somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কায়েশ খান
প্রোপ্রাইটর- ট্যুরমেট, সদস্য- ট্যুর অপারেটর্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব), সাধারণ সম্পাদক - ট্যুরিষ্ট গাইড এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিগ্যাব) । তবে, ট্যুর গাইড হিসেবেই নিজের পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি।

আমি এবং আমার ধর্ম

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মুসলিম পরিবারে আমার জন্ম সুতরাং আমি জন্মসূত্রে মুসলমান। এতে আমার যেমন কোন কৃতিত্ব নেই, তেমনি কোন হীনমন্যতাও নেই। আমার মা-বাবা এবং পরিবার আমাকে লালন পালন করেছে, মায়া-মমতায় ঋণী করেছে এবং ভবিষ্যত জীবন চলার পাথেয় হিসেবে পারিবারিক, সামাজিক এবং ধর্মীয় মুল্যবোধ রপ্ত করিয়েছে।

কথা ফোটার সাথে সাথেই অ, আ, ক, খ , এক, দুই, তিন, এ,বি,সি, আলিফ, বা, তা, ছা ইত্যাদিতে হাতে খড়ি হয়েছে। আমি শিখেছি আল্লাহ ছাড়া কেউ উপাস্য নেই, হযরত মুহাম্মদ সঃ আল্লাহর প্রেরীত মহাপুরুষ, নবী এবং বান্দা। আমি এও শিখেছি হযরত ঈসা আঃ, হযরত মূসা আঃ, হযরত ঈব্রাহিম আঃ সহ ১ লক্ষ ২৪ হাজার নাম জানা-নাজানা নবী ইতিপূর্বে পৃথিবীতে আল্লাহর বানী নিয়ে এসেছিলেন এবং চলেও গেছেন।

আমি শিখেছি হযরত ঈসা আঃ, হযরত মূসা আঃ, হযরত ঈব্রাহিম আঃ সহ পুররবর্তী নবীগনের প্রতি আমার বিশ্বাস রাখতে হবে, আমার বিশ্বাস রাখতে হবে ফেরেশতা গনের প্রতি, শেষ বিচারের দিনের প্রতি, তাকদিরের প্রতি।

আমি আরো শিখেছি, বড়দের প্রতি সন্মান আর ছোটদের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন আমার কর্তব্য। আমি শিখেছি, মিথ্যে বলা যাবেনা, সদা সত্য কথা বলতে হবে, চূরী করা যাবে না, ডাকাতি করা যাবে না, জ্বেনা বা ব্যভিচার করা যাবে না, কাউকে খুন করা যাবে না, অন্যের হক নষ্ট করা যাবেনা। আমি জেনেছি, ঘুষ দেয়া-নেয়া দু'টোই হারাম, ব্যবসা হালাল, সূদ হারাম। আমি এও শিখেছি পানাহারে হারাম-হালাল, জায়েজ-নাজায়েজ মেনে চলতে হবে। বিনা কারনে গাছের একটি পাতাও ছেড়া যাবে না। আমাকে যথাসম্ভব ফরজ, ওয়াজীব, সুন্নত, নফল, মুস্তাহাব জেনে বুঝে নির্দিষ্ট সময় মেনে আল্লাহর সন্তুষ্টির রাহে ইবাদত করতে হবে। আমাকে রমজানের রোজা, স্বচ্ছল হওয়া সাপেক্ষে জীবনে একবার হজ্বব্রত পালন করতে হবে। আমি এই বিশ্বাস নিয়েই বেড়ে উঠেছি এবং অদ্যাবধি মেনে চলার চেষ্টা করছি।

জন্মসুত্রে মুসলমান এই আমি সাবালক হওয়ার পরে ইচ্ছা করলে বা অপছন্দবোধ করলে আমি আমার ধর্ম ত্যাগ করতে পারতাম, অন্যকোন ধর্ম গ্রহন করতে পারতাম-যদিও ইচ্ছে করলেই হিন্দু অথবা ইহুদী ধর্ম গ্রহন করা যেত না কারন হিন্দু অথবা ইহুদী জন্মসুত্রে হতে হয়, একে গ্রহন করা যায় না। কিন্তু আমি সচেতন ভাবেই মুসলমান হিসেবে থেকে যাই এবং জ্ঞানচর্চ্চা এবং ধর্মচর্চ্চা একাধারে চালিয়ে যাই। আমি জীবনের একটা পর্যায়ে ধর্মকে আরো গভীরভাবে উপলব্ধির জন্য গুরু ধরি এবং গুরুর নির্দেশনা অনুযায়ী ধর্মের গুঢ় তত্ত্ব চর্চ্চায় মনোনিবেশ করি। আমার ধর্মগুরুর নির্দেশিত পথে ধর্মচর্চ্চার অন্যতম মহৎ কার্য্য হিসেবে চ্যারিটি অর্থাৎ মানবসেবার কাজে লিপ্ত হই এবং লিপ্ত আছি।

