সংশিস্নষ্ট সূত্র মতে, এ সিদ্ধানত্মের কারণে প্রতিটি গাড়ি আমদানির পেছনে ৪৮ হাজার টাকা ব্যয় বেড়ে যাবে। অপরদিকে রিকন্ডিশন্ড গাড়ির আমদানিকারকরা মনে করছেন, এখনও যদি বয়সসীমা কিছুটা শিথিল করা হয়, তা হলে মধ্যবিত্তরা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার মধ্যে ভাল মানের জাপানী গাড়ি কিনতে পারবেন। কিন্তু সরকার সেই ব্যবস্থা না করে যদি বয়সসীমা ৩ বছর নির্ধারণ করে, তা হলে জাপানী গাড়ি আমদানি প্রায় বন্ধের উপক্রম হবে। এতে করে দেশে চীন ও ভারতের নিম্নমানের গাড়ির ভাগাড়ে পরিণত হবে ।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যাল্স ইম্পোর্টার্স এ্যান্ড ডিলার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল হামিদ শরীফ জানান, এ অবস্থায় জাপানী গাড়ির আমদানিকারকরা বাংলাদেশে জাপানী রিকন্ডিশন্ড বাজার ধরে রাখার ব্যাপারে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এটি করা হলে এ দেশে জাপানী রিকন্ডিশন্ড গাড়ির বাজার শুধু মধ্যবিত্তই না, উচ্চবিত্তদেরও নাগালের বাইরে চলে যাবে। সরকারের এ সিদ্ধানত্মের কারণে জাপানী গাড়ির দাম আরেক দফা বেড়ে যাবে। অন্যদিকে এর বয়সসীমা ৩ বছর নির্ধারণের কারণে জাপান থেকে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির পরিমাণ বহুগুণ কমে যাবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বর্তমান আমদানি নীতিমালা অনুযায়ী জাপান থেকে সর্বোচ্চ ৫ বছরের পুরনো রিকন্ডিশন্ড বা ব্যবহৃত গাড়ি আমদানি করা যায়। এক সময় জাপান থেকে যে কোন বয়সের গাড়ি আমদানি করা যেত। অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়াসহ বিশ্বের প্রায় ১৮৫টি দেশ এখনও পর্যনত্ম জাপান থেকে যে কোন বয়সের রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি করে। বিগত কয়েকটি সরকার একাধিক দফায় জাপানী গাড়ি আমদানির বয়সসীমা কমিয়েছে। সর্বশেষ ৫ বছর করা হয়েছিল। এখন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এ নির্দেশনার কারণে ৩ বছরের বেশি পুরনো গাড়ি আমদানি করা যাবে না। এ কারণে ইতোমধ্যে জাপানের নিলাম মার্কেটেই বাংলাদেশে রফতানির উপযুক্ত গাড়ির মারাত্মক সঙ্কট সৃষ্টি হচ্ছে। আর এতে গাড়িগুলোর নিলাম মূল্যও অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে। যার প্রভাব ইতোমধ্যে দেশের বাজারে পড়তে শুরম্ন করেছে। সে কারণে অদূরভবিষ্যতে ঢাকার বাজারে পেঁৗছানোর পর এসব গাড়ি উচ্চ মধ্যবিত্তদেরও নাগালের বাইরে চলে যাবে।
বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করে ক্রেতা যাতে কোনভাবেই প্রতারিত না হন তার জন্যই অর্থমন্ত্রী এটি করেছেন।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, জাপান থেকে রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানির প্রক্রিয়াকে ঘিরে অপর একটি স্বার্থান্বেষী চক্র প্রায় ১৪৬ কোটি টাকার কমিশন বাণিজ্য হাতিয়ে নেয়ার লৰ্যে এ আদেশ জারি করানোর চেষ্টা করছে। এ চক্রটি জাপান থেকে গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে দীর্ঘদিনের মান নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান জাইর পাশাপাশি সদ্য আত্মপ্রকাশ করা জেভিক নামের কোম্পানিকে দিয়েও পরীক্ষা করানোর বাধ্যবাধ্যকতা জারির চেষ্টা করা হচ্ছে। সংশিস্নষ্ট সূত্র মতে, এর জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর ক্রমাগত চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে।
পরীক্ষণ ব্যবস্থা চালু করা হলে প্রতিটি গাড়ির দাম আরও প্রায় ৫০ হাজার টাকা বেড়ে যাবে।
করা হয় ।
জাপানী রিকন্ডিশন্ড গাড়ি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, জাপানীরা নিজেদের ব্যবহৃত গাড়িগুলো সাধারণত ৫ থেকে ৭ বছর ব্যবহারের পর বিক্রি করে দেন। তাদের ছেড়ে দেয়া গাড়িগুলোই নিলাম মার্কেটের মাধ্যমে রিকন্ডিশন্ড হিসাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়। জাপানের উন্নত রাসত্মা, উচ্চমানের জ্বালানি এবং ঠা-া আবহাওয়ার কারণে ৬/৭ বছর চালানোর পরও প্রতিটি গাড়ি একেবারে নতুনের মতো থাকে। এসব গাড়ি আমদানিতে পরিবেশের নূ্যনতম কোন ঝুঁকিও থাকে না। অথচ বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশের প্রতিটি সরকারই জাপানী গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এর ফলে আমদানিকৃত রিকন্ডিশন্ড গাড়ির দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন দেশ থেকে নিম্নমানের গাড়ি এ দেশে অবাধে প্রবেশ করছে।
১৫ জুলাই ২০১১
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুলাই, ২০১১ সকাল ১১:২১