বহু দিন পর বিষন্ন মনে ফিরে এলাম
হিসেব রাখিনি এই শহরে
কি পেয়েছিলাম কি হারালাম।
রাস্তাঘাট দোকান পাট বাড়ীঘর সব
যেন অচেনা
জন্মভূমি অভিমান করে আজ আমার নিকট
হয়েছ অজানা।
রাস্তাটা ছিল ইট বিছানে সেটা
এখন পিচডালা
সিনেমা হলটা কই?
চিনতে পারছি না বয়স বেড়েছে
একি ভীষণ জ্বালা।
আবুল মিয়া ব্লাকে সিনেমার টিকেট
বিক্রেতা
সে এখন কেমন আছে?
আমি ছিলাম যার প্রতি রবিবারের
বিশ্বস্ত ক্রেতা।
ষ্টেশন চত্বরে পেলাম না কোন
পরিচিত জন
অথচ এককালে লাল পতাকাওয়ালারা ছিল আমার
সবচেয়ে বড় স্বজন।
কমরেড আজিজের বাড়ী পেরিয়ে এলাম
গোরস্থানে
সামনে দোতালা সরকার বাড়ী
আমি এক দিন বাড়ী ছেড়েছিলাম যাকে হারানোর
অভিমানে!
তার বারান্দায় ঝুলছে একটা নীল রংয়ের শাড়ী।
রিকশাওয়ালা ধীরে চলে
মুখ ফিরিয়ে আমায় বলে।
"কোথায় যাবেন বলি"
বললেম"যেদিকে ইচ্ছে চলি"।
বাড়ীতে যাবো মিয়া বাড়ীর ছেলে
আমি
মুখ ফিরিয়ে তাকিয়ে দেখে সেই কি
আপনি!
ঐ বাড়ীর এক ছেলে ঘর ছাড়া হয়েছে
এক যুগ ধরে।
রিকসাওয়ালা বলে তবে এলেন এত
দিন পরে।
রিকশার পিছন থেকে একটি বালিকার
ডাক শুনে
আমার কানে বাজলো সুর শুন্য
বাঁশী বিনে।
আজ এত বছর পর আমি থমকে
যাই
রিকসাওয়ালারে বলি ভাই একটু
দাড়াই।
বালিকারে কাছে ডাকি "শোন মা মনি"
এমন মধুর কন্ঠ আমি কতদিন শুনিনী।
কখনও তোমায় দেখিনি আমি
জানিনা বাছা কে তুমি?
তবে হলফ করে বলতে পারি কে
তোমার জননী
বালিকা তখন অবাক চোখে আমার দিকে চায়
তবে কে আপনি?
আমি বললেম যে তোমার মা মণি
আমি যে তারে এতটুকু থেকে চিনি!
এখন কোথায় আছে তোমার গর্ভ ধারিনী
আমি কত দিন তারে একটি বার দেখিনি।
বালিকা বলে বলতে হবে আপনি
আমার কে?
জানি না আমি,জানে যে তোমায়
জন্ম দিয়েছে সে।
বালিকা তখন ছলছল চোখে ডাকে আমায় আসেন
আমাদের ঘরে
ফেরার সময় ভাবি এই শহরে কি কেউ ডেকছিল আমায়
এমন আপন করে!
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৫