আমি আমার ধর্মের প্রথা মেনে, বিয়ে করে সংসারী হয়েছি, স্ত্রী-কন্যার দায়িত্ব কাধে নিয়েছি, তাদের জন্য হালাল রুজী উপার্জনে পরিশ্রম করছি এবং আমার পরিবারের মতই আমার সন্তানদের লালন-পালন এবং মুল্যবোধ শেখাচ্ছি। একসময় তারাও বড় হবে, জীবন যাপন করবে, আদর্শ-মুল্যবোধ রেখে যাবে তাদের সন্তানদের মাঝে।


আমি আমার চলার পথে, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় সহ কর্মক্ষেত্রে ভিন্নধর্মের অনেক অনুসারীদের সাথে পরিচিত হই, তাদের ধর্মবিশ্বাস নিয়ে কিঞ্চিত পড়াশোনা করি। কিন্তু ওইসব মানুষ বা তাদের আচরিত বিশ্বাস আমাকে তাদের প্রতি বিরাগের কোন কারন হয়ে দেখা দেয়নি কিংবা আমার ধর্মের চেয়ে অন্যটা ভাল এরকম কোন উদ্দীপনাও সৃষ্টি করেনি।

জীবনের এই পর্যায়ে এসে আমি দৃঢ়ভাবে আমার বিশ্বাসের প্রতি অনুগত রয়েছি এবং সকল কাজে এবং আচরনে আমার ধর্মবিশ্বাসের প্রতিফলনের চেষ্টায় নিয়োজীত আছি। কাউকে মেরে পিটিয়ে আমার ধর্ম গ্রহন করানো বা অন্যকে নিজ ধর্মচ্যুত করার কোন মানসিকতা আমার মধ্যে নেই। আমি বিশ্বাস করি, আমার সকল কাজ-কর্ম কোন এক অদৃশ্য শক্তিদ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং আমাকে কোন এক বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের নিমিত্তে এই পৃথিবীতে প্রেরন করা হয়েছে এবং একটি বিশেষ কায়দায় প্রতিমুহুর্তে আমার সকল কাজ-কর্ম পর্যবেক্ষন করা হচ্ছে ফলে আমি প্রতিমুহুর্তেই নিজ আমলনামার বিষয়ে ভীত থাকি এবং কবরে, হাশরে, মিজানে, পুলসিরাতে ক্ষমাপ্রাপ্তির আশায় থাকি। আমি বিশ্বাস করি প্রত্যেককেই নিজ নিজ কর্মফল ভোগ করতে হবে যদিও তার পুর্নাংগ স্বরূপ এখনো পরিষ্কার জানা নাই। আমি দোলনা থেকে কবরে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষাকাল মনে করে অসীম সৃষ্টিকর্তার সন্ধান, আনুগত্য এবং ভালবাসা চালিয়ে যেতে চাই।

এখন আমার কথা হলো, আমি যা যা বললাম, তা যদি সত্যি বলে থাকি তাহলে আমার এই বিশ্বাস সমাজের জন্য, রাষ্ট্রের জন্য, প্রগতিশীলতার জন্য কিভাবে কতটুকু নেতিবাচক? কেন লোকে আমার বিশ্বাসকে আক্রমন করবে? আমিই বা কেন অন্যকে আক্রমন করব? আমাকে আক্রমন করার সময় লোকের থাকলেও আমার তো সেই সময় নেই। আমি তো মগ্ন পায়ে পায়ে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে-যেটা আমার অনিবার্য্য পরিনতি। আমার এই পথচলা অতি আনন্দের, পথের শেষটা আরো আনন্দের। আমি তেমনটাই ভাবি।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:০৮
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন পড়বেন, ফিকাহ জানবেন ও মানবেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:০০



সূরাঃ ৯৬ আলাক, ১ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। পাঠ কর, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
২।সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে
৩। পাঠ কর, তোমার রব মহামহিমাম্বিত
৪। যিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×