মহামান্য ঈশ্বর
আমি আপনাকে বিশ্বাস করি না
আপনি আমাকে ঘৃণা করবেন?
অভিশাপ দেবেন আমাকে?
কে আপনি?
আপনি জানেন আমার প্রেমিকার নাম?
এক শীতে আমার বুকে মরে গিয়েছিলো সে
তাঁর কবর আমি খুঁজে পাইনি
আপনি আবার জন্ম দেবেন তাঁকে উনিশ বছর বয়সে?
তাঁর দুটি চোখ ছিলো নরম নরম নরম পাখির পালক
তাঁর উনিশ বছর বয়সি স্তন সাদা কোমল বরফের পাহাড়
তাঁর হৃদয় বোদলেয়ারের কবিতা
তাঁর শরীর সুইসাইড সং Gloomy Sunday
তাঁর সাতটি তিল আশ্চর্য পবিত্র
আমি মরে যাবো প্রভু
আপনি কি আল্লাহ্?
ফিরিয়ে দিন আমার প্রেমিকাকে
আপনি কি যীশু?
ফিরিয়ে দিন আমার প্রেমিকাকে
আপনি কি ভগবান?
ফিরিয়ে দিন আমার প্রেমিকাকে
মহামান্য ধর্মাবতার আপনি কি চিনবেন তাঁকে?
তাঁর নাম ছিলো পৃথিবী
তাঁর নাম ছিলো দেবী
তাঁর দুটি চোখ নরম নরম দোলন চাঁপা
বেশিক্ষণ তাকাবেন না, প্রেমে পড়ে যাবেন
বিশ্বাস করুন প্রভু আমি তাঁকে ঘৃণা করি
বিশ্বাস করুন প্রভু আমি তাঁকে কোনদিন দেখিনি
আমরা চিনি না আমাদের চোখ
সে মরে গেছে যে রাতে— আমার চোখ দেখুন
সে রাতে আমি একটি ট্রেনের স্বপ্ন দেখছিলাম
কমলাপুর থেকে সে ট্রেন স্বর্গে যায়
৩৯৫ টাকা টিকেট
আমার এত টাকা নেই
আমি কি স্বর্গে যাবো না?
যদিও প্রভু বিশ্বাস করুন স্বর্গে আমার বিশ্বাস ছিলো না
আমার প্রেমিকার ছিলো; তাই সে মরে গেলো উনিশ বছর বয়সে
আপনি তাঁর প্রেমে পড়েছিলেন?
আপনি তাঁকে চুমু খেয়েছিলেন?
নইলে এত সুন্দর একটি মেয়ে
সমুদ্রকে বিদায় না বলেই মরে যায়!
আপনি দেখেছিলেন তাঁর আশ্চর্য সাতটি তিল?
মহামান্য ঈশ্বর আপনি তাঁকে ফিরিয়ে দিন
কবিতার শপথ আমি তাঁকে ভালোবাসব না
শুধু একবার দেখে
তাঁর চোখে আমার চোখ কতটা উজ্জ্বল হয়ে ওঠে
দেখে একবার
আমি মরে যাবো
মরে যাবো প্রভু
হে মহামান্য পৃথিবী
আমি তোমার ঘুমন্ত শিশু— আমি জেগে উঠছি
আমার প্রেমে কোনো পাপ ছিলো না
হে মহামান্য নদী
আমি কি একা ভেসে যাবো?
হে মহামান্য প্রেম
তোকে না পেয়ে
তাঁকে না দেখে
আমি মরে যাচ্ছি
আহ! কী শান্তি
হে মহামান্য জুপিটার
আমি কি সিসিফাস?
আমি তো কাউকে ঘুম হতে ডেকে তুলে বলিনি—
'চলুন, নেমে পড়ি, ট্রেন থেমে গেছে'
আসলে ট্রেন তো চিরকাল থেমে থাকে
মানুষ উড়ে যায়
মৃত্যু উড়ে যায়
নির্জন এক পথে তাঁদের দ্যাখা হয়
আলিঙ্গন ক’রে উড়ে চলে
(আংশিক)
(এই শহরে রাজহাঁস নিষিদ্ধ/ বইমেলা-২০১৫)