গ্যালিলিও তার টেলিস্কোপ দিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলেন যে পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘুরছে, সূর্য পৃথিবীর চারদিকে ঘুরছে না। কিন্তু মাথামোটা ধার্মিক যাজক রা তা বিশ্বাস করতে পারলেন না... Are you nuts!!!! Earth is the Center of the Universe...... The 'books' say so!!!!
চিন্তা করা যায় যদি টেলিস্কোপ আবিস্কার না হত, আমরা কিভাবে এই সব মূর্খ ধর্ম ব্যবসায়ীদের কথা মত চালিত হতাম।
গ্রাভটেশনাল ওয়েভের ডিটেকশনের দ্বারা আবারই কি সেভাবে বিশ্বাসের ভীত ধরে নাড়া দিবে????
ইজি ভাষায় গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ
যা হোক টেলিস্কোপ তো অনেক অনেক অজানা কে জানান দিয়েছে... কিন্তু টেলিস্কোপ দিয়ে কি দেখা যায়। প্রথম দিককার টেলিস্কোপ দিয়ে শুধু যে সমস্ত Celestial Objects খালি চোখে দেখা যায় এমন আলো বিকিরন করত, শুধু তাদের কেই দেখা যেত...। পরে অবশ্য এক্সরে, গামা রে, রেডিও সহ নানা রকমের টেলিস্কোপ ডেভেলপ করা হয় যার দ্বারা অনেক অজানা এস্ট্রোনমিক্যাল ইভেন্ট কে পরীক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু আলো হল electromagnetic wave যেটা অন্য অবজেক্টের সাথে ইন্টারএক্ট করতে পারে। যার জন্য আলো scattered and absorbed হতে পারে এবং ধুলিকনা, মেঘ, চার্জড পার্টিক্যালস এসবও আলোর পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। আর তার জন্য যে বস্তু থেকে আলো আসছে, সেই বস্তু কে ১০০% কারেক্ট ভাবে পরীক্ষা করা সম্ভব না লাইট বেইসড টেলিস্কোপ দ্বারা। আর পরীক্ষা করা যায় শুধু তাদের কে ই যারা আলো বিকিরন করছে। কিন্তু যারা আলো বিকিরন করে না যেমন ব্ল্যাকহোল, তাকে কি ভাবে পরীক্ষা করা যায়?? মিলিয়ন বিলিয়ন আলোকবর্ষ দুরের কোন ভায়োলেন্ট ইভেন্ট যেমন: extremely massive objects moving at a significant fraction of the speed of light যেটা গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ তৈরী করছে কিন্তু আমাদের বর্তমানের টেলিস্কোপ দ্বারা সেটা দেখার কোন উপায় নাই।
আচ্ছা দেখা না গেলেও যদি শুনতে পারা যায়!!!!!! আর যদি শুনতে পারা যায় তা হবে বধির কোন লোক প্রথমবারের মত কোন শব্দ শুনার মত।
গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ (unlike light) কোন কিছুর সাথে ইন্টারএক্ট করে না। একটা ওয়াল যখন লাইটকে যখন আটকে দেয়, গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ ওয়াল ভেদ করে কোন বাধা ছাড়াই চলাচল করতে পারে। Sound wave, light wave, water wave all travel THROUGH space but gravitational waves travel WITHIN space.
যখন গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ মুভ করে, তখন সে স্পেস টাকে ও তার ওয়েভের সাথে সাথে বাকিয়ে থাকে (এক্সপান্শান/কনট্রাক্শান), এর ফলে দুই বস্তুুর মাঝের দুরূত্ত ও বাড়ে কমে। LIGO এর দুইটা ৪ কিলোমিটার লম্বা টিউবের ভিতর যে লেসার লাইট ১০০ বার যাওয়া আসা করছে, একটা টিউব গ্রাভিটেশনাল ওয়েভের জন্য সামান্য Expand (a trilionth of the thickness of a human hair-a hundred millionth the size of an atom) করলেও, লাইট বেশী সময় নিবে এই অতিরিক্ত দুরূত্ত অতিক্রম করার জন্য। আর সেটাই বিজ্ঞানীরা ডিটেক্ট করেছেন দুই টিউবের মধ্যে লাইটের ট্টাভেল টাইমের তারতম্য মেজার করার মাধ্যমে।
