somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

কায়েশ খান
প্রোপ্রাইটর- ট্যুরমেট, সদস্য- ট্যুর অপারেটর্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব), সাধারণ সম্পাদক - ট্যুরিষ্ট গাইড এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টিগ্যাব) । তবে, ট্যুর গাইড হিসেবেই নিজের পরিচয় দিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করি।

পরস্পরবিরোধী শিক্ষা ব্যবস্থা ঘৃনা ও বিরোধ ছড়াচ্ছে বৈকি!

২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে শিক্ষাব্যবস্থা বলতে গেলে জটিল। একদিকে রয়েছে সরকারী ব্যবস্থাপনায় ফ্রি প্রাইমারি স্কুল, সরকারী হাই স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়। অন্যদিকে বেসরকারী কিন্ডারগার্টেন, হাই স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়। এদের মধ্যে আবার কেউ বাংলা মিডিয়াম, কেউ ইংলিশ মিডিয়াম। আরেকদিকে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীন আলিয়া মাদ্রাসা, আবার সরকারের নিয়ন্ত্রনবিহীন খারেজি, কওমি, দেওবন্দী মাদ্রাসা। আরো আছে কারিগরী শিক্ষাবোর্ডের অধীন ভোকেশনাল স্কুল। আর বিশেষ সুবিধাভোগী মিলিটারী নিয়ন্ত্রিত ক্যাডেট স্কুল। এদের কারো কারিকুলামের সাথে কারো কোন মিল তো নেই ই বরং ক্ষেত্রবিশেষে স্ববিরোধী।

আমার জন্মস্থান বিক্রমপুরের আড়িয়ল- ৭০ এর দশকে আমাদের সেই ছোট গ্রামে ছিলঃ সরকারী প্রাইমারী স্কুল, হাই স্কুল, ১টি মাদ্রাসা, মসজিদ,মন্দির, ঈদগাহ, বাজার, পোষ্ট অফিস, কবরস্থান, শ্মশান, খেলার মাঠ, রেজিষ্টার্ড সাংষ্কৃতিক ক্লাব ইত্যাদি।

ফলে এই গ্রামটি এবং গ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলুর উপর নির্ভরশীল ছিল আশে পাশের প্রায় আরো ১০/২০টি গ্রাম। নিকটবর্তী গ্রামসমুহে প্রাইমারী স্কুল, মসজিদ থাকলেও হাই স্কুল, ঈদ্গাহ, পোষ্ট অফিস এবং বাজার, ক্লাব ইত্যাদি ছিল না।

যাই হউক, মুল কথায় আসি। আমাদের গ্রামের মাদ্রসাটি ঠিক জমছিল না। যেমন আমরা ৫ ভাই, চাচাত-মামাত-ফুপাত নিয়ে জনা বিশেক পুত্র সন্তান থাকলেও কেউই মাদ্রাসায় পড়িনি। আমাদের অভিভাবকদের অনাগ্রহের কারনেই পড়িনি। পাড়া-প্রতিবেশীদেরও একই অবস্থা। ফলে দুর-দুরান্ত থেকে ছাত্ররা আড়িয়ল মাদ্রাসায় পড়তে আসত। তাও বেশীরভাগ পিতৃ-মাতৃহীন বালকেরা।যেহেতু মাদ্রাসার একটি লিল্লাহ বোর্ডিং ছিল যেখানে বিনামুল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। আশে-পাশের গ্রামের যে দু'একজন ঐ মাদ্রাসায় পড়ত তারা মুলত দুষ্ট প্রকৃতির। বাবা-মায়ের অবাধ্য, হতদরিদ্র, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী, কিংবা ছোটবেলায় কোন বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সন্তানের জন্য মা-বাবার মানত থাকলে সেই ধরনের ছাত্রই কেবল মাদ্রাসায় জুটত। এই অবস্থাটা সারাদেশেই একই রকম ছিল। মেধাবী সন্তানটিকে স্কুলে পাঠিয়ে তুলনামুলক ডাল এবং দুষ্ট প্রকৃতির শিশুদের ঠাই হতো মাদ্রাসায়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ঐ ধরনের ছাত্রদের ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ম্যানেজ বলতে অবৈজ্ঞানিক নিপীড়ন। শারীরিক-মানসিক শাস্তি যে কত বৈচিত্রময় আর নিষ্ঠুর হতে পারে তা ওইসব মাদ্রাসা ছাত্র ছাড়া অন্যদের কল্পনাতেও আসবে না। এইসব অত্যাচারের খবর আমরা এক গ্রামে থেকেও জানতে পারতাম না। কদাচিৎ শাস্তির মাত্রা অতিক্রান্ত হলে দু'একটির কথা বাইরে আসত। এ এক মধ্যযুগীয় জেলখানা বিশেষ। আমরা যখন মাদ্রাসার পাশ দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা একসাথে গল্প করতে করতে স্কুলে যেতাম আর আসতাম তখন বেড়ার ফাক দিয়ে, ওজুর ওসীলায় বা জরুরী প্রয়োজনে বাইরে আসা মনমরা বালকদের দেখতাম একবুক হতাশা নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে। বেশীরভাগের চোখে বেদনা এবং কারো কারো চোখে আমাদের প্রতি ঘৃনাও লক্ষ্য করেছি। ঐ বয়সে ভালভাবে না বুঝলেও আজ বুঝি, অনুভব করি সমাজ, বাবা-মা থেকে বিচ্ছিন্ন এক ঝাক শিশুর অব্যক্ত বেদনা।

