আগেকার দিনের ইতিহাস পড়তে গেলে আমরা দেখি রাজায় রাজায় যুদ্ধের কাহিনী। আমাদের গত ৫০ বছরের ইতিহাস কেমন ছিল? আমাদের স্বাধীনতা পরবর্তী ইতিহাস নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। বলা হয় ইতিহাস বিকৃতির কথা। যেই ইতিহাস লেখে, সেই কোন না কোন শিবিরের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লেখে সেই ইতিহাস। তাই, সেই ইতিহাসের পক্ষে ও বিপক্ষে অনেক আলোচনা চলে। কিন্তু, যখন নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে লেখা হয়, যখন পাত্তা দেয়া হয়না কোন শিবিরের পছন্দসই ইতিহাসকে, তখন সেটা নিয়ে উভয় শিবিরের কেউ উচ্চ-বাচ্য করেন না। প্রকৃত ইতিহাস পড়ে রয় অযত্ন অবহেলায় চোখের আড়ালে।
হুমায়ুন আজাদের এই বই “আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম” পড়তে গিয়ে আমি বুঝতে পারছিলাম না, এটা কি এই সেদিন লেখা হয়েছে? উনিতো মারা গেছেন অনেকদিন হল। নাহ, এটা লেখা হয়েছিল গত বিএনপি-জামাত জোটের শাসনামলে। কিন্তু, মনে হবে যেন এই সেদিন লেখা। এই বইটি পড়তে গেলে বুঝবেন, পরিস্থিতি এখনো বদলায় নি। বরং বইয়ে বলা কথাগুলো অনুযায়ী দিনকে দিন পরিস্থিতি আরো দুর্বিষহ হচ্ছে। এখানে লেখক যুক্তি দিয়ে বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টাদের স্বপ্নের বাংলাদেশের সাথে এখনকার অবস্থার তুলনা করেছেন।
আর, ধর্মের বিরুদ্ধে হুমায়ুন আজাদের প্রেজুডিস ছিল। সেটা একান্তই তার। এটা নিয়ে আপনাকে আহত হতে হবে না। মহানবী (স) তাঁর জীবদ্দশায় এর থেকে বেশি বিরূপ মানুষের সাথে শান্তিতে সহাবস্থান করেই তাদের জয় করেছিলেন। হুমায়ুন আজাদের এই বইয়ে উনার মত উনি প্রকাশ করতে পারবেন, এটাই মত প্রকাশের স্বাধীনতা। তবে, এখানে বর্ণিত ইতিহাস যদি কেউ পড়ে দেখেন, তাহলে বুঝবেন, বাংলাদেশ নিয়ে এর থেকে পারফেক্ট ইতিহাস আর কোথাও নেই।