জোকসটি আসলে
বাংলানিউজ ২৪ থেকে নেয়া অনেকের চোখে পড়তে পারে..আবার দেখে নিন..
টুঙ্গীপাড়ায় বাড়ির সামনের ব্রিজই শেষ করতে পারেননি শেখ হাসিনা!
ঢাকা: দু’দফা ক্ষমতায় এসেও নিজের বাড়ির সামনে এক যুগেরও বেশি সময় আগে শুরু হওয়া একটি ব্রিজের কাজ শেষ করতে পারেননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ আক্ষেপ প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকার এক বাসিন্দার। আতাউর রহমান নামে গোপালগঞ্জের ওই ব্যক্তি এখন রাজধানীর রাজপথে সিএনজি অটোরিকশা চালান।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর সাতরাস্তা এলাকা থেকে এ প্রতিবেদক তার আরও দুই সহকর্মীসহ আতাউরের সিএনজিতে উঠলে তিনি কথা প্রসঙ্গে এ খেদোক্তি করেন।
টুঙ্গীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে পাটগাতি বাজারে মধুমতি নদীর উপর নির্মীয়মান ব্রিজটি গোপালগঞ্জ ও বাগেরহাটকে সংযুক্ত করবে বলে বাংলানিউজকে জানান আতাউর।
তিনি আরও জানান, শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার পর মধুমতি নদীতে ব্রিজটি তৈরির কাজ শুরু করেন। রাজনৈতিক পালাবদলে ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতাসীন হলে ব্রিজটির নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ওয়ান-ইলেভেনের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে শেখ হাসিনার সরকার পুনরায় রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলেও ব্রিজটির কাজ এখনও অসমাপ্তই রয়ে গেছে।
আতাউর আরও বলেন, “বাগেরহাট-১ আসন থেকে সবসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নির্বাচন করেন। ওই আসন থেকে তিনি ২/৩ বারের নির্বাচিত এমপিও বটে। কিন্তু আষাঢ়- শ্রাবণ মাসে এখনও সে এলাকার লোকদের হাঁটু সমান কাদা পাড়ি দিতে হয়।”
নিজের এলাকার উন্নয়ন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সীমাবদ্ধতা ছাড়াও সমসাময়িক আরও অনেক বিষয়ে খোলামেলা মতামত দেন আতাউর।
সংবাদ মাধ্যমগুলোর সমালোচনা করে আতাউর বলেন, “তারা শুধু দলীয় নেতাদের বক্তব্য তুলে ধরে। সিএনজি চালাই বলে আমাদের দাম দেয় না। দেশের বিষয়ে আমাদের মতামত নেয় না। ভাবে আমরা অশিক্ষিত, মুর্খ। কিন্তু শুধু মুর্খরাই সিএনজি চালায় না- এটাও ভাবতে হবে।”
সিএনজি চালকদের ডাকা ধর্মঘট নিয়েও বাংলানিউজের কাছে সুচিন্তিত মতামত তুলে ধরেন গোপালগঞ্জের এই সিএনজি চালক।
তিনি বলেন, “অবরোধের পর থেকে পুলিশের উৎপাত কমেছে। এখন আর রাস্তার মোড়ে মোড়ে তারা সিএনজি থামায় না। মামলা দেয় না। তবে মালিকদের জমা এখনও ৮২০ টাকা করেই দিতে হচ্ছে।”
“সিএনজি নিয়ে রাস্তায় বের হলে দিনে ১৫শ’ থেকে ১৬শ” টাকা আয় হয়” স্বীকার করে তিনি বলেন, “তবে মালিকের ৮২০ টাকা, প্রায় দু’শ’ টাকা গ্যাস খরচ ও গাড়ি মেরামতে দিনে একশ’ থেকে দেড়শ’ টাকা খরচের পর নিজের আর তেমন কিছু থাকে না।”
প্রাইভেট গাড়িগুলোকে ঢাকা শহরে ট্রাফিক জ্যামের প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করে তিনি বলেন, “লোকাল বাসের তুলনায় প্রাইভেট গাড়ি কয়েকশ’ গুণ বেশি। এগুলো তুলে নিলেই ঢাকা শহর জ্যামমুক্ত হবে। তখন ১৫০ টাকার ভাড়া ৬০ টাকা নিলেও আমাদের পোষাবে।”
ভ্রাম্যমাণ সাক্ষাতকারটির এ পর্যায়ে গন্তব্যে পৌছে যাই আমরা। আমাদের সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে অনেকটা যেন শামুকের মতো নিজের ভেতরে নিজেকে গুটিয়ে নেন আতাউর।
মিনতি ঝরানো সরল কণ্ঠে বলেন, “আপনারা সাংবাদিক জানলে এতো কথা বলতাম না। অল্প পড়ালেখা করেছি বলে তেমন কোনো চাকরি জোটাতে পারিনি। সিএনজি চালিয়ে পাঁচজনের সংসার চালাই। প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করেছি বলে আমার নামে এমন কিছু লিখবেন না যাতে আমার কোনো ক্ষতি হয়।”
বাংলাদেশ সময়: ০৯২০ ঘণ্টা, জুলাই ১৮, ২০১২
সম্পাদনা: জাকারিয়া মন্ডল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর