নারায়নগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত নূর হোসেন অপরাধ জগতের প্রধান সেনাপতি মহিবুল্লাহ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। রবিবার পুলিশ তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। এর আগে শনিবার রাতে নোয়াখালীর সেনবাগ থেকে তাকে গ্রেফতার করে নারায়নগঞ্জ নিয়ে আসে সিআইডি।নূর হোসেন
জিজ্ঞাসাবাদকারী সূত্র জানায়, মহিবুল্লাহ তাদের কাছে দাবি করেছে, প্রতি মাসে ১০ লাখ টাকার মতো চাঁদাই পেতেন নূর হোসেন। নূর হোসেনের বৈধ-অবৈধ মিলিয়ে দুই ডজন অস্ত্র ছিল। এর মধ্যে অর্ধেক লাইসেন্স করা। ঘটনার পর নূর হোসেন সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ভারতে পালিয়ে গেছেন। সঙ্গে তার স্ত্রীও ছিলেন। পশ্চিমবঙ্গের নরেন্দ্রপুর নূর হোসেনের বাড়ি রয়েছে। পাশাপাশি সেখানে তার অনেক ব্যবসাও আছে। ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে পালিয়ে এখানেই অব¯’ান করেছেন নূর হোসেন। ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার এলে দেশে আসেন নূর হোসেন। তবে তখনই এলাকায় ফেরেনি।
জানা গেছে, বিএনপি আমলে তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোর্টিশও জারি করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর রেড নোর্টিশ তুলে ফেলা হয়। তখন থেকেই এলাকায় বহাল তবিয়তেই ছিলেন এই নূর হোসেন। তবে এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে নূর হোসেনের সম্পৃক্তার ব্যাপারে এখনো মুখ খোলেনি মহিবুল্লাহ। তদন্তকারী কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহিবুল্লাহর দেয়া তথ্য পুরোপুরি তারা বিশ্বাস করছেন না। কারণ তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করতে সে এলোমেলো তথ্য দিতে পারে। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরো অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। তবে তার দেয়া সব তথ্যই যাচাই বাছাই করে দেখা হ”েছ বলে জানান একজন কর্মকর্তা।
নারায়নগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার বলেছেন, মহিবুল্লাহ আসলে নূর হোসেনের ড্রাইভার নয়। রবিবার বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় মহিবুল্লাহকে নূর হোসেনের ড্রাইভার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে- যা ঠিক নয়। মহিবুল্লাহ তার অপরাধ জগতের প্রধান সহযোগী। জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। যা তদন্ত কাজে সহায়তা করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই সবকিছু বলা যা”েছ না। পুলিশ সূত্র জানায়, মহিবুল্লাহকে রবিবার আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর তার শ্যালক সম্রাটের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রবিবার নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট চাঁদনী রূপম তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এই দুই জনকেই ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জে আলোচিত সেভেন মার্ডারের পর পুলিশের ধরপাকড় অভিযান শুর“ হলে মহিবুল্লাহ তার শ্বশুর বাড়িতে আশ্রয় নেয়।
এদিকে পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, তদন্তকারী কর্মকর্তারা র্যাব-১১ এর ১৮ জন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চিঠি দিয়েছেন। তবে র্যাব-১১ এর কমান্ডিং অফিসার আনোয়ার লতিফ খান চিঠি পাওয়ার কথা অস্বীকার করেছেন। তদন্তকারী সূত্র জানায়, তদন্তের স্বার্থে অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হ”েছ। এর মধ্যে র্যাব কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
পুরো খবর এখানে