দাঁড়িয়ে আছি নীল নদী আর
ধান বোনা সবুজ জমিনের মাঝখানটাতে,
ধবধবে দুধ-সাদা পাঞ্জাবী-পাজামা আর চাদর জড়ানো আমা্র,
বোধয় তাকিয়ে আছি আকাশের দিকে।
পাঞ্জাবীর বাম কোণ্ আলতো করে ধরে আছে ছোট্ট বালক।
আমার ছেলে। এক তাল কাদা-মাটি।
ওর দিকে না তাকিয়েও বুঝতে পা্রি তাকিয়ে আছে পানির দিকে।
দুজনের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে হলেও যেন
দুই আত্না, আত্নার দিকে চেয়ে আছে রক্তিম তন্তুর সংযোগে।
কোন কথা নেই দুজনের মুখে অনেকক্ষন
তবু, কথা হয় আত্নায় আত্নায় আলোক রশ্মির মতো-অদৃশ্য শ্রবানাতীত।
সারাদিনে তার সাথে আমার দেখাই হয় খুব কম।
যেটুকু চোখা-চোখি, ওটুকুতেই অনেক কিছু -
মুখে যেটুকু বলি যেন- সেটুকুই তার বেদবাক্য।
ওর ভাবনায় আমি ওকে স্বনির্ভর হতে শেখাতে চাই,
ওকে পৃথিবীতে এনেছি বলে আমার অতৃপ্ত বাসনার সফলমূর্তি বানাতে চাই না কখনোও,
আমি কিছু হতে পারিনি বলে কখনই ওকে বলবো না
" বাবা তুই হতে পারবি না"?
ওর আত্নার ঠিকাদার ও যে নিজেই
আমি চাই নিজের আত্নাকে নিজে চিনে নিক অতি সত্বর।
আমি চাই- ও হয়ে উঠুক স্বতন্ত্র একক স্বত্বা -যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব।
বুঝে নিক জীবনের মানে,
বুঝে নিক কেন পৃথিবীতে আসা, কেন বেঁচে থাকা
বেঁচে সে থাকার স্বার্থকতা।
আমি শুধু পথ প্রদর্শক আর কখনোবা
পিছলে গেলে হাতের কাছের কোন অবলম্বন ( কখনো পর্যাপ্ত কখনো অপর্যাপ্ত)
আমার আশা- আকাঙ্ক্ষার চাদরে বন্দী হতে দেবো না ওর পথ,
ওকে বলবো না- " কেন এত কষ্ট করে মানুষ করলাম"।
আমি চাই না কোন কিছু চাপিয়ে দিতে - একান্ত স্বার্থপরের মতো
বাবা হবার অধিকার নিয়ে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৩২