আসামে বাংলা ভাষীদের নিয়ে সেখানকার অধিবাসীরা সন্তুষ্ট নয়। এটা কল্পনা করতে কষ্ট হয় না, আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামেও বাংগালিদের সেটেলার বলা হয় এবং সেখানেও খুব একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে বলে মনে হয়না। মোদি সাহেবের গুজরাটের পারফর্মেন্সের পরে এখন তার সম্ভাব্য সরকার গঠনের পরে যেটা হবে বলে আন্দাজ করছি, তা হচ্ছে, আসামের বাংলাভাষী মুসলমানদের উপর খড়গ নেমে আসবে।
আসামে এর আগেও বাংলাভাষী মুসলমানদের উপর গণহত্যা চালানো হয়েছে। এখন মোদী সাহেব অবৈধ (!) বাংলাদেশী অনুপ্রবেশকারী দূর করার জন্য সেখানে একটা গণহত্যা চালালেই সেখানকার অধিবাসীরা জান বাঁচাতে বাংলাদেশের দিকে পালানোর চেষ্টা করবে। আগে দেখেছি, চেতনাধারীরা লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ নিতে গিয়ে রোহিঙ্গাদের প্রতি বিন্দুমাত্র সমবেদনা প্রকাশ করেনি। যদিও রোহিংগারা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষার মত ভাষায় কথা বলে এবং মুসলমান। এ ব্যাপারে চেতনাধারী ভন্ডদের বক্তব্য ছিল, রোহিংগারা জামাতে ভোট দেয় (!)। রোহিঙ্গাদের মত আসামের মুসলমান বাংগালিদের প্রতিও এখানকার ভন্ড মানবতাকর্মীদের মায়া হবে না। ভাগ্যিস, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের সময় সিলেটিরা ভোট দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানের সাথে যুক্ত হয়েছিল (সিলেট আসামের অংশ ছিল)। নয়ত তাদেরো খবর ছিল। পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে প্রচুর মুসলমানের বাস, যারা দেশভাগের সময় ভোট দিয়ে ভারতের সাথে থেকে গিয়েছিল। তাদের ব্যাপারে মোদি সরকারের কি পদক্ষেপ, তা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।
এখন আসি বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম এর কথায়। তিনি বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ চেয়েছেন। আমাকে কেউ একটা ব্যাপার বোঝান। ইমরান খান পাকিস্তানের সরকারের অংশ না। বিরোধীদলীয় এমপি। উনার কথার প্রতিবাদে আপনারা যারা পাকিস্তান এম্বেসীর সামনে মিছিল করতে গিয়েছিলেন, পাকিস্তানের সাথে কুটনৈতিক সম্পর্ক স্থগিতের দাবী তুলেছিলেন, এই আপনারা কেন বিজেপি নেতার এত বড় কথায় চুপ করে আছেন? এই রকম সিলেক্টিভ প্রতিবাদকে ভন্ডামী বলে। নাকি আপনারা কে কার আগে এই দাবী পূরণ করবেন, তা নিয়ে এখন প্রতিযোগিতায় নামবেন? আমাদের এখানেতো আবার গাদ্দারদের বাম্পার ফলন হয়। নাকি আমেরিকা তরুণ নেতৃত্ব তৈরিতে যে বিশাল ফান্ড দিচ্ছে, তাতে ভাগ বসানোর জন্য লবিংএ ব্যস্ত? আপনাদের প্রতিবাদের দৌড় দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। তার ফাকে একই সাথে ভারতীয় এই নেতা আর এদেশীয় গাদ্দারদের কথা ও কাজের প্রতিবাদ করে গেলাম।