পাকিস্তানের লাহোর শহরে ১৯৪১ ঈসায়ী সনের ২৬ আগস্ট মাওলানা আবুল আলা মওদুদীর হাতে জামাতের প্রতিষ্ঠা। ১৯৪৭ ঈসায়ী সনে মুসলমানদের জন্য একটি আলাদা রাষ্ট্র পাকিস্তান সৃষ্টির পক্ষে ছিল মুসলমানরা। কিন্তু মওদুদীবাদী জামাত ছিল মুসলিম অধ্যুষিত পাকিস্তান গঠনের ঘোর বিরোধী। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ১৯৭১ সালেও ঘটিয়েছে বর্বরতা। জন্মের শুরু থেকেই মওদুদীবাদী জামাত চলছে উল্টো স্রোতে।
(৩) ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা সংগ্রাম :
১৯৭০ ঈসায়ী সনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলো। পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর না করে জুলফিকার আলী ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টিকে ক্ষমতা দেয়ার পাঁয়তারা করলো। বঙ্গবন্ধু ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বাংলার মানুষের সামনে গর্জে উঠলেন- ‘এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। সারা পূর্ববাংলার ৭ কোটি মানুষ স্বাধীনতা আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়লো।
একজন মানুষ এই বাংলাকে কি পরিমাণ ভালোবাসে নিজের পরিণতি নিশ্চিত মৃত্যুদ- জেনেও বাংলার কোটি কোটি জনগণকে স্বাধীনতার উল্লাসে জাগিয়ে দিলেন। মাত্র ১১ মিনিটের একটা বক্তৃতা মনে হয় আমাদের ইতিহাসের অনন্য বক্তৃতা। পশ্চিম পাকিস্তানিরা ২৫শে মার্চ গণহত্যা শুরু করলো ঢাকা শহর আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। পরের দিন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর অনুপুস্থিতিতে উনার পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা সম্প্রচারিত হয়। আর এই স্বাধীনতা সংগ্রামে ধর্মব্যবসায়ী জামাতীরাও মেতে উঠলো হত্যার উল্লাসে, যেন ১৯৭০ ঈসায়ী সনের নির্বাচনে জামাতকে প্রত্যাখ্যানের বদলা।