দেখতে দেখতে ব্লগে আমার পাঁচ বছর হয়ে গেল। আগেই ভেবে রেখেছিলাম একটা বর্ষপূর্তি পোস্ট দিব। তবে এটাই আমার প্রথম বর্ষপূর্তি পোস্ট। প্রথমেই আমি আমার সমালোচনা করি, কি বলেন?
ব্লগার হিসেবে আমি একদমই অযোগ্য। কথাটির সত্যতা পাবেন আমার ব্লগ পরিসংখ্যান দেখলেই। আমি মোট পোস্ট করেছি ৪৫টি (এই পোস্ট সহ)। ৫ বছরে ৪৫টি পোস্ট মানে আমি গড়ে মাসে ০.৯৩ টি পোস্ট লিখেছি। গড় দেখে মনে মনে সান্তনা নিলেও আসল ব্যাপার হচ্ছে আমি ২০১১ তে ব্লগ লিখেছি ১টি, ২০১২ তে ২টি, ২০১৩ তে কোন ব্লগ লিখিনি, ২০১৪ তে ১৯টি, ২০১৫ তে ৯টি এবং ২০১৬তে ১৪টি।
মন্তব্য করেছি ৩২৮টি এবং মন্তব্য পেয়েছি ৪৯৫টি। মানে কেউ যদি মন্তব্য করে আমি তার উত্তরও ঠিক মত দেইনি। অনুসরণ কাউকেই করছি না এবং অনুসরণ করছে ৩৯ জন।
আমার পরিসংখ্যান দেখলে আমারই কান্না আসে। এতো খারাপ পরিসংখ্যান আর কারো আছে কিনা জানা নেই।
আমি এক বাক্যে স্বীকার করি ব্লগার হিসেবে আমি ব্যার্থ। তবে একথা ঠিক যে আমি আসলে যতটা না লেখক তার থেকে বেশি পাঠক। এবং আমি স্যামহোয়ার ইন ব্লগের একজন খুবই পুরোন পাঠক। যদিও এর কোন প্রমান নেই, তবে আমি বুকে হাত দিয়ে বলতে পারি আমি প্রায় ২০০৮-২০০৯ সাল থেকে নিয়মিত ব্লগ পড়ি। সে ক্ষেত্রে এই ব্লগের সাথে আমার পরিচয় প্রায় সাত-আট বছর। এমন অনেক ব্লগারের নাম আমার মনে আছে যারা সেই সময়ে ছিলেন, কিন্তু এখন আর ব্লগে নেই, বা হয়তো অন্য কোন নামে লিখছেন। অনেক পরিবারে এমন দুই একজন থাকে যারা খুব কম কথা বলে। চুপচাপ থাকে, কারো সাতেও নেই পাঁচেও নেই। আমি অনেকটা সেরকম আর কি!
নামের ব্যাপারে আমার কিছু বলার আছে। নামটি অত্যন্ত হাস্যকর এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। আমি নিজেকে নিজে জ্ঞানী বলছি, এটা আমার জ্ঞানেরই দৈন্যতা প্রকাশ করে। তাও আবার নামের বানান ভুল আছে। ‘নিরব’ হবে না, ‘নীরব’ হবে (একবার সামুতে লিখেছিলাম বানানটা শুদ্ধ করতে। কোন সাড়া পাইনি।) আপনারা যে আমার ব্লগের নাম দেখে আমাকে কিভাবে সহ্য করেন আল্লাহই জানেন। আমি এরকম নামের কোন ব্লগারের ব্লগ পড়েও দেখতাম না। আপনারা তো পড়ছেন, আবার কমেন্টও করছেন। এটা অবশ্যই আপনাদের উদারতা। কি ভেবে যে তখন আমি এমন একটা নামে ব্লগ খুলেছি! কিন্তু নামটাকে ফেলেও দিতে পারছিনা। যদিও আমার অপর একটি মাল্টি নিক আছে ব্লগে, কিন্তু ওইটার অবস্থা আরো ভয়াবহ।
কখনো কখনো গল্প লিখার চেষ্টা করি। কিন্তু গল্পগুলো কেন যেন মাইক্রো সাইজের হয়ে যায়। অনেক চিন্তা করে গল্প লিখে শেষ করে দেখি সেটা কোন রকমে চার পাঁচ প্যারা। পড়তে না পড়তেই শেষ। কিন্তু মাঝে মাঝে এমন লিখতে ইচ্ছা করে যে না লিখে পারিনা। গল্প লিখার উৎসাহ পেয়েছিলাম একজন ব্লগারের মন্তব্য থেকে। আমি যে গল্পই লিখিনা কেন তার কমেন্ট থাকতো। কিন্তু এখন তাকে আর ব্লগে দেখা যায় না। তার নিক ছিল “অপূর্ণ রায়হান”। এছাড়াও আরো দুইজন লেখক আমার মাইক্রো সাইজের গল্প লিখার জন্য দায়ী। একজন হলেন “অপু তানভীর”, অপরজন “ডি মুন”। মানে তাদের লিখা আমার খুব ভাল লাগে এবং তাদের লিখা পড়ে পড়ে আমিও কিছু লিখার উৎসাহ পেতাম। যদিও পরের দুইজনের সাথে আমার কখনো সেভাবে যোগাযোগ নেই। মানে তাদের পোস্টে আমি মন্তব্য করেছি কিনা আমি মনে করতে পারছি না।