বাশের বেড়ার সেই মাদ্রাসা এখন বহুতল ভবন। শিক্ষার্থীতে পরিপূর্ন। সেই সাথে মেয়েদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আলাদা মহিলা মাদ্রাসা। গত ৪০ বছরে দেশের সর্বত্রই ব্যাঙ্গের ছাতার মতই বিভিন্ন আকিদায় বিশ্বাসী মাদ্রসা গজিয়েছে।এদের কোনটারই আদর্শ সেক্যুলার বাংলাদেশ নয় বরং এদের প্রত্যেকের আদর্শিক শিকড় দেশের বাইরের কোন না কোন শক্তি। এখন সারা বাংলাদেশে প্রায় ২ লক্ষ মাদ্রাসা শিক্ষক ৪০ লক্ষ শিক্ষার্থীকে প্রায় একই ব্যবস্থার অধীনে পাঠদান করে চলেছেন। মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পরিচালিত মাদ্রাসায় কিছুটা জাগতিক জ্ঞান বিতরন করা হলেও বেশীরভাগ মাদ্রসা বিশেষ করে কওমী এবং দেওবন্দী মাদ্রাসাগুলুর কারিকুলাম থেকে কোন কিছুর উপরই সরকারের কোন নিয়ন্ত্রন নেই। তারা কি পড়ে আর কি পড়ায় কেউ জানেনা। সমাজের অন্য অংশ যেখানে কিন্ডারগার্টেন, ইংলিশ মিডিয়াম ইত্যাদিতে নিজের সন্তানের ভর্তিচিন্তায় অস্থির সেখানে এই বৃহৎ একটা অংশ কি করছে তা নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই। মাদ্রাসায় পড়া এই অর্ধশিক্ষিত মানুষগুলুকে বছরে এক/দু'বার দাওয়াত খাইয়ে, তাদেরকে ইমাম-মুয়াজ্জিনের চাকরী দিয়ে, দান-ক্ষয়রাতের উপলক্ষ বানিয়ে আমরা নিশ্চিন্ত। কিন্তু তাদের জীবন চলছে কিনা, নির্দিষ্ট বয়সে রুটি-রুজির কি হচ্ছে, সমাজেই বা তারা কি প্রভাব ফেলছে তার কোন হদীস নেই। এদের একটা অংশ খেয়ে না খেয়ে, পারলৌকিক মঙ্গলের নিমিত্তে ধর্মের খেদমতগার হিসেবে নিজেদের মেনে নিলেও বাকীরা বিকল্প ভাবতেই পারেন। এদের প্রতি পরিবার সমাজ-রাষ্ট্রের উদাসীনতা এবং অবহেলার বদলা নিতে এক সময় রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র না হউক রাষ্ট্র ক্ষমতার ভাগ চাওয়ার কিংবা দেশী-বিদেশী তথাকথিত জেহাদীদের প্ররোচনায় যেকোন অপকর্মে লিপ্ত হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক কি? ইতিমধ্যেই আমরা দু'একবার তার নমুনা দেখতে পাইনি কি? আফগানিস্থানের তালেবান আসলে পাকিস্তানের মাদ্রাসায় পড়ুয়া একই শ্রেনীর মানুষ নয় কি?

