অনেকদিন আগের কথা, টংগী হোসেন মাকেট সংলগ্ন মোক্তার বাড়ি রোডে তালুকদার ভিলা নামে আমরা একটি বাড়ি ভাড়া নেই। যতদিন ছিলাম বাড়িওয়ালার সাথে যতটা সম্ভব ম্যানেজ করেই চলছিলাম।যথারীতি নিয়ম মেন ভাড়া দেই। যখন যে সকল নিয়ম নীতি চালু করে তা মেনে চলি। তো একদিন হল কি-আমার খালাতো ভাই আসল আমার বাসায় বেড়াতে ঔ সময় আমার আমার ডায়নিং রুমের বাল্ব নষ্ট হয়ে যায়।
সচরাচর যা করা হয় বাসায় ছোট ভাইবোন থাকলে এইসব ছোটখাট কাজ করানো যায়। ও বাল্ব লাগাতে বেসিন এর উপর পা দিয়ে দাড়াতে গিয়ে বেসিন ভেঙ্গে নিচে পরে যায়।
যাই হোক বের হয়ে যায় বাড়িওয়ালার আসল রুপ, আমার বেসিন কিনে দিতে হবে।
ঠিক আছে দিব।
চিন্তায় পড়ে গেলাম কি করা যায়? শত বছরের পুরানা বেসিন এখন তো নতুন টা কিনে দিতে হবে।
ভাগ্য সুপ্রসন্ন আমার এক প্রতিবেশি দোকানদার, সিরামিক্সের দোকান।আলোচনা প্রসঙ্গে বলল ভাবী আমার দোকানে বি আইএস এফ এর ই একটা পুরাতন বেসিন আছে আপনি চাইলে ৫০% দামে নিতে পারেন।
দোকানে গিয়ে দেখলাম হুবহু বাড়িওয়ালারটার মত।
কথা না বাড়িয়ে আমি সেটা নিয়ে আসলাম।
বাড়িওয়ালাকে ডাকলাম।
বাড়িওয়ালা দেখে চক্ষু চড়কগাছ।
এটা পুরাতন আমাকে নতুন কিনে দিতে হবে।
আমি ওনার কথার কোন মানে বুঝলামনা, শেষে উনাকে বুজাবার জন্য আমার পরিচিত আরেক বাড়িওয়ালাকে নিয়ে আসলাম।
উনি যখন দেখল সবই ঠিক আছে তখন তিনি মেনে নিলেন আরকি।
যাই হোক এরপর থেকে আমার আর বাড়িওয়ালা সম্পর্ক ভাল যাচ্ছেনা। এভাবেবেশ কিছুদিন চলে যায় আমি বাসা ছেড়ে দেই। অমার চাকুরীর জন্য আমাকে বাড্ডায় বাসা নিতে হবে।
এক মাসের নোটিসে বাসা ছাড়ার তিন কি চারদিন পরে বাড়িওয়ালা আমার বাসায় আসে এবং বলে যে ভাবী আপনি তো চলে যাবেন আপনের এ মাসের ইলেকট্রিক বিলটা নেন । অনেকদিন আগের ঘটনা, আজ থেকে প্রায় ০৭ কি ০৮ বছর আগের হবে। বাড়িওয়ালা বলল ৬০০/- বিল হয়েছে আপনে নেন আপনের বিলের কপি। যদিও আগের বিল বাড়িওয়ালা বাড়ি ভাড়ার সাথেই নিত এবং যা বলত তাই দিতাম।
আমার এই সব বিলের ব্যাপারে তেমন কোন ধারনা ছিলনা। তবুও আমি বিলে কপিতে চোখ বুলিয়ে দেখলাম ওটা আগের মাসের বিলের কপি। জিজ্ঞেস করলে বলে যে এ মাসে ওরা অগ্রিম দিয়েছে। মাথা মুন্ড কিছুই বুঝলামনা। আমার স্বামী ব্যবসার জন্য অনত্র থাকে। ফোন করে জিজ্ঞেস করলাম, বলল অমি আসি তার পরে দেখবো। তুমি টাকা দিওনা।
সে এসে বাড়িওয়ালাকে বলল, ভাই -আমরা ঠিক যে দিন যাব সেদিন আমাকে নিয়ে মিটার এর রিডিং দেখবেন এবং সেদিন আপনের বিল দেব।
কি আ করার, বাড়িওয়াল একরকম বাধ্য হয়েই মেনে নিল। যাওয়ার সময় মিটার এর রিডিং দেখতে গেল, আমিও পাশে ছিলাম।
বিল আসল ২৭৫/-
নিজেরই বিশ্বাস করতে কষ্ট হল মানুষ সামান্য কটা টাকার জন্য কি করে এত নিচে নামে। কোন কথা না বলে তিনি তখন টাকাটা নিয়ে গেল আর আমরা চলে আসলাম, হয়তোবা সারা জীবনের জন্য।
মনে মনে ভাবলাম একটা বাড়ি করার জন্য হয়তোবা এই টাকাটাই অনেক কিছু।
চলবে--