ভাঙা ভাঙা কাঁচ, জলের ঝিরঝিরে বিন্দু-
আমরা যাকে ঝর্ণা বলি
সব ভেসে আসে চোখের সীমানায়
ভেসে ওঠে মানুষের করুন অবয়ব
ভাঙা কাঁচের টুকরোয়। যেগুলো
ক্রমশ ছোট হচ্ছে চীড় ধরা কাঁচের টুকরোর মতন।
ঝর্ণার পানিতে ধুয়ে যাচ্ছে সেসব মানব অবয়ব।
ঝাপসা কুয়াশায় দৃষ্টি চলে না
কুয়াশারা ভেসে যায় ঝর্নার জলে
ছোটাছুটি শান্ত হয়ে এলে
ঝিরি হয়ে ছুটে যায় চঞ্চল বালুকার নৃত্যের তালে
নেমে আসে শান্ত ভরাট নদীর বুকে।
হেসে ওঠে আকাশ, মেঘ, পাখি আর
বালুতটে ফুটে থাকা শাদা কাশফুল।
ছবি হয়ে ভেসে ওঠে শান্ত তরঙ্গনিরি আয়নায়।
পূর্ণ হয় ছুটে চলা জলকনা
প্লাবিত হয়ে সার্থকতার ছবির জলে।
অথচ আমরা ছুটছি উজান বেয়ে
ভরাট নদীর বুক চিরে উল্টো স্রোত ধরে
উঠে আসছি ঝিরি পথ বেয়ে
বালুকার খচখচে যেখানে টলোমল আকাশের ছবিটা।
ঝিরি বেয়ে উঠছি সব তাণ্ডবী ঝণায়
উড়ি সবে পাখা মেলে
বায়বীয় মেঘ জমের পাখার বাতাসে।
তারপর, কুয়াশায় ঢেকে যায় সব।
জলকনায় মেঘ দোল খায় হাসে রোদ্দুর
আকাশের শাদা আলো হয় রংধনু।
রংধনুর রংই সার,
ছবি হয় না তাতে।
সাতরং জলে লেগে থাকে
ছবি হয় শুধু মিশলে নদীর বুকে।
আমরা চলেছি উল্টো পথে
সাতরঙা ছবি ফুটে থাকা রঙিন আয়নার মত।
আঘাতে আঘাতে যার রঙগুলো
আলাদা হয়ে যায় বিজারিত কেমিকেলের মত।
পাতলা আর্কটিক বরফের মতন ফাটল বাড়তে থাকে
রংধনুর রংগুলো আলাদা হয়ে যায় কালার ব্যান্ডের ভাজে
এরপর ক্রমশ ফেটে চলে কাঁচের মাঠ
ব্যান্ডগুলো ভেঙে যায় ফেটে ওঠা চৈত্রের মাঠের মত।
এখনো ভাঙছে আমাদের রঙিন কাঁচ
মুছে যাচ্ছে ছবি আর ছুটছে মানুষ
আমরা ছুটছি, গন্তব্য কোথায়?
লাখো টুকরো কাঁচে আর ছবি হয় না ।
এরপর ফিরে পাবো কারখানা রুপ
যেখানে তাপের তাণ্ডবে বালি হয়েছে কাঁচ।
ইয়ার্ডে পরে থাকা বালিতে রঙধনু ফোটে না
ধূ ধূ বালিতে শধু মরিচিকা ভাসে।