বিষয়টা আরো গবেষনার দাবী রাখে।স্বল্পপরিসরে বিস্তারিত লেখা গেল না। আমি শুধু এই বৃহৎ একটা যুবশক্তির ব্যপাড়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করতে চাইছি। আমার মুল্যায়ন/প্রেডিকশন সত্যি না হলেই বরং আমি খুশী হব।কিন্তু লক্ষ লক্ষ মাদ্রসাছাত্র যে, কোনভাবেই স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের পছন্দ করে না তা কিন্তু পরিষ্কার। কথাটি উলটো দিক থেকেও বলা যায়। আপনি ক'টা স্কুল ছাত্রকে পাবেন যাদের সাথে মাদ্রাসা ছাত্রের বন্ধুত্ব আছে। নেই। আমরা যে আসলে নিজের ঘরে সম্ভাব্য শত্রু পুষছি সেটা ভাবার সময় এসেছে। জাকাত-ফিতরা, দান ক্ষয়রাত দিয়ে কাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে, তাদের কাছে শেষ বিচারে জাতি কি পেতে পারে সেটা চিন্তা করা জরুরী। সমাজ-রাষ্ট্র কেন নিজ জনগনকে পরস্পরবিরোধী শিক্ষা দিয়ে ভবিষ্যত জেনারেশনকে মুখোমুখি দাড় করাবে সেটাও একটা বড় প্রশ্ন।

আমি মনে করি, বাংলাদেশ যদি আগামী ২০/৩০ বছরের মধ্যে একটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে চায় তাহলে একটি জাতীয় কারিকুলামের মধ্যে প্রচলিত সাধারন স্কুল, মাদ্রাসা এবং কিন্ডারগার্টেন কে একীভুত করা জরুরী। সেই সাথে প্রচলিত সকল ধর্মের মুলনীতিগুলুকে জাতীয় পাঠক্রমের আওতায় আনতে হবে।সবাইকে সবার ধর্ম জানতে হবে কিন্তু নিজ নিজ ধর্ম চর্চ্চায় তা প্রভাব ফেলবে না। বর্তমানে প্রচলিত ভিন্নমুখী এবং পরস্পরবিরোধী শিক্ষায় শিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত পরবর্তী জেনারেশন দিশেহারা হয়ে একে অন্যকে ঘৃনা করতে শুরু করবে, (ইতিমধ্যেই স্কুল আর মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা পরস্পরকে ঘৃনা করতে শুরু করেছে) যার পরিনতি এক রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ। হয়ত সেদিন আপনি-আমি থাকব না কিন্তু এর দায় আমাদের আমলনামাতেই বর্তাবে। অতএব, সাধু সাবধান।
(সংক্ষেপিত)আমি সৌভাগ্যবান এই জন্য যে, আমি যেই গায়ে জন্মেছি সেটা ছিল সত্যিকার অর্থেই ছায়া সুনিবিড়, শান্তির নীড় টাইপের গ্রাম।৮০'র দশকের আগে সেখানে বিদ্যুৎ ছিলনা। কিন্তু যা কিছু ছিল তার নিরীখে আড়িয়ল একটি আদর্শ গ্রাম। মুন্সিগঞ্জ জেলার টংগীবাড়ি থানার আড়িয়ল-বালিগাও ইউনিয়নের ২৮টি গ্রামের একটি আড়িয়ল। কিন্তু আশ্চর্য্যজনক ভাবে আমাদের সেই ছোট গ্রামে ছিলঃ সরকারী প্রাইমারী স্কুল, হাই স্কুল, ১টি মাদ্রাসা, মসজিদ,মন্দির, ঈদগাহ, বাজার, পোষ্ট অফিস, কবরস্থান, শ্মশান, খেলার মাঠ, রেজিষ্টার্ড সাংষ্কৃতিক ক্লাব ইত্যাদি।

ফলে এই গ্রামটি এবং গ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলুর উপর নির্ভরশীল ছিল আশে পাশের প্রায় আরো ১০/২০টি গ্রাম। নিকটবর্তী গ্রামসমুহে প্রাইমারী স্কুল, মসজিদ থাকলেও হাই স্কুল, ঈদ্গাহ, পোষ্ট অফিস এবং বাজার, ক্লাব ইত্যাদি ছিল না।