আমরা এখন গ্রাভিটেশনাল ওয়েভকে যেহেতু ডিটেক্ট করতে পারি, তাহলে আমরা দেখতে পারব the center of dense systems, like the cores of supernovae or the Galactic Centre- যেটা লাইট বেইসড টেলিস্কোপ দিয়ে দেখা সম্ভব না।
আমরা অনেক পিছনের ইভেন্টগুলি দেখতে পারব যেটা লাইট বেইসড টেলোস্কোপ দিয়ে সম্ভব না। বিগ ব্যাং এর সময় যে গ্রাভটেশনাল ওয়েভ সৃস্টি হয়েছিল সেটাকে হয়ত ডিটেক্ট (ইনফার) করা যাবে, কিন্তু যেহেতু মহাবিশ্ব সৃস্টির ৩৮০,০০০ বছর পর হাইড্রোজেন এটম তৈরী হওয়ার পর প্রথম আলো দেখা যায়, সেহেতু বিগ ব্যাং হওয়ার সময় টা কখনই লাইট বেইসড টেলিস্কোপ দিয়ে দেখা সম্ভব হবে না। গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ দিয়ে ডিটেক্ট করতে পারলে, মহাবিশ্ব সৃস্টির অনেক রহস্য সবার সামনে চলে আসবে।
পুকুরে ঢিল মারলে যেমন ওয়েভ টা চারি দিকে ছড়িয়ে যায়, গ্রাভিটেশনাল ওয়েভও তেমনি উৎস থেকে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। তার মানে টেলিস্কোপ কে কোন কিছু দেখার জন্য একটা নির্দিষ্ট দিকে 'তাক' করতে হয় কিন্তু গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ ডিটেক্টর দিয়ে একসাথে পুরা আকাশ টাকে ই পরীক্ষা করতে পারবে।
টাইম ট্রাভেলের ব্যাপার টাও (ওনলি ভবিষ্যতের দিকে, অতীতের দিকে না) হয়ত একসময়.... (বলতে ভয় হচ্ছে)। আরো অনেক এপ্লিকেশনের কথা বলা হচ্ছে অনলাইনে। স্পেসডটকমে গেলে পড়তে পারবেন।
প্রথম আলো খুব ভাল করছে যে গ্রাভিটেশনাল ওয়েভকে ডিটেক্ট করা নিয়ে পর পৃথিবীর বিজ্ঞানমনস্ক মানুষজনের উন্মাদনা কে বাংলাদেশেও নিয়ে আসতে কিন্তু তারা হাই-লাইট করছে বাংলাদেশী বিজ্ঞানীদের নিয়ে ই বেশী। পাঠকেরা বোধহয় এই আবিস্কারকে আর বেশী ভাবে এপ্রিশিয়েট করতে পারত যদি পত্রিকা এটা বুঝিয়ে বলত কেন এটা যুগান্তকারী আবিস্কার।
আইনস্টাইন যখন তার থিয়োরী দেন ১৯১৬ সনে তখন অনেকেই এর মাহাত্ন্য না বুঝে এর অনেক সমালোচনা করেছিলেন। তার মতে, যেখানে বেশী গ্রাভিটি, সেখানে সময় ও স্লো হবে। তার মানে পৃথিবীতে থাকা একটা ঘড়ি, স্যাটেলাইটে থাকা ঘড়ি যেটা অনেক স্পীডে মুভ করছে-কম গ্রাভিটি) অপেক্ষা স্লো চলবে। আইনস্টাইনের সুত্র অনুযায়ী সেটা হবে ৩৮ মাইক্রোসেকেন্ড স্লো এক দিনে। তাই যখন GPS তৈরী করা হয়, এই ৩৮ মাইক্রোসেকেন্ড এর কারেকশান কে এড করতে হয় না হলে আপনার GPS কখনই আপনার সঠিক অবস্হান ডিটেক্ট করতে পারত না। আজ তার আবিস্কারের এপ্লিকেশন হচ্ছে আমার আপনার জন্য।
টেলিস্কোপ আবিস্কার যেমন পুরা মানব জাতির বিশ্বাস এর ভীত নাড়িয়ে দিয়েছিল, এই আবিস্কার ও তেমনি আমাদের প্রচলিত বিশ্বাস কে ও নাড়া দিবে বলেই আমার বিশ্বাস।
আজ থেকে ২৫-৫০ বছর এর মধ্যে বিজ্ঞানীরা এই গ্রাভিটেশনাল ওয়েভ ডিটেক্টর দিয়ে যা দেখবে শুনবে তা যে আমাদের প্রচলিত জ্ঞান/বিশ্বাস/আন্ধাজ কে যে অকেজো করে দিবে সেটা ভেবেই কিছু যাজক প্রকৃতির লোক জন এখনই বলাবলি আরম্ভ করেছেন যে এই ওয়েভের কথা 'বই'তে ই লিখা আছে। তা বুঝতে বা বুঝাতে কেন ১০০ বছর লাগল??? 'বই'তে যখন লিখাই আছে, সেটা বিজ্ঞানীরা বের করার আগে কি বলা যেত না হে মুর্খ.....
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১২:৩৭