অপর একজন ব্লগার আছেন তার কথা না বললেই নয়, তিনি হলেন ‘আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম’। তার প্রায় সব কটি পোস্টই আমি পড়ি। তিনি আমার প্রথম গল্পে কমেন্ট করেছিলেন। কমেন্টটি আমার তখন খুব ভাল লেগেছিল। (অনেকের মনে সন্দেহ হতে পারে আমার নিক তো ডি মুন এবং আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম ওনাদের নিক থেকে পুরোন। আমি উতসাহ পেলাম কিভাবে? আসলে আমি ব্লগে গল্প লিখা শুরু করেছি ২০১৪ সাল থেকে। সে সময় উনারা ব্লগেই ছিলেন।)
আমি নিজেকে একজন শখের ফটোগ্রাফার বলতেই পারি এবং ব্লগে একমাত্র আমার ছবি রিলেটেড ব্লগগুলোই কিছুটা বেশি পড়া হয়। এটা নিজেকে ফটোগ্রাফার হিসেবে ভাবতে আমার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। তাই আজকেও আমি আমার তোলা ছবিগুলো ব্লগের শেষে যোগ করে দিলাম। বর্ষপূর্তি পোস্ট এবং ছবি ব্লগ পোস্ট মিলিয়ে একসাথে মেরে দিলাম আরকি।
আমার ছবিব্লগগুলোতে কিছু কিছু ব্লগার প্রায় নিয়মিত পড়েছেন এবং পড়ছেন। এদের মধ্যে একজনের নাম আমার বলতেই হয়। তিনি হচ্ছেন ‘সুমন কর’। প্রায় প্রতিটি ব্লগেই উনার মন্তব্য পেয়েছি যা আমাকে উৎসাহ দিয়েছে। শখের ফটোগ্রাফি নামে যে ব্লগগুলো লিখেছি সেখানে অপর একজন ব্লগার আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। তিনি হলেন ‘কাল্পনিক_ভালবাসা’। আরেকজন ব্লগার আছেন যিনি আমার প্রথম ছবি ব্লগে কমেন্ট করেছিলেন। তিনি হলেন ‘জানা’।
এছাড়া আরো অনেক ব্লগার আছেন যারা আমার খুব পরিচিত। পরিচিত কারণ আমি তাদের ব্লগ পড়ি বা পড়তাম। কিন্তু কমেন্ট খুব কম করেছি বা কখনো করিনি। (আসলে আমি প্রায় ৯৯% ব্লগ লগইন না করেই পড়ি, তখনই লগইন করি যখন আমি কোন ব্লগ পোস্ট করি) আপনাদের সবার নাম তো আর দেওয়া সম্ভব না তবে কিছু কিছু নাম আমি উল্লেখ করলাম।
অন্যমনস্ক শরৎ, আবু শাকিল, আমিই মেঘদূত, আমিনুর রহমান, অশ্রুকারিগর, আসিফ বিন হোসেন, আরজু পনি, আহলান, আহসানের ব্লগ, আহসানুল হক শোভন, ইতি সামিয়া, ঈপ্সিতা চৌধুরী, কাজী ফাতেমা ছবি, কামরুন নাহার বীথি, কি করি আজ, ভেবে না পাই, কলাবাগান১, কলমের কালি শেষ, খায়রুল আহসান ,খেলাঘর, গেম চেঞ্জার, চাটগাইয়া জাবেদ, চাঁদগাজী, জনি চৌধুরী, জাহাজী পোলা, ট্রিপল আর, তালপাতারসেপাই, দীপংকর চন্দ, নামে বইয়ের পোকা, নতুন, প্রামানিক, ফেরদৌসা রুহী, ব্লগ সার্চম্যান, বাকপ্রবাস, বিচার মানি তালগাছ আমার, বিজন রয়, বিদ্রোহী ভৃগু, মাঘের নীল আকাশ, মন্ত্রক, রমিত, রক্তিম দিগন্ত , রাবেয়া রাহীম, রাজীব নুর, লেখোয়াড়, শাইয়্যানের টিউশন (Shaiyan's Tuition), শামছুল ইসলাম, শায়মা, সকাল হাসান, সাহসী সন্তান, সুখী মানুষ, সাদা মনের মানুষ, হাসান মাহবুব।
আমার তোলা কিছু ছবি।
ফুলঃ আল্লাহর সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টিগুলোর একটি হচ্ছে ফুল। আপনি যেমন ফটোগ্রাফারই হোন না কেন ফুলের ছবি সব সময়ই খুব সুন্দর ওঠে।
আকাশঃ আমার খুব প্রিয় জিনিসগুলোর একটি হল আকাশ। কত সময় যে আমি আকাশের দিকে তাকিয়ে পাড় করেছি তা একমাত্র আকাশই জানে। আমি কিন্তু আমার মেয়েকেও আকাশ দেখা শিক্ষাচ্ছি। ওর বয়স এখন সাড়ে তিন। এখন আমাকে মাঝে মাঝে ডেকে বলে “ বাবা, দেখ আকাশ!”
বৃষ্টির ফোঁটাঃ বৃষ্টি শেষ হবার পর পর আপনি কি কখনো রাস্তায় হেঁটেছেন। আমি প্রায়ই বৃষ্টির পর পর যে রোদটা ওঠে তা উপভোগ করার জন্য রাস্তায় বেরিয়ে পড়ি।
হাবিজাবিঃ
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে অক্টোবর, ২০১৬ সকাল ১১:১১