একজন অতি কৌশলি ঝানু অসৎ ব্যবসায়ী আটলান্টার এক ডেন্টিস্ট ক্লিনিকে ফোন করে ডেন্টিস্টের সাথে আলাপ করছেন।
দাঁতে প্রচন্ড ব্যথা, একটা দাঁত তুলে ফেলতে হবে। আপনারা কত টাকা চার্জ করবেন।
আমাদের রিগুলার ফি হলো ৩০০ ডলার।
কিন্তু ব্যবসায়ী'দের জন্য কি আপনারা একটু ডিসকাউন্ট দিবেন না?আমরা যে দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখি।
আচ্ছা ঠিক আছে, ২৮০ ডলার।
২৮০ ডলার একটু বেশী হয়ে গেলো। ২৮০ ডলার কেন লাগবে, প্লিজ যদি একটু বুঝিয়ে বলেন।
জ্বি বলছি। প্রথমে যে দাঁত তুলতে হবে, সে জায়গাটা এ্যানস্থেসিয়া করতে হবে। সেটার জন্য ফী টা একটু বেশী।
ও আচ্ছা। তাহলে একটা কাজ করুন। কোনোরকমের অবশ করানোর দরকার নাই। একেবারে সরাসরি তোলে ফেলবেন। তাহলে কত চার্জ করবেন।
না, এটা একটা অস্বাভাবিক ব্যাপার। এভাবে কি সম্ভব। এতে রোগীর প্রচন্ড কষ্ট হবে। আচ্ছা, আপনি ২৫০ ডলার দিবেন।
২৫০ ডলার। এখনো একটু বেশী মনে হচ্ছে। আমি কি আপনাকে বেশী বিরক্ত করছি।
না না। তা হবে কেন? ধৈর্যের সাথে রোগীর সব প্রশ্নের জবাব দেয়া আমাদের পেশা'র অন্তভূর্ক্ত। এটা আমাদের নৈতিক কাজ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ডাক্তার। আমি কি আরেকটি প্রশ্ন করতে পারি?
জ্বি বলুন।
আচ্ছা, দাঁতটা ওঠাবে কে?
কেন আমি নিজেইতো ওঠাবো।
আপনাদের কোনো ট্রেইনি নেই । যে সবেমাত্র ডাক্তারি পাশ করে ইন্টার্নি করছে এরকম কেউ।
জ্বি আছে ।কিন্তু কেন বলুনতো?
যদি মনে করেন , ওনাদের দিয়ে কাজটি করান, তাহলে কি আরেকটু কম হবেনা।
জ্বি। তা অবশ্য হবে। কিন্তু, এতে আপনি পুরো প্রফেশনাল সেবাটা পাবেন না।
না, না । অতো প্রফেশনাল দরকার নাই। কাজ হলেই হবে।
ঠিক আছে। তাহলে ১০০ ডলারেই হবে।
১০০ ডলার। জ্বিনা ডাক্তার। বেশীই মনে হচ্ছে। আর কোনো অপশন নেই।
ডাক্তার এবার একটু বিরক্ত। অল্প রেগে গিয়ে-জ্বিনা আর কোনো অপশন নেই।
আপনি কি রাগ করছেন?
ডাক্তার মনে মনে বলছেন- না রাগ করবো কেন? তুই তো আমার বড় মহব্বতের দুলাভাই। তুই একবার কাছে আয়। ডলার বাঁচানোর খায়েশ হয়েছে না, প্রফেশনাল দরকার নাই। কাগজে সাইন করবেন শুধু দুলাভাই। তারপর তোর দাঁত একটা না, মাগনাই সবকটা তোলে দিবো।প্লাস দিয়ে ধরবো আর টান দিবো।
এবার ডাক্তার আরো বিনয়ী হয়ে। না রাগ করবো কেন? বলুন। আর কি কি জানতে চান?
আচ্ছা। আপনাদের কি কোনো ট্রেনিং শেসান নাই। যেখানে নতুন কোনো ছাত্র কাজ করবে -আর বাকি সবাই দেখে শিখবে।
ডাক্তার এবার আরেকটু কৌতুহলি হয়ে। জ্বি জ্বি । সেরকমতো হয়। তবে ঐ রকম রোগীতো পাওয়া যায়না। যদি পাই মাঝে মাঝে তখন রোগীকেই আমরা বরং একটা সম্মানি বিল দিয়ে থাকি।
এবার ব্যবসায়ী খুব খুশী হয়ে -ডাক্তার আপনি তাড়াতাড়ি এ্যাপয়ন্টমেন্ট দিন। বলুন কবে আসবো।
আপনি কাল সকালেই চলে আসুন। আর আপনি সম্মানি হিসাবে ১০০ ডলার পাবেন।
ডাক্তার এবার ফোন ছেড়ে দিয়ে মনে মনে বলছেন। সারাজীবন অসৎ ব্যবসা করে টাকা আয় করেছি। এবার একটু সুযোগ এসেছে সৎ হওয়ার।
শালা রাজনীতিবিদ। দেশের মানুষের রক্ত চুষে টাকা আয় করো বলেই, কোনো মায়া নাই। সামান্য দাঁতের ব্যথায় ইউরোপ -আমেরিকা সিংগাপুরে উড়াল দাও। ৪৩ বছরে একটা ভালো হসপিটাল বানাতে পারলিনা। যেখানে নিজেরাই অন্তত চিকিৎসা নিতে পারিস। এই দাঁত নিয়ে অনেক দাঁতালো করেছিস। সাধারণ মানুষের রক্ত চুষে খেয়েছিস বছরের পর বছর। এবার বাগে পেয়েছি বাছা। রাজনীতির নামে অপরাজনীতি করলে জনগণ কি যন্ত্রণায় ভুগে তা প্রফেশনাল বাদ দিয়ে অপ্রফেশনাল দিয়ে দাঁত ওঠালে কেমন যন্ত্রণা হয় তার সামান্য একটা নমুনা পাবি। আর ফিরে যাওয়ার সময় যাবি মালেশিয়া হয়ে। সেখানে মাহাথিরের কিছু গু খেয়ে যাবি।
ব্যবসায়ী এবার নিজের অতিথি রুমে এসে বললেন-
স্যার, কাল সকাল দশটা বাজে এ্যপয়ন্টমেন্ট নিয়েছি। কোনো চিন্তা নাই স্যার। ওরা অনেকেই একসাথে থাকবে। শুধু কাগজে সাইন করলেই হবে।
আপনাকে কিছুই বলতে হবেনা। গম্ভীর হয়ে বসে থাকবেন, এতে আপনার ব্যক্তিত্ব আরো উজ্জ্বল হবে স্যার। শুধু হা করে থাকবেন, যা করার ওরাই করবে।
(C) আরিফ মাহমুদ।
(একটা কৌতুক অবলম্বনে)