আমাকে মনে পড়ে!
একুশ বসন্ত আগে করুনাময়ী বালিকা বিদ্যালয়ের সামনে
রংচটা জিন্স আর কালো টি শার্ট,মাথায় উস্কু খুস্কু চুল,ক্যাবলা কান্তের মত
রোজ তোমার ছুটির সময় দাড়িয়ে থেকে পৃথিবীকে হারিয়ে ফেলতাম ।
অথবা প্রতিদিন বিকেলে বাইসাইকেল নিয়ে
হারু বাবুর মোড় পেরিয়ে
তোমাদের বাড়ীর সামন দিয়ে চলে যেতাম অন্য একটা গ্রহে।
তোমার বান্ধবীরা আমাকে দেখে হাসাহাসি করত
তুমি সেটা উপভোগ করতে নাকি বিরক্ত হয়ে আমার চোখে নীল পদ্ম খুঁজতে!
আমি বুঝতে পারতাম না,তবে তোমার চোখে দিনে দিনে আমি পুরুষ হয়ে উঠেছিলাম।
তেরো ফেব্রুয়ারী তোমার বান্ধবী
সুমি আমাকে বলেছিল'তোমার নাকি পর দিন চৌদ্দটা গোলাপের দরকার"।
বিশ্বাস কর,বিশ্ব সংসার তন্ন,তন্ন করে নয়
রাতের আঁধারে রায় বাবুদের পোড়াভিটার অন্দর বাগানে টুকে
ভীমরুলের কামড় খেয়ে ছোট বড় মিলিয়ে
বারোটি গোলাপ এনে দিয়েছিলাম তোমার হাতে।
সেই গোলাপ তুমি তুলে দিয়েছিলে চৌধুরীদের ছোট ছেলে
তমালের হাতে!
যদিও আমি জানতাম আমি কোন মতেই তোমার যোগ্য নই
রফিক দের বাড়ীর লজিং মাষ্টারের কাছ থেকে
একটা চিঠি লিখে নিয়ে ছিলাম
সেই চিঠির পঁচাশিটা শব্দের বাইশটা বানান ভুল ছিল
বলে তুমি আমায় অপমান করেছিলে
কিন্তুু আমার ভালোবাসার ব্যাকারণে কোন ভুল ছিল না।
তুমি তো জানো আমি পাঠ্য বইয়ের চাইতে তোমাকে বেশী পড়েছি
তুমি স্কুল পেরিয়ে কলেজ চলে গেল।
আর আমি
হারু বাবুর মোড়ে হেলায়,হেলায় কাটিয়ে দিলাম একটা জীবন।
তার পর একদিন তুমি তমালের হাত ধরে হাওয়াই জাহাজে চেপে
চলে গেল তুষার পাতের দেশে।
আমি এখন দিন রাত শুড়ি খানায় পড়ে থাকি
আচ্ছা সেই চিঠিটার পঁচাশিটা শব্দের যদি বাইশটা বানান ভুল না হতো।
অথবা বারোটি গোলাপ যদি আমার হাতে তুলে দিতে!
তবে আমার আকাশেও কি উড়ে যেত একটি হাওয়াই জাহাজ!
অথবা আমার স্বপ্নগুলো ছুয়ে যেত মেঘের পালকে!
যদি কখনও সেই তুষার পাতের দেশে আমাকে মনে পড়ে
একটি গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে দিও তোমার বারোয়ারি আকাশে
আমি সেই গোলাপের সুবাস নিয়ে চলে যাব আমার আটপৌরের জীবনে!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৮