তোকে আর দেখি না আগের মতো অদৃশ্যে ভাসমান। দেখার তৃষ্ণাও মরে গেছে- অথচ একফোঁটা মেয়ে একটা বিপুল ভুবন ছিলি- কিভাবে, কখন- তাও এক রহস্যের পাখি।
একটা মিসডকল, শাহবাগের মোড়ে অধীর অপেক্ষা, রিকশায় ফেব্রুয়ারির চিকন রোদ- মাঝখানে একসুতো মাঠ প্রচণ্ড দাহে ছারখার- তীব্র স্পর্শ চায়, হলেই বিকট বিস্ফোরণ- কিন্তু হলো না- তাও এক রহস্যের পাখি।
তোর সেই প্রিয় কবিতারা কোথায় এখন? গল্প লিখার নেশা কি তোর তেমনি আছে? তুইতো ভীষণ ভালো লিখিস- কঠিন মাথা- বুদ্ধিজীবী- একদিন তুই আকাশ ছুঁবি। আমি ভাবতাম, তুই শুধু আমার আবিষ্কার। কিন্তু তুই দারুণ বুদ্ধিমতী- চতুরা!
তারপর ফেব্রুয়ারির বই- বইমেলার আড্ডা আর বটতলায় ছবি তোলা- বিরিয়ানি ভোজ, ভার্সিটির ক্যান্টিনে- কবিতারা- ইত্যাদি, মোড়ক উন্মোচন- ভিড়ের ভেতর বারুদের কাঠি ঠুকে দিলি পিঠের উপর, অমনি একঝাঁক ফুলকি- অমনি সচকিত চোখাচোখি, ত্রপিত ভুরুরা নিরন্তর কাঁপছিল...গানের চত্বরে তখনও থামে নি গান, পাশাপাশি- মাঝখানে একসুতো মাঠ প্রচণ্ড দাহে ছারখার- রহস্যের পাখি...
তারপর যেদিন ভুবন দেখালি- রিভারভিউয়ের দগদগে বালু, রোদের হলকায় ডুবে যেতেই বিস্ময়...
তোর তো কিছুই লাগে না ভালো। বর, বিগত প্রেমিক, গভীর ডিপ্রেশন- আমি ভাবতাম- আহা, ভাবতাম- বোকারা তো এমনই ভাবে রে...
কিছুই দেয়া হলো না দেশটাকে- সত্যিই ভাবিস তাই? আমার এসব ন্যাকামু মনে হতো, আজও- তোর বাড়ির সামনে অন্ধ ভিখারি- ওকে একটা জামা কিনে দিস- তাতো দিবি না- গলাফাটানো দেশের জন্য- লোকশোনানো- দেশপ্রেম ও-রকম না...
কেমন যাচ্ছে চাকরিবাকরি, বাকি সব? বড় বড় আইনি কিতাব? ব্যারিস্টারির খবরাখবর আর তো দিলি না।...একদিন তোর জেরা শুনবো- বাগ্মিতা আর লড়াই করার দেখবো দক্ষতা...তোর পদভারে হাইকোর্টের প্রাঙ্গন কাঁপে- এই জনমে দেখার বড় সাধ ছিল রে...আর হলো না...
তারপর কতোদিন দেখি না তোকে- তোর কণ্ঠস্বর ভুলে গেছি। অথচ জানি, তোকে এখন তামাম পৃথিবী দেখে- শোনে। .... তুইও।