চিঠি দিও প্রতিদিন চিঠি দিও
নইলে থাকতে পারবো না
সাবিনা ইয়াসমিনের এই গানটি বেশি দিন আগের না, যখন চিঠিই ছিল যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। প্রিয়জানের চিঠির আশায় কত মানুষের কত দিন কেটে গেছে। কিন্তু সেই চিঠির যুগ আজ আর নেই। এখন আছে ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাসসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। এগুলোর মাধ্যমে প্রিয়জন কোথায় আছে, কি করছে তা জানা যায়, ভয়েস কলও, ভিডিও কলও করা যায়।
ফেসবুক বর্তমান তরুন প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। ঘুমুতে যাওয়ার আগে ফেসবুকে না ঢুকলে তাদের যেমন ঘুম হয় না তেমনি ঘুম থেকে উঠেই ফেসবুকে লগিন না করলে তাদের দিন যেন শুরু হয় না। যেখানেই সে যাক, সেখানেই ফেসবুক। বর্তমানে এর সাথে জড়িত হয়েছে সেলফি। সেলফি মানে নিজেই নিজের ছবি তোলা। খেতে বসলে সেলফি, বেড়াতে যাওয়ার আগে সেলছি, বেড়াতে গিয়ে সেলফি আর সাথে সাথেই ফেসবুকে আপলোড।
ফেসবুক অন্যান্য ক্ষেত্রের ন্যায় তরুন প্রজন্মের কথা বলার ধরনেও প্রভাব ফেলছে। তাদের কথা বলার ঢং এখন পরিবর্তন হয়েছে। বাংলা ইংলিশ মিলিয়ে এক নতুর ভাষার উদ্ভব হয়েছে। সেই সাথে হচ্ছে শব্দের সংক্ষিপ্তকরন। যেমন:OMG = Oh My God, Bro=Brother (ভাই), Sis=Sister (বোন) ইত্যাদি। এমন অবস্থা দাড়িয়েছে যে অনেক সময় অর্থ বুজতেও কষ্ট হয়।
ফেসবুক ব্যবহারের কারনে প্রতারণার শিকার হচ্ছে অনেক তরুন তরুনী। ছেলেরা মেয়ের নামে মেয়েরা ছেলের নামে ফেসবুক আইডি খুলে প্রেমের অভিনয় করছে। এত কেউ কেই অতি আবেগপ্রবণ হয় হারাচ্ছে সবকিছ।
ফেসবুক ব্যবহারের কারনে অনেকে আবার মামলার আইনে জড়িয়ে পড়ছে। ক্ষমতাসীন দলেল কটুক্তি করায় গ্রেপ্তারের খবর অনেক সময়ই চোখে পড়ে।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক আমাদের যেমন সোশালাইজড করছে তেমনি অনেক ক্ষেত্রে অসামাজিক কাজ কর্মে লিপ্ত করছে। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে একটি গল্প দিয়ে শেষ করছি। গল্পটি সম্ভবত ফেসবুকেই দেখেছিলাম।
এক মেয়ে তার বাবাকে চিঠি লিখেছে।
প্রিয় বাবা,
কেমন আছ? তুমি শুনে খুশি হবে যে আমি একজনের প্রেমে পড়েছি। যদিও সে আমার থেকে অনেক অনেক দূরে। আমাদের পরিচয় হয়েছে ‘ফেসবুকে’, তারপর ‘হোয়াটস আপ’ এ প্রতিদিন কথা বলেছি। কিছুদিন পরে সে আমাকে ‘স্কাইপে’ কথা বলার জন্য অনুরোধ কলে এবং প্রায় দুই মাস ধরে ‘ভাইবারে’ আমাদের প্রেম চলছে। বাবা তুমি আমাদের দুইজনের জন্য দোয়া করো।
বাবা উত্তর দিয়েছেলেন:
দারুণ। তাহলে তোমরা ‘টুইটারে’ বিয়ে করে ফেল, ‘ট্যাঙ্গোতে’ মজা কর, ‘আমাজান’ এ বাচ্চা কেন, ‘পে-পাল’ এর মাধ্যমে পাঠিয়ে দাও। আর স্বামীকে যদি তোমার ভাল না লাগে তাহলে ‘ইবে’ তে বিক্রি করে দিও।
ভাল থেকো মা।