্য গ্রাফাইট কেনা পিস্টনের জন্য।
ধোলাই খালে যারেই বলি সে তাকিয়ে থাকে তারপর হাসিমুখে বলে নাই।তবে যা ভালো লাগলো মানুষগুলার ব্যাবহার।সবাই হাসিমুখে আমাকে আরেকটা দোকান দেখাতে লাগলো।এভাবে ধোলাই খাল ঘুরা হল।কত যে মেশিনারী!!!ইন্জিনের হেন পার্টস নাই যেটা এখানে নাই। আমার তো মনে হয় যারা যন্ত্রকৌশলে পড়ে তাদের সবার এখানে একবার হইলেও আসা উচিত।অনেক ঘুরার পর এক দোকানী বলল এখানে পাবেন না ইত্তেফাক মোড়ে যান ।গেলাম,পেলাম আ্যাডভান্স করলাম। ৩ টা বাজে।বলল ৪টা র দিকে আসতে। এত সময় কি করি। কামরুল বলল চল বলধা গার্ডেন যাই।
****বলধা গার্ডেন::
বলধা গার্ডেন গিয়ে তো আমি পুরা বলদ হয়ে গেলাম।দেশ তো একেবারে শেষ হয়ে গেল।ওখানে সব কাপল অন্তরংগ ভাবে বসে আছে।এসব কি দেখা যায়???লজ্জায় লাল ,নিল হয়ে গেলাম।






এখানে শুধু আমরা দুইজন ছেলে ১ সাথে বসে আছি। কামরুল ঢাকার পাবলিক তাই চোখ সয়ে গেছে।কিন্তু আমার...।যাই হোক ৪.৩০ এ কাংখিত গ্রাফাইত হাতে পেলাম ১০০০ টাকা দিয়ে।ছোট ১টা জিনিস।বন্ধুর থেকে বিদায় নিয়ে খালার বাসায়।সবার সাথে কথা বলতে বলতে রাত হল ঘুমালাম।পরদিন সকালে ট্রেন । ঢাকা ভ্রমণ খারাপ হয়নি আসলে। আবার আসব ....।
(হয়তবা চলবে)