যাই হউক, মুল কথায় আসি। আমাদের গ্রামের মাদ্রসাটি ঠিক জমছিল না। যেমন আমরা ৫ ভাই, চাচাত-মামাত-ফুপাত নিয়ে জনা বিশেক পুত্র সন্তান থাকলেও কেউই মাদ্রাসায় পড়িনি। আমাদের অভিভাবকদের অনাগ্রহের কারনেই পড়িনি। পাড়া-প্রতিবেশীদেরও একই অবস্থা। ফলে দুর-দুরান্ত থেকে ছাত্ররা আড়িয়ল মাদ্রাসায় পড়তে আসত। তাও বেশীরভাগ পিতৃ-মাতৃহীন বালকেরা।যেহেতু মাদ্রাসার একটি লিল্লাহ বোর্ডিং ছিল যেখানে বিনামুল্যে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। আশে-পাশের গ্রামের যে দু'একজন ঐ মাদ্রাসায় পড়ত তারা মুলত দুষ্ট প্রকৃতির। বাবা-মায়ের অবাধ্য, হতদরিদ্র, শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধী, কিংবা ছোটবেলায় কোন বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া সন্তানের জন্য মা-বাবার মানত থাকলে সেই ধরনের ছাত্রই কেবল মাদ্রাসায় জুটত। এই অবস্থাটা সারাদেশেই একই রকম ছিল। মেধাবী সন্তানটিকে স্কুলে পাঠিয়ে তুলনামুলক ডাল এবং দুষ্ট প্রকৃতির শিশুদের ঠাই হতো মাদ্রাসায়। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ঐ ধরনের ছাত্রদের ম্যানেজ করার ক্ষেত্রে ছিলেন সিদ্ধহস্ত। ম্যানেজ বলতে অবৈজ্ঞানিক নিপীড়ন। শারীরিক-মানসিক শাস্তি যে কত বৈচিত্রময় আর নিষ্ঠুর হতে পারে তা ওইসব মাদ্রাসা ছাত্র ছাড়া অন্যদের কল্পনাতেও আসবে না। এইসব অত্যাচারের খবর আমরা এক গ্রামে থেকেও জানতে পারতাম না। কদাচিৎ শাস্তির মাত্রা অতিক্রান্ত হলে দু'একটির কথা বাইরে আসত। এ এক মধ্যযুগীয় জেলখানা বিশেষ। আমরা যখন মাদ্রাসার পাশ দিয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা একসাথে গল্প করতে করতে স্কুলে যেতাম আর আসতাম তখন বেড়ার ফাক দিয়ে, ওজুর ওসীলায় বা জরুরী প্রয়োজনে বাইরে আসা মনমরা বালকদের দেখতাম একবুক হতাশা নিয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকতে। বেশীরভাগের চোখে বেদনা এবং কারো কারো চোখে আমাদের প্রতি ঘৃনাও লক্ষ্য করেছি। ঐ বয়সে ভালভাবে না বুঝলেও আজ বুঝি, অনুভব করি সমাজ, বাবা-মা থেকে বিচ্ছিন্ন এক ঝাক শিশুর অব্যক্ত বেদনা।

বাশের বেড়ার সেই মাদ্রাসা এখন বহুতল ভবন। শিক্ষার্থীতে পরিপূর্ন। সেই সাথে মেয়েদের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে আলাদা মহিলা মাদ্রাসা। গত ৪০ বছরে দেশের সর্বত্রই ব্যাঙ্গের ছাতার মতই বিভিন্ন আকিদায় বিশ্বাসী মাদ্রসা গজিয়েছে।এদের কোনটারই আদর্শ সেক্যুলার বাংলাদেশ নয় বরং এদের প্রত্যেকের আদর্শিক শিকড় দেশের বাইরের কোন না কোন শক্তি। বর্তমানে সারা বাংলাদেশে প্রায় ২ লক্ষ মাদ্রাসা শিক্ষক ৪০ লক্ষ শিক্ষার্থীকে প্রায় একই ব্যবস্থার অধীনে পাঠদান করে চলেছেন। তাতে এত বছরে সব মিলিয়ে কত লক্ষ হয়েছে আল্লাহ মালুম। মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডের অধীনে পরিচালিত মাদ্রাসায় কিছুটা জাগতিক জ্ঞান বিতরন করা হলেও বেশীরভাগ মাদ্রসা বিশেষ করে কওমী এবং দেওবন্দী মাদ্রাসাগুলুর কারিকুলাম থেকে কোন কিছুর উপরই সরকারের কোন নিয়ন্ত্রন নেই। তারা কি পড়ে আর কি পড়ায় কেউ জানেনা। সমাজের অন্য অংশ যেখানে কিন্ডারগার্টেন, ইংলিশ মিডিয়াম ইত্যাদিতে নিজের সন্তানের ভর্তিচিন্তায় অস্থির সেখানে এই বৃহৎ একটা অংশ কি করছে তা নিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই। মাদ্রাসায় পড়া এই অর্ধশিক্ষিত মানুষগুলুকে বছরে এক/দু'বার দাওয়াত খাইয়ে, তাদেরকে ইমাম-মুয়াজ্জিনের চাকরী দিয়ে, দান-ক্ষয়রাতের উপলক্ষ বানিয়ে আমরা নিশ্চিন্ত। কিন্তু তাদের জীবন চলছে কিনা, নির্দিষ্ট বয়সে রুটি-রুজির কি হচ্ছে, সমাজেই বা তারা কি প্রভাব ফেলছে তার কোন হদীস নেই। এদের একটা অংশ খেয়ে না খেয়ে, পারলৌকিক মঙ্গলের নিমিত্তে ধর্মের খেদমতগার হিসেবে নিজেদের মেনে নিলেও বাকীরা বিকল্প ভাবতেই পারেন। এদের প্রতি পরিবার সমাজ-রাষ্ট্রের উদাসীনতা এবং অবহেলার বদলা নিতে এক সময় রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র না হউক রাষ্ট্র ক্ষমতার ভাগ চাওয়ার কিংবা দেশী-বিদেশী তথাকথিত জেহাদীদের প্ররোচনায় যেকোন অপকর্মে লিপ্ত হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক কি? ইতিমধ্যেই আমরা দু'একবার তার নমুনা দেখতে পাইনি কি? আফগানিস্থানের তালেবান কি আসলে পাকিস্তানের মাদ্রাসায় পড়ুয়া একই শ্রেনীর মানুষ নয় কি?

