দেশে উৎপাদিত প্রায় সকল পণ্যের গায়ে এর বাজার মূল্য লেখা থাকে। মুল্যের পাশেই ইংরেজীতে লেখা থাকে MRP। এই MRP'র বর্ধিত রূপ হচ্ছে Maximum Retail Price! অর্থাৎ পণ্যটি খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ এই মূল্যে বিক্রী করা যাবে। কিন্তু যেহেতু সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য লেখা নেই এবং আমাদের দেশের এভারেজ গ্রাহক MRP সম্পর্কে ধারণা রাখেন না ফলে বিক্রেতারা সর্বোচ্চ মূল্যটাকেই খুচরা মূল্য হিসেবে চালিয়ে আসছে যুগ যুগ ধরে। হিসেব করলে এই ফাকিবাজির দৈনিক মূল্য কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। মাস বছরের হিসাব নাহয় নাই করলাম।
আমার কথা হচ্ছে একটি পণ্য উৎপাদিত হওয়ার পরে বাজারজাতকরন করতে গিয়ে উৎপাদনের কারখানা হতে ভোক্তা পর্যন্ত পৌছার জন্য যেই দুরত্ব অতিক্রম করতে হয় তার পরিবহন খরচই মূলত সর্বনিম্ন-সর্বোচ্চ মুল্যের নিয়ামক। ঢাকা ম্যাচ ফ্যাকটরিতে উৎপাদিত একটি দেয়াশলাই ঢাকায় ২ টাকা বিক্রী হলে রাজশাহীতে তা ২টাকা ৫ পয়সা হতেই পারে। এটাকে মাথায় রেখেই MRP ঠিক করা হয়। কিন্তু উল্লেখিত দেয়াশলাইটি সারাদেশেই সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে বিক্রী হচ্ছে। তাই এখানে অবশ্যই একজন ক্রেতা কমমূল্যে পণ্যটি পাচ্ছেন, আরেকজন বেশী মূল্যে। কেননা উৎপাদন খরচ একই থাকলেও পরিবহন খরচের হেরফেরের কারণে এলাকাভেদে ৫/১০ পয়সার পার্থক্য হতেই পারে। কিন্তু পণ্যটি যদি দেশের সর্বত্র একইমূল্যে বিক্রী হয় তাহলে অবশ্যই কেউ ঠকছে বা কেউ জিতছে।
তারচেয়েও বড় কথা সর্বোচ্চ খুচরামূল্য মানেই এর একটা সর্বনিম্ন খুচরা মূল্য রয়েছে। সেই সাথে এটাও পরিস্কার, MRP অর্থাৎ Maximum Retail Price আসলে পণ্যটির খুচরা মূল্যমান নয়। অঞ্চলভেদে, অবস্থাভেদে মূল্যের পার্থক্য থাকা বাঞ্ছনীয়।
তাই আবারও বলব, Maximum Retail Price বা MRP পণ্যের প্রকৃত মূল্য নয়। এর উল্লেখের কোন সুফল ক্রেতা সাধারণ ভোগ করতে পারছে না, MRP'র নামে মানুষ ঠকছে কিনা তা ভেবে দেখার দরকার আছে। আছে ক্রেতা সাধারণেরও বোঝার ব্যাপার।
MRP আসলে একটি শুভঙ্করের ফাকি!