মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট একমাত্র মনোনীত দ্বীন হচ্ছে পবিত্র ইসলাম।
বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ মানুষের দ্বীন হচ্ছে- ‘পবিত্র ইসলাম’।
তাই সংবিধানের ২ নম্বর ধারায় বর্ণিত রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র ইসলাম। সে প্রেক্ষিতে বিজাতীয় সংস্কৃতি পহেলা বৈশাখ পালনসহ কোনো প্রকার শরীয়তবিরোধী অর্থাৎ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধী কোনো কাজ গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।
অতএব, ৯৭ ভাগ মুসলমানগণ উনাদের দেশের সরকারের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে-
সরকারিভাবে পহেলা বৈশাখসহ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধী সর্বপ্রকার কাজ বন্ধ করে দেয়া এবং সরকারিভাবে পহেলা বৈশাখসহ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধী সর্বপ্রকার কাজ থেকে মুসলমানগণ উনাদেরকে বিরত রাখা।
, পবিত্র ইসলাম হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক উনার তরফ থেকে উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র ওহী মুবারক উনার মাধ্যমে নাযিলকৃত, একমাত্র পরিপূর্ণ, সন্তুষ্টিপ্রাপ্ত, নিয়ামতপূর্ণ, অপরিবর্তনীয় ও মনোনীত পবিত্র দ্বীন; যা ক্বিয়ামত পর্যন্ত বলবত থাকবে। যে প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি “পবিত্র সূরা আলে ইমরান শরীফ” উনার ১৯ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “নিশ্চয়ই পবিত্র ইসলামই মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে একমাত্র পবিত্র দ্বীন।”
মহান আল্লাহ পাক তিনি “পবিত্র সূরা মায়িদা শরীফ” উনার ৩ নম্বর পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “আজ আমি তোমাদের পবিত্র দ্বীন উনাকে (দ্বীন ইসলাম উনাকে) কামিল বা পরিপূর্ণ করে দিলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত তামাম বা পূর্ণ করে দিলাম এবং আমি তোমাদের পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতি সন্তুষ্ট রইলাম।”
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখ করা হয়েছে, “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা মুবারক করেন যে, একদিন হযরত উমর ইবনুল খত্তাব আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমরা ইহুদীদের থেকে তাদের কিছু ধর্মীয় কথা শুনে থাকি, যাতে আমরা আশ্চর্যবোধ করি, এর কিছু কী আমরা লিখে রাখবো? নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আপনারাও কি দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছন? যেরকম ইহুদী-নাছারারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে? অবশ্যই আমি আপনাদের নিকট পরিপূর্ণ, উজ্জ্বল ও পরিষ্কার পবিত্র দ্বীন নিয়ে এসেছি। হযরত মুসা আলাইহিস সালাম তিনিও যদি দুনিয়ায় থাকতেন, তাহলে উনাকেও আমার অনুসরণ করতে হতো।” (মুসনাদে আহমদ শরীফ, বাইহাক্বী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, আশয়াতুল লুময়াত শরীফ, লুময়াত শরীফ, শরহুত ত্বীবী শরীফ, তা’লীকুছ ছবীহ শরীফ ইত্যাদি)
পহেলা বৈশাখ পালনের ইতিহাস পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার সাথে সম্পৃক্ত নয়। পহেলা বৈশাখ পালন করা একদিক থেকে মুসলমানগণ উনাদের আমলের অন্তর্ভুক্ত নয়। দ্বিতীয়ত, বাংলা সন বা পহেলা বৈশাখ বাঙালিদের দ্বারা প্রবর্তিতও নয়। উল্লেখ্য, বাদশাহ আকবর ফসলী সন হিসেবে এর প্রবর্তন করে। আর বাদশাহ আকবর ছিল মঙ্গলীয় এবং ফারসী ভাষী। তাহলে এটা কি করে বাঙালি সংস্কৃতি হতে পারে। কাজেই সাধারণভাবেই বাঙালিদের জন্য পহেলা বৈশাখ পালন করা অনুসরণীয় নয়, আর মুসলমানগণ উনাদের জন্য পহেলা বৈশাখ পালন করার তো প্রশ্নই উঠে না। বরং পালন করা বা পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে অনুষ্ঠান করা কাট্টা হারাম যা কুফুরী গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। কারণ মুসলমানগণ উনাদের জন্য বিজাতীয়দের অনুসরণ করা হারাম; যা পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখবে তার হাশর-নশর তার সাথে হবে।” নাউযুবিল্লাহ!
সংবিধানের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রভাষা বাংলা।’ সে প্রেক্ষিতে দেশে ইংরেজি ভাষাসহ বিভিন্ন উপজাতীয় ভাষার ঊর্ধ্বে যেমন রাষ্ট্রভাষা বাংলার মর্যাদা ও প্রাধান্য, তেমনি সংবিধানের ২ নম্বর ধারায় বর্ণিত রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র ইসলাম। সে প্রেক্ষিতে অন্যান্য ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীর উপরে পবিত্র দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানগণ উনাদের মর্যাদা ও প্রাধান্য স্বীকৃত। অতএব, পবিত্র দ্বীন ইসলাম ও মুসলমানগণ উনাদের প্রতি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাও অনেক বেশি হওয়া উচিত। যা মূলত ৯৭% মুসলমান উনাদের হক্ব এবং প্রচলিত সংবিধানেরই বক্তব্য।
মূলকথা হলো- সংবিধানের ২ নম্বর ধারায় বর্ণিত রাষ্ট্রদ্বীন পবিত্র ইসলাম হওয়ার কারণে বিজাতীয় সংস্কৃতি পহেলা বৈশাখসহ সর্বপ্রকার শরীয়তবিরোধী কাজ অর্থাৎ পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার বিরোধী কোনো কাজ কখনোই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। ৯৭ ভাগ মুসলমানগণ উনাদের দেশের সরকারের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য হচ্ছে- সরকারিভাবে পহেলা বৈশাখ পালনসহ সর্বপ্রকার ইসলামবিরোধী কাজ বন্ধ করে দেয়া এবং সরকারিভাবে পহেলা বৈশাখসহ পবিত্র দ্বীন ইসলাম বিরোধী সর্বপ্রকার কাজ থেকে মুসলমানগণ উনাদের বিরত রাখা অর্থাৎ মুসলমানগণ উনাদেরকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম পালনে বা পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার উপর ইস্তিক্বামত থাকার ব্যাপারে সর্বোতভাবে সহযোগিতা করা।