দীর্ঘদিনের ব্লগ পাঠক হিসেবে অনেক গুণী মানুষের লেখা পড়ার সুযোগ হয়েছে। তাদের দৃষ্টিভঙ্গির থেকে সব সময়ই কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করেছি। কত টুকু ধারণ করতে পারছি জানিনা, তবে এটুকু শিখেছি, নিজের মত ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করতে। যে কোন ধর্ষণ ইস্যুর মত তনু ধর্ষণেও পোশাকের ভুমিকা নিয়ে আবার সেই পুরান দ্বন্দ্ব। এক দিকে প্রগতিশীল কাম নারী বাদী এবং অনেক সাধারণ মানুষের মত- ধর্ষণে পোশাকের কোন ভুমিকা নেই। অন্যদিকে এক শ্রেণীর ধর্মান্ধের সেই পুরাতন জাবর কাটা - পোশাক হইল ধর্ষণের কারণ।
ক্রিমিনলোজি - অপরাধ তত্ত্ব। অপরাধ নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলে ক্রিমিনলজিতে। সাধারণত ক্রাইমের যে কোন ব্যাখ্যা প্রায় সবাই দেয়। সবারই একটা যৌক্তিক পয়েন্ট অফ ভিউ থাকে। একজন আরেকজনের টা শোনেনা, বা অযৌক্তিক মনে করে। তবে ক্রিমিনলজির ভিত্তিতে ব্যাখ্যাটা একটু অন্যরকম হতে পারে। অন্তত আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যত টুকু জানার সুযোগ হয়েছে। সেই ধারণা থেকেই বিশ্লেষণ।
ক্রিমিনোলজি বলে, যে কোন ক্রাইমের পূর্বশর্ত ট্রায়াঙ্গেল স্ট্রাকচার।
১) opportunity - অপরাধীর অপরাধ করার সুযোগ পেতে হবে। উদাহরণ হতে পারেঃ চার পাঁচ জন বখাটে রাতে ঘুরছে। যে আশেপাশে কেও নেই। যে কোন অপরাধ করার সুযোগ আছে। অর্থাৎ opportunity আছে।
২) tendency - অপরাধ করার প্রবণতা থাকতে হবে মনে। উদাহরণ হতে পারেঃ বখাটে গুলোর মনে যে কোন ধরণের অপরাধ করার ইচ্ছা ও প্রবণতা আছে। অর্থাৎ tendency আছে।
৩) motivated victim- যখন সুযোগ হাতে আছে, তখন ভিক্টিমকে নাগালে পাওয়া। উদাহরণ হতে পারেঃ বখাটে গুলোর সামনে কোন বিফকেস ওয়ালা মানুষ এসে পড়ল। যার কাছে টাকা আছে মনে হচ্ছে। অথবা কোন নারীকে দেখল, যাকে ধর্ষণ করতে পারে। অর্থাৎ motivated victim পাওয়া গেল। তবে একটু কথা আছে, motivated victim মানে ভিক্টিমের ওপর দায়ভার বর্তানোর চেষ্টা সম্পূর্ণ অদূরদর্শিতা হবে। পরবর্তীতে তা ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হবে।
এ তো গেল অপরাধের স্ট্রাকচারের কথা। এবার একটু অন্য প্রসঙ্গ।
ধর্ষণ প্রসঙ্গে বললে অনেকে বলে থাকে পোশাকের কথা। প্রগতিশীল আর নারীবাদীরা তুড়িতে উড়িয়ে দেন। আবার কিছু ধর্মান্ধের পোশাক নিয়ে ব্যাপক চুলকানি দেখা যায়।
পোশাকের ব্যাপারটা অবশ্যই মুখ্য। তবে তা ভিক্টিমের না। সোশ্যাল স্ট্রাকচারের। এই ব্যাপারটা অনেকে ভুল করে থাকেন বলেই অন্তত ক্ষুদ্র জ্ঞানে মনে হয়। একটু বলে নেয়া দরকার।
we are in a economic war with India and America. এটা লুকোছাপার কিছু নেই।
ইকনোমিক ওয়ারের মূল উদ্দেশ্য আর কিছুই নয় উপনিবেশ সৃষ্টি। যার উপনিবেশ হয়ে যাবে, তার পণ্যের জন্য বাজার সৃষ্টি হবে।
যুদ্ধ সে রণক্ষেত্রেই হোক, আর অর্থনীতির বাজারেই হোক স্ট্রাটেজি অনুসরণ করেই স্টেপ বাই স্টেপ এগিয়ে যাওয়া হয়।
চৈনিক যুদ্ধ বিশারদ সাঞ্জুর " আর্ট অফ ওয়ারে" যুদ্ধ বিষয়ে অনেক কৌশলের কথা আছে, যা বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীর অনেক অফিসার তো বটেই; এমনকি অর্থনীতির স্ট্রাটেজিস্টরাও এখনও পড়েন।
সাঞ্জুর মতে একটা কৌশল হল, "এটাক বাই স্ট্রাটেজাম।" নিজের রসদের আর সৈন্যের কোন ক্ষতি না করে কৌশলে শত্রুকে পরাস্ত করা। উপনিবেশ বানাইতে এই পদ্ধতি খুবই প্রচলিত। শত্রুর দেশের তরুণ যুব প্রজন্মের মধ্যে মাদক ছড়িয়ে দেয়া, আর ক্ষতিকর সংস্কৃতি চাপিয়ে দেয়া। যার বাই প্রোডাক্ট হল টার্গেট করা দেশে ক্রাইম বেড়ে যাওয়া। কারণ মাদক আর সামঞ্জস্যহীন ক্ষতিকর সংস্কৃতি tendency develope করে।
আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে অপরাধের tendency গড়ে ওঠার ব্যাপারটা একটু ভালভাবে বোঝা দরকার।
দেশের অনেক অংশে সংস্কৃতি চর্চার বিভিন্ন রুপ দেখা যায়। একদিকে ভারতীয়, অন্যদিকে পাশ্চাত্ত্য, কোথাও সেই পুরাতন বাঙালি আবার কোথাও জগাখিচুরি সংস্কৃতি। আর্থিক অবস্থার ভিত্তির সাথে এই সংস্কৃতির তারতম্যের একটা যোগসুত্র একটু ডানে বায়ে পর্যবেক্ষণ করলেই সহজেই বোঝা যায়।
-মোটামুটি উচ্চ বিত্তরা পাশ্চাত্য সংস্কৃতিতে প্রভাবিত, সামান্ন্য ভারতীয় সংস্কৃতির ছোঁয়াও আছে।
-মধ্যবিত্ত শ্রেণীতে ব্যাপকভাবে ভারতীয় সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাব দেখা যাচ্ছে।
-নিম্ন বিত্তের মধ্যে প্রভাব ফেলে আছে আমাদের বাঙালি সংস্কৃতির মননের সাথে ভারতীয় সংস্কৃতির মিলনে এক বিকৃত সংস্কৃতি।
এক শ্রেণীর সাথে আরেক শ্রেণীর মানসিক মূল্যবোধের দূরত্ব দ্রুত বাড়ছে। মিডিয়ার প্রভাব এখানে অপরিহার্য। আর সার্টিফিকেট নির্ভর দেশিয় শিক্ষাব্যবস্থার অবদানে শিক্ষিত (!!!) সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিতেও তেমন স্বচ্ছতার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না।
সংস্কৃতির সাথে জীবন ধারণের একটা গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
- চাইলেই নিম্নবিত্তরা যেমন পাশ্চাত্যের বিলাসী বস্তুবাদী সংস্কৃতিতে জীবন ধারণের সামর্থ্য রাখে না। আবার উচ্চবিত্তের কাছে নিম্ন বিত্তর সংস্কৃতি গেয়ো সেকেলে। ব্যাপারটা এমন, নিম্ন বিত্তরা এখনও বাংলা সিনেমা দেখে যা উচ্চ বিত্ত মহলে হাস্যকর- কারো কারো কাছে ঘৃণার।
- উচ্চবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে সামাজিক সম্মানের প্রতিযোগিতা বেশ ভালই। হতে পারে তা অবচেতনেই এই সম্মান অবশ্যই কার কাছে কতটা আধুনিক সামগ্রি আছে- তার ভিত্তিতে।
- অন্যদিকে মধ্যবিত্তরা তাদের আর্থিক অবস্থার ভিত্তিতে একটা মিশ্র সংস্কৃতির আকার দিচ্ছে- যার প্রভাবের জীবন সাধ্যের মধ্যে। আবার তাদের চোখে সম্মানজনক। যেমন একটা ভাল বাড়ি, যতটা সম্ভব আধুনিক মাল সামাল।
এই সাংস্কৃতিক বিভাজনে এক শ্রেণীর সাথে আরেক শ্রেণীর বিদ্বেষ বাড়ছে। মুখে মনে যতটুকুই বিদ্বেষ থাক, নিম্নবিত্তরা মধ্যবিত্তে যাওয়ার, মধ্যবিত্তরা উচ্চবিত্তে যাওয়ার, উচ্চবিত্তরা তাদের সামাজিক অবস্থা ধরে রাখার চেষ্টা করছে। এই অবস্থান পরিবর্তনের জন্য দরকার টাকা। যে যেখান থেকে পারে, সেখান থেকে টাকা কামানোর চেষ্টা করছে।
প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন আসতে পারে, যে কত গুলো উচ্চ বিত্ত, নিম্ন বিত্ত বা মধ্যবিত্তকে আমি দেখেছি। সবাইকে দেখিনি। সত্যি। ব্যতিক্রম আছে। যে যার অবস্থানে সুখি। এমনও অনেক আছে। তবে এর বাহিরেও যে আরেকটু ভাল থাকার চেষ্টা- সেই দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে এই সাংস্কৃতিক বিভাজনে এক শ্রেণীর সাথে আরেক শ্রেণীর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া বুঝতে কষ্ট হবার কথা না।
এবার সরাসরি ধর্ষণ নামক অপরাধে ফিরে আসি।
মনস্তত্ত্ববিদ্যার অন্যতম পথিকৃৎ সিগমুন্ড ফ্রয়েড বলেন, "যৌনতার তাড়না এমন একটা ক্ষমতা যা যে কোন মানুষকে বুদ্ধি, বিবেক, নিজের জীবনের মায়া বা যে কোন কিছু ভুলিয়ে দিতে পারে।" এই প্রবৃত্তির ওপর বিধিনিষেধের মাত্রার ওপর একটা সমাজের গঠন নির্ভর করে।
এটা বলার কারণ অপরাধীর পক্ষে সাফাই নয়। সম্ভাব্য অপরাধীর সাইকোলজি বুঝে এখনই ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করা; যাতে ভবিষ্যৎ এর সম্ভাব্য অপরাধ রোধ করা যায়।
সমাজের কোন রক্ষণশীল কোনায় পড়ে থাকা সম্ভাব্য অপরাধী, যখন কোন ছোট পোশাকের মডেলকে দেখে তার tendency develope হয়। এক দিনে না ধীরে ধীরে। সম্ভাব্য অপরাধি যখন কোন ফাঁকা স্থানে কোন ভিক্টিমকে পায়, স্বভাবই ক্রাইমের তিনটা শর্তই পূরণ হয় - opportunity, tendency, motivated victim.
সহজ ভাষায় হয়ত মফঃস্বলের কোন অপরাধী নায়লা নাইমকেই দেখে দেখে কাম জাগায়, কিন্তু তার স্বীকার হয় হয়ত খুব সাধারণ একটা মেয়ে। আবারও প্রশ্ন আসতে পারে, তবে তুলনামুলক প্রাচীন পন্থি মানসিকতার পাশাপাশি কি তথাকথিত আধুনিক মানসিকতার মানুষ ধর্ষণের মত অপরাধ করে না? অবশ্যই করে। " লাইফ ইজ ফান" থেরাপিতেও এই অপরাধের tendency গড়ে ওঠে। নৈতিকতার কোন ভিত্তি থাকে না।
সোসাইটির তথাকথিত আধুনিক অংশের সাথে আর রক্ষণশীল অংশের দূরত্ব অনেক বাড়ছে। বলা যায়, পোলারাইজেসন হচ্ছে। মিডিয়ার কল্যাণে তা বেড়েই যাচ্ছে। আধুনিকতার নামেও নারী পুরুষের দেহতাত্তিক ভালবাসার ভুলভাল আবেগে ট্রিগার করা হচ্ছে। সম্ভাব্য অপরাধীর অপরাধের tendency বাড়ছে।
ক্রাইম ঠেকাতে crime triangle এর এই tendency টা নষ্ট করে ফেলতে হয়।
প্রথমত, উদাহরণ দেয়ার মত শাস্তির ব্যবস্থা। যাতে সম্ভাব্য অপরাধী tendency গড়ে ওঠার সময় , " অপরাধ করলে এদেশে কিছুই হবে না" - এই মানসিকতা তাকে প্রভাবিত না করে tendency একটা শক্ত বাধা দিতে পারে।
দ্বিতীয়ত, ঐতিহ্যের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কৃতি। যাতে সমাজে সংস্কৃতির ভিত্তিতে নানা বিভাজন হয়ে একে অন্যের মধ্যে বিদ্বেষ না ছড়ায়। নিজেকে সুপিরিওর ভেবে সমাজে প্রচলিত সংস্কৃতির মিশ্র রূপ গুলো সুপিরিওটি কমপ্লেক্সে না ভোগে। আমাদের ঐতিহ্য আর অর্থনীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংস্কৃতি আমাদের জীবন ধারণে " চাই আর চাই" প্রবনতাকে হয়ত কমিয়ে আনতে পারবে।
তৃতীয়ত, একটা সুসম শিক্ষা ব্যবস্থা। যেখানে কোন বিশেষ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দক্ষ করে তোলার পাশাপাশি একটা নৈতিক শক্ত ভিত্তি গড়ে তোলা যায়। যাতে ভিন্ন মত পন্থায় সহনশীল হতে পারে। যদিও প্রচলিত লেখাপড়া শিখে আসলেই মানুষ হওয়া যায়, সে বিশ্বাস জন্মায় নি। আশেপাশে অনেক অনন্য মানুষ দেখেছি। আমি বিশ্বাস করি, হয় তা তাদের পারিবারিক শিক্ষা অথবা নিজের চেষ্টা। প্রথাগত শিক্ষা ব্যবস্থা যে স্বচ্ছ চিন্তার মানুষ গড়ে তুলতে পারে- তেমন দৃষ্টান্ত খুব বেশী চোখে পড়েনি বলেই হয়ত এ বিশ্বাস জন্মেছে। আমার সীমাবদ্ধতা।
ক্যান্টনমেন্টের মত সুরক্ষিত জায়গায় তনু নামের তরুণীর ধর্ষণ। যে কোন ধরণের ধর্ষণকে সামাজিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবুও সম্প্রতি ঘটে যাওয়া এই ঘৃণ্য অপরাধ নিয়ে দেশের নানা প্রান্তে প্রতিবাদ, কানাঘুষা চলছে। একটা কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার এখনই সময় সরকারের।
সরকার তনুর পরিবারের প্রতি সুবিচার করতে এবং ভবিষ্যতে ধর্ষণ ঠেকাতে অন্তত প্রথমটা গ্রহণ করতে পারে। দ্রুত অপরাধীদের সনাক্ত করে তাদের আইনের আওতাও নিতে হবে। সাথে ধর্ষণ বিষয়ক আইনও পরিবর্তন জরুরী। সরকারের উচিত ধর্ষণের জন্য বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন- যেখানে ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।
নাহলে একই রকম ঘটনা আবার ঘটবে। ঘটতেই থাকবে। ভারতে বাসে ধর্ষণ করতে দেখে এদেশেও একই ঘটনার পুনরাবৃতি ঘটেছে। একই পুনরাবৃতি দেখা গেছে শিশু হত্যার ক্ষেত্রেও। অতীতে এসিড সন্ত্রাসের আধিক্ক্যের সময়ও দেখা গেছে। দৃষ্টান্তই সব সময় মানব ইতিহাসকে পরিচালিত করেছে। করবে। মানুষের মানসিক গঠনই এমন। অতীত তাই বলে।
যদি এখনই ধর্ষণের শাস্তির কঠোর দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করা না যায়, তবে ক্যান্টন্মেন্টের মত জায়গায় ধর্ষণ
করে হত্যা করলেও কিছু হয় না- এটাই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
বিশেষ নোটঃ তনু ধর্ষণ বিষয়ে পোস্ট স্টিকি করে সামু অনেকবারের মতই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিয়েছে। পোস্টদাত্রীর ব্যক্তিগত আবেগের প্রতি সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য এদেশের একটা সংখ্যাগরিষ্ঠ শ্রেণী কাঠমোল্লাদের প্রভাবাধীন। যদিও ধর্মের দিকপাল সেই অনেক কাঠমোল্লার নানা কুকর্মের রেকর্ড আছে। তবুও দেশের একটা বিরাট শ্রেণী তাদের দ্বারা প্রভাবিত। আবার দেশের সেনাবাহিনী যেমন জাতির গর্ব। সেই গর্বিত সন্তানদের পাহাড়ে অনেক অন্যায়ের রেকর্ড আছে। যা বইপত্র, পত্রিকা থেকে দেশের সচেতন শ্রেণীর অনেকেই কম বেশী জানেন। কিন্তু ধর্ষণ এমন একটা ইস্যু যেখানে ধর্ম, রাজনীতি, মতবাদ নির্বিশেষে দেশের সকল মানুষকে সচেতন করে তোলা প্রয়োজন। সেক্ষেত্রে আবগীয় আক্রোশে ভরপুর এমন একটা পোস্ট স্টিকি করায় তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। হয়ত আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে পোস্টের কন্টেন্টের সাথে সহমত। তবে অনেক মতের মধ্যে মৈত্রী কূটনীতি দিয়ে হয়, নির্জলা আবগে শুধু বিভাজনই বাড়ায়। সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন মানুষদের প্রতিই অন্তত এই মুহূর্তে সাম্প্রদায়িক মনোভাব মূল ইস্যুকে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেবে আশঙ্কা প্রকাশ করছি। তথাকথিত প্রগতিশীল আর মৌলবাদী ধর্মান্ধদের কলহে পরিণত হোক অভাগি তনু- তা মেনে নিতে পারছি না।
পোস্টে আমি তনু ধর্ষণ হত্যার প্রাসঙ্গিক আলোচনাকে এড়িয়ে গেছি। তা এই কারণে নয় যে তা গুরুত্বহীন। আমি তাত্ত্বিক ব্যাক্ষার আশ্রয় গ্রহণ করেছি ভবিষ্যৎ এর কথা মাথায় রেখে। নিন্দুকেরা বলতে পারেন, তত্ত্ব দিয়ে সব চলে না। হ্যাঁ ব্যক্তিগত জীবন তত্ত্ব দিয়ে না চললেও জাতীয় জীবনের অনেক সিদ্ধান্তগুলোই তত্ত্ব দিয়েই চলে।
তনুর প্রতি ন্যয় বিচার তখনই হবে- যে বিচারে ভবিষ্যতে কাওকে তনুর মত নির্মম পরিনতিতে পড়তে হবে না।
তনুর ধর্ষক ও হত্যাকারীদের দ্রুত শনাক্ত ও খুঁজে বের করে গ্রেফতার করা হোক।
ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হোক।
ক্ষুদ্র জ্ঞানের আলোকে বিশ্লেষণ- যে কোন ভুলের দায়ভার সম্পূর্ণ আমার।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে মার্চ, ২০১৬ রাত ১১:২০