প্রাইমারি স্কুলের শেষ বছর ছিল আমার। তখন আমার ছোট ভাই ছফি নার্সারি শেষ করে আমার সাথে প্রাইমারি স্কুলের আসে।

ছফি তো কি খুশি সবাইকে বলে বেড়াচ্ছে... আমি ছোটপুর স্কুলে যাব.. আমি বড় হয়েছি কিন্তু আমার দুঃখ কে দেখে!

আমার এই ভাইটা খুব....একরোখা, ওর সাথে চলতে আমার ভয় লাগে

যখন কেউ ছফির সাথে ঝগড়া করতো আমার ভাইটা আমার কাছে নালিস করতো! আমি কি খুশি হয়ে বলতাম চিন্তা করিস না
হোম টাইম বিচার করবো। এখন না, এখন করলে স্কুল থেকে ঘরে নালিশ যাবে আর মা...আমাকে ১০০ বার কানে ধরাবে।

হোম টাইম এলে হিরো তো কি খুশি

তারপর বাচ্চাদেরকে মারধর করে বিচার করলাম। তখন তো কি খুশি লাগতো ছোট ভাইয়ের হিরো ছিলাম কিন্তু এখন খুব খারাপ লাগছে
দুর..আমি ১০বছরের ছিলাম আর বাচ্চারা ছিলো ৭বছরের


ছফির সাথে এক বছর ছিলাম প্রাইমারিতে তারপর চলে যাই সেকেন্ডারি স্কুলে আমার বড় (২বছর) আপুর সাথে। আমার এই আপুটা
এতো লক্ষ্মী না বল্লে কেউ বুঝবেনা! আমরা দু-বোন যমজ ছিলাম না কিন্তু আমাদের সব কিছু জামা কাপড়-জুতা সব ছিল যমজের মতো।
বাবা যখন আমাদের দু-বোনের জন্য নতুন জামা কিনতেন প্রথম আমাকে বলতেন পছন্দ করার জন্য (জামা সমান থাকতো একটু ডিজাইন অথবা রঙ ভিন্ন)
আমি পছন্দ করে নিলাম কিন্তু যখন গায়ে দিতাম তখন সবাই বলতো আপুর জামা সুন্দর :# (
আমি দুঃখ নিয়ে কিছুক্ষণ পর আপুকে বলি তোমার জামা আমাকে দিয়ে দাও। আপু অবাক!! কেন এটা আমার জামা আর তুই আগে পছন্দ
করে নিয়েছিস তো এখন কেন আমারটা নিবি?? আমি বললাম আমি চাই এর জন্য

আবার বলতাম খবরদার মাকে বলবেনা

আমরা একবার ১৫দিনের জন্য গ্রামে যাই। ১৫দিনের জন্য দুটি কারণে গিয়েছিলাম
১-আমরা প্রথম বাংলাদেশ গিয়েছি তাই,
২-আমাদের ছোট চাচ্চুর বিয়ে হবে গ্রামে।
বিয়ের ঝামেলায় একদিন সকালে আমার স্বর্ণের নেকলেস খুঁজে পাচ্ছি না।


আপুকে বললাম তোমার নেকলেস আমাকে দিয়ে দাও আমারটা খুঁজে না পাবার আগ পর্যন্ত!


আমার আপু এতো লক্ষ্মী হারটা দিয়ে দিল!

বিকাল বেলা মা অবাক হয