বিষয়টা আরো গবেষনার দাবী রাখে।স্বল্পপরিসরে বিস্তারিত লেখা গেল না। আমি শুধু এই বৃহৎ একটা যুবশক্তির ব্যপাড়ে সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করতে চাইছি। আমার মুল্যায়ন/প্রেডিকশন সত্যি না হলেই বরং আমি খুশী হব।কিন্তু লক্ষ লক্ষ মাদ্রসাছাত্র যে, কোনভাবেই স্কুল কলেজ পড়ুয়াদের পছন্দ করে না তা কিন্তু পরিষ্কার। কথাটি উলটো দিক থেকেও বলা যায়। আপনি ক'টা স্কুল ছাত্রকে পাবেন যাদের সাথে মাদ্রাসা ছাত্রের বন্ধুত্ব আছে। নেই। আমরা যে আসলে নিজের ঘরে সম্ভাব্য শত্রু পুষছি সেটা ভাবার সময় এসেছে। জাকাত-ফিতরা, দান ক্ষয়রাত দিয়ে কাদের পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে, তাদের কাছে শেষ বিচারে জাতি কি পেতে পারে সেটা চিন্তা করা জরুরী। সমাজ-রাষ্ট্র কেন নিজ জনগনকে পরস্পরবিরোধী শিক্ষা দিয়ে ভবিষ্যত জেনারেশনকে মুখোমুখি দাড় করাবে সেটাই আমার প্রশ্ন।

আমি মনে করি, বাংলাদেশ যদি আগামী ২০/৩০ বছরের মধ্যে একটি ভয়াবহ গৃহযুদ্ধ থেকে বাঁচতে চায় তাহলে একটি জাতীয় কারিকুলামের মধ্যে প্রচলিত সাধারন স্কুল, মাদ্রাসা এবং কিন্ডারগার্টেন কে একীভুত করা জরুরী। সেই সাথে প্রচলিত সকল ধর্মের মুলনীতিগুলুকে জাতীয় পাঠক্রমের আওতায় আনতে হবে।সবাইকে সবার ধর্ম জানতে হবে কিন্তু নিজ নিজ ধর্ম চর্চ্চায় তা প্রভাব ফেলবে না। বর্তমানে প্রচলিত ভিন্নমুখী এবং পরস্পরবিরোধী শিক্ষায় শিক্ষিত বা অর্ধশিক্ষিত পরবর্তী জেনারেশন দিশেহারা হয়ে একে অন্যকে ঘৃনা করতে শুরু করবে, ইতিমধ্যেই স্কুল আর মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীরা পরস্পরকে ঘৃনা করতে শুরু করেছে - যার পরিনতি এক রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ। হয়ত সেদিন আপনি-আমি থাকব না কিন্তু এর দায় আমাদের আমলনামাতেই বর্তাবে। অতএব, সাধু সাবধান।
(সংক্ষেপিত)
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৫৯
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন পড়বেন, ফিকাহ জানবেন ও মানবেন

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:০০



সূরাঃ ৯৬ আলাক, ১ নং থেকে ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। পাঠ কর, তোমার রবের নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন
২।সৃষ্টি করেছেন মানুষকে ‘আলাক’ হতে
৩। পাঠ কর, তোমার রব মহামহিমাম্বিত
৪। যিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মত প্রকাশ মানে সহমত।

লিখেছেন অনুপম বলছি, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১:২৭

আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।

এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্নমর্যাদা!

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৪৩

রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাঁঠালের আমসত্ত্ব

লিখেছেন বিষাদ সময়, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৭

কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৯



এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে ।
...বাকিটুকু পড়ুন

×