অনেকদিন পর ছবি পোস্ট করলাম। আমাদের এখানে (জাপান) ক্রীস্টমাস এবং নিউ ইয়ারের বন্ধ ছিল। অনেক জায়গায় ঘুরেছি। আমার একটা ছোট্ট গাড়ি আছে। বন্ধ হলেই আমি মেয়ে আর মেয়ের মাকে নিয়ে ঘুরতে বের হই। আমাদের এখানে আরেকটা পরিবার আছে- স্বামী স্ত্রী। ওরাও ঘুরতে খুব পছন্দ করে। আমার ছোট্ট গাড়িতে পাঁচজনে মিলে ঘুরি। ঘুরাঘুরির প্রতি আমার আকর্ষণ কম। কিন্তু ছবি তোলার প্রতি প্রবল নেশা।
ডিসেম্বর মাসের ৯ তারিখে আমাদের শহর নাগোয়া থেকে কিয়োতো হয়ে কোবে শহরে গিয়েছিলাম। কোবে শহর জাপানে নতুন এক শহর। ১৯৯৫ সালের ১৭ জানুয়ারি এক ভয়াবহ ভূমিকম্পে ৪০০০ এর বেশি লোক মারা গিয়েছিল এবং চার লক্ষ্যের অধিক ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গিয়েছিল। এরপর পুরো কোবে শহর আবার নতুন করে বানানো হয়। প্রতি বছর ডিসেম্বরের শুরুতে এখানে লাইটিং হয় যা কোবে ইলুমিনেসন নামে পরিচিত। এটা শুরু হয় ১৯৯৫ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে, ভূমিকম্পের ভয়াবহ স্মৃতিকে স্মরণ করে।
যাওয়ার পথে সকলে যখন নাস্তা করছিল, তখন তুলেছি।
কিয়োতো শহরে জাপানিদের একটা ট্যাম্পেল-কিয়োমিজুদেরা।
কোবে ইলুমিনেসন
কবে ইলুমিনেসন শেষ করে আমরা গিয়েছিলাম পোর্ট এরিয়ায়। সেখান থেকে কোবে টাওয়ারের ছবি তুলেছি।
ডিসেম্বর মাসের ২৪ তারিখ গিয়েছিলাম ওয়াকাইয়ামা তে। সেখানে একটা জাপানিদের টেম্পল আছে। সেই টেম্পলের ঠিক পাশেই একটা ঝরণা বয়ে গেছে। এই ট্যুরটা অবশ্য আমার আগ্রহেই গিয়েছি। কারণ টেম্পল আর ঝরণার ছবি মিলে খুব সুন্দর একটা কম্পোজিশন হওয়ার কথা।
সেখানে যাওয়ার পথে একটা সমুদ্র সৈকত পড়ে। সৈকতটা আমাদের দেশের বালুসৈকত না। এটা পাথুরে সৈকত। এই জায়গাটা আবার ওয়ার্ড হেরিটেজ। তাই সেখানেও একটু ঢুঁ মেরে গেলাম।
ডিসেম্বরের ২৯ তারিখে গিয়েছিলাম তাকায়ামা সিটিতে। আমাদের প্ল্যান ছিল সিন-হোতাকা রোপওয়েতে চড়ার। খুবই সুন্দর জায়গা। আমাদের পুরো জার্নির সময় তুষারপাত হচ্ছিল। তুষারপাতের মাঝদিয়ে এটাই আমার জীবনের প্রথম গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞরা হয়েছে। আমরা অবশ্য আমাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারিনি। গাড়ির স্নো টায়ার ছিলনা বলে দু-তিন জায়গায় চাকা স্কীড করে গিয়েছিল। তারপর আর পাহাড়ে উঠতে সাহস করলাম না। অবশ্য ফিরে আসার সময় আমি দু-একটা ক্লিক করতে ভুলিনি।
নতুন বছর জানুয়ারির ২ তারিখ গিয়েছি ফুজিয়ামা শহরে। মাউন্ট ফুজি দেখতে। প্রথমে আমরা সেখানে একটা ঝরণা দেখেছি।
তারপর সেখান থেকে একটা লেক-এ গিয়েছি। লেকে পুরো মাউন্ট ফুজির প্রতিফলন পরেছিল। দেখতে খুব সুন্দর লাগছিল।
জানুয়ারির ৭ তারিখ গিয়েছিলাম ওসাকা সিটির ইউনিভার্সাল স্টুডিওতে। এখানে অবশ্য ছবি তোলার থেকে মজাই বেশি করেছি। এখানে রাইডগুলো খুবই ভয়ঙ্কর। ফ্লাইং ডাইনোসর নামে একটা রাইড আছে। আমার কাছে সবচেয়ে ভয়ংকর লেগেছে। পুরোটা সময় আমাকে উলটো করে ঘুরিয়েছে। সেখান থেকে নেমে আমার একবার সন্দেহ হয়েছিল গাড়ি চালিয়ে বাসায় পৌঁছাতে পারব কিনা!
এটা সাধারণ রোলার কোস্টার
এটা ফ্লাইং ডাইনোসর
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৭ দুপুর ১২:৫০