somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিধাতাও আর সইল না

২৭ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শেষ পর্যন্ত বিধাতাও সইল না। আমার কপালটাই যেন কেমন! বিধাতা আমার কপালের উপর কি বোঝা চাপিয়েছেন কে জানি, আমাকে কেউ বইতে পারে না। আমিতো নই ই। অল্প একটু মদ্য পানের কারনে যে বিধাতাও মুখ ফিরেয়ে নেবেন কে জানত।
আমি হইলাম চশমা স্ববর্ষ মানুষ। চশমা ব্যাতিত সবকিছুই একের অধিক দেখি। হঠাৎ পুরানো কলেজের বন্ধুর ফোন, না করাটা কঠিন কেননা কত বহুবার যে ওরে মিথ্যা আশ্বাস দিছি তার হিসাব নাই। তাই এই ভর দুপুরেও কান্ত দেহটা ছুটাছুটি করল আজিজ সুপার মার্কটের এগলি ওগলি। যদিও শেষটাতে বৃষ্টি ছিল।
আমার কলেজের বন্ধু, নাহিদ চৌধুরী – চৌধুরী বংশের দুইমাএ আদরের ছোট ছেলে। চোখ মেললেই চকচকে ভবিষৎ দেখা যায়, তবুও মানতে নারাজ। সব কিছুই থাকার পরেও কিছু একটা না থাকার বেদনায় আর্তনাদ করে কেবল। পি.এল(পাছায় লাথি নয়) প্রিপারেশন লিভের আগে নিজেকে সুসজ্জিত করতে চৌধুরীর সুদুর টাঙ্গাইল হইতে সোজা শাহবাগ আগমন। সঙ্গে অবশ্য এক ভাগ্নে নিয়ে এসেছিল(নামটা মনে করতে পারছিনা)কিছুদিন পূর্বে তাহার বিবাহ হইয়াছে শুনিয়া নিজের উপর বেশ বিরক্ত হলাম,আর অবশ্যই চৌধুরীর উপরও। যদিও ওর সাথে বের হয়ে আমার বহু আকাঙ্খিত ক্যামেরাটির কমপ্যাক ফ্ল্যাশ কার্ডটা শেষ পর্যন্ত কেনা হল আজ।
আজিজ সুপার মার্কেটের তিনতলার দুই বিডিং এর সংযোগস্থলটা মানে ছোট্ট এক টুকরো সিঁড়িঁ। সব সংযুক্ততাতেই কেন জানি বেশী বাতাস বয়, আমার খুব পছন্দের জায়গা। আজ অবশ্য বাতাস ছিল না, জায়গাটাতেও বসতে পারিনি তবে বিস্বাদ মুখে একটা সিগারেট শেষ করেছি। এতে কোন বাধা ছিলনা। বিগত কিছুদিন রাতদিনে পাল্টাপাল্টির কারনে পেটে তেমন কিছুই পড়েনি। সিগারেটের ধোঁয়ায় বমি বমি আসছিল। তবে বৃষ্টিতে পুরোপুরি গোছলের অল্প একটু আগে ৪১ টাকা(না পানি খাই নাই) খরচ কইরা নীলক্ষেত হইতে একপ্লেট কাউয়া তেহারী খাইছি। :D
এর মাঝেই মনিরের ফোন – টি.এস.সি তে জরুরি তলব। আমিও চৌধুরীর কাছ হইতে আধঘন্টার সময় নিয়ে গেলাম মনিরের সাথে দেখা করতে ঠিক ঢাকা কলেজের উল্টা পাশে গ্যালাক্সির নিচে। গিয়াই মনে হইল অল্প একটু মদ্য পানে আর কিবা হবে। আজ অনেকদিন হল খাই না। বেশ কয়েক পেগ মদ খেয়ে নিজেকে চাঙ্গা মনে হতেই বেরিয়ে পড়লাম, আর বেরতেই বৃষ্টিরা যেন আকাশ থেকে আমার উপর ঝরে পড়তে শুরু করল। ভিজে যাওয়া বৃষ্টিতে ছুটতে ছুটতে একেবারে গাউছিয়া। রাইত বাজে পৌনে নয়টা, বেশরম ম্যাইয়াগুলার ধাক্কায় আমার মালের নেশা কাটার উপক্রম। একবার ভাবলাম হাত দুটো প্রসারিত করে হাঁটি কিছুক্ষন। সব ছেড়েছুড়ে একলাফে সড়কে নেমে হাঁটতে লাগলাম। কেবল একা বৃষ্টিকে আমার সঙ্গে দিয়ে সবাই চলে গেছে।
ভিজে কাক হয়ে চিটিং সার্ভিসের লাইনে প্রায় চল্লিশটা মিনিট দাঁড়ানোর পর যখন বাস এল। ভদ্রতার খাতিরে হোক আর মালের নেশায় হোক একেওকে সাইড দিতে দিতে নিজেই জানি কখন বাদ পরে গেলাম। আর বাস আসবে না। হন্টনই একমাএ সম্বল আমার। ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে,তবে একলা চলরে’ গুনগুন করতে করতে সামনের দিকে পা বাড়িয়ে চোখ মেলতেই কিসের যেন অভাব বোধ হল। চশমাটা কই? এদিক সেদিক,নর্দমায়,রাস্তায় কোথাও খুঁজে না পেয়ে শেষে অদেখা অন্ধকারের দিকে পা বাড়ালাম। আজ বুঝলাম চশমা ছাড়া আমাকে নিরদ্ধিধায় কানা বলা যায়। বেশ কয়বার হোঁচট খেয়ে আমার শখের চটিটা ফালাফালা। এবার শুরু হল খালি পায়ে অন্ধের মত বৃষ্টিতে হাঁটা।
নগ্ন পায়ে বৃষ্টিরা ধুঁয়ে যেতেই মনে হল – ‘বিধাতাও বুঝি আর সইল না’। কানার কাছ থেকে চশমা কেড়ে নিলেন, চটিখানা ছিঁড়ে গেল, শেষসম্বল ম্যানিব্যাগের ৬৫ টাকা আর খুচরো ২-৩ টা ভাংক্তি পয়সা যা ছিল তাও গেল। অল্প একটু মদই তো খেয়েছিলাম,এই কি আমার অপরাধ! ঈশ্বর আমাতে ক্ষমা দাও।
রবীন্দ্রনাথের কথায় “বিধাতা তোমাদের হাতে ঠকাবার যে-সব উপায় দিয়েছেন তাতে মধু দিয়েছেন ঢেলে”। বিধাতার পুস্তকে যা সকল হতে দুরে থাকার নির্দেশ আছে তার সবগুলোই যেন মিষ্টি মধুর আবরনে ঢাকা। মধু থাকলে তো মৌমাছি সুধা পান করবেই, এতে মৌমাছির কোন দোষ থাকার কথা নয়। তবে কেন এই অজ্ঞাতব্যথা আমার মানবহৃদয়ে। :(
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১০ রাত ২:৫৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×