দীর্ঘদিন পর সেদিন তোমাদের বাড়ী এলাম। একটু বিকেল হয়ে এলো বুঝি। ঘরে তুমি একা। আন্টি পাশের বাড়ী গেছেন কোন্ এক অসুস্থ আত্মীয়ার খোঁজ নিতে। তুমি হাস্যোজ্বল মুখে কুশল বিনিময় করে আমাদের আপ্যায়নের আয়োজনে ভিতর রুমে গেলে।
আপ্যায়নে নতুন কিছুর কিইবা দরকার? তোমার তারা ঝিলমিল হরিনি চোখের মিষ্টি চাহনি, গোলাপী ঠোটের ঝরনার মত খিলখিল মন ভোলানো হাসিতেই আমার আপ্যায়নতো হয়েই যায়। আজ তোমায় যেন নতুন রুপে দেখছি। আধপুরনো লাল - সবুজ সেলোয়ার কামিজে কোন সাজুগুজুহীন খোলা চুলে তোমায় বেশ লাগছিল। ঠিক যেন একটা পরী।
আমি যেখানটায় বসেছিলাম, সেখান থেকে তোমাদের রান্নাঘরটা ঠিক দেখা যায়। উড়নাটা কাঁধের উপর করে বুকের উপর দিয়ে কোনাকুনি করে, কোমরে পেছিয়ে কিছু একটা করার চেষ্ঠায় তোমার অস্থির পায়চারী আমায় ভাবিয়ে তুল্লো। পেয়াঁজ মরিচ কাটাকুটির পর বাটিতে কি যেন মাখতে ব্যস্থ। কিন্তু তোমার মেঘ কালো চুলের কয়েকটা দুষ্টু চুল কপাল বেয়ে মুখের উপর এসে তোমায় আদর করার অপচেষ্ঠায় রত। ময়লা হাতে অপরাগতায় তুমি হাতের উল্টো পিঠে সেটা বার বার সরিয়ে দেয়ার বৃথা চেষ্ঠা করেই যাচ্ছ। এদিকে আবার আরেক দুষ্টু দু’ফোটা ঘাম তোমার কপাল হয়ে টমেটো গাল বেয়ে ঠোটের কোণে এসে ঠেকছে। আর কোন জায়গা পেলনা হতচ্ছরা? মনে মনে ভাবি ইস যদি তোমার ওই মেঘ কালো চুল হতাম, তাহলে তোমার কপাল হয়ে তোমার তুলতুলে নরম গালটি ছুয়ে দিতাম। আবার ভাবি না, যদি হতে পারতাম ওই দু ফোটা ঘাম, তাহলে তোমার তুলতুলে নরম গাল বেয়ে ছুয়ে দিতে পারতাম তোমার ওই গোলাপী ঠোটখানা । ইচ্ছে করছিল চেয়েই থাকি ওই মায়া কাড়া দৃশ্য।
কিন্তু তোমার কষ্ট দেখে আর বসে থাকা হলোনা আমার। আমার সাথীদের একটু আসছি বলে উঠে তোমার রুমে গিয়ে এদিক ওদিক খোঁজে একটা ক্লিপ হাতে নিয়ে সোজা গিয়ে তোমার পাশে বসলাম। তুমি ঘর্মাক্ত মুখে কষ্টের ভেতরও আমার দিকে চেয়ে সেই মন ভোলানো খিলখিল হেসে বল্লে ”আল্লাহহ তুমি ময়লার ভিতর এখানে ?” । আমি চেয়েই রইলাম। তুমি লজ্বাবনত মুখে বল্লে, কি দেখো এতো? সংবিত ফিরে পেয়ে বলি, একটু আমার দিক হয়ে চোখ দুটি বন্ধ করেতো। কেন বলে আমার দিখে ফিরে চোখ দুটি বন্ধ করলে। আমি আলতো করে তোমায় বিরক্ত করা চুলগুলোকে মাথার উপর নিয়ে ক্লিপ দিয়ে আটকে বন্ধি করে দিলাম। মনে মনে বকে দিলাম বেটা বেয়াদপ, আর বিরক্ত করবিনা। পাঞ্জাবীর কোনা দিয়ে তোমার মুখের উপর হয়ে ঠোটের কোনে এসে পড়া সেই দুষ্টু ঘাম গুলোকে আলতো করে মুছে দিলাম । তাকেও দিলাম আচ্ছা করে বকে মনে মনে ”তোমার সাহসতো কম না, আমার প্রিয়ার ঠোট ছুয়েছো?” তোমায় ভীষণ মায়া লাগছিল। তোমার কপালে একটা আদর দেবো বলে কাছে যেতেই তুমি লাজুক মুচকি হেসে মুখটি ফেরালে।
মুখটি ফেরালে কেন? কেন কেন কেন?
মাঝ রাতে আমার চিতকারে বউ রেগেমেগে উঠে বলে, কি হলো, কাল দেখলাম মাঝ রাতে চুম্মা চুম্মা বলে চেচাচ্ছো। আজ আবার কেন কেন বলে চিতকার করছো কেন? শান্তিতে একটু ঘুমাতেও দেবেনা? তোমার হয়েছেটা কি ? ঘুমাও, উফ অসহ্য।
ডাইনী বউ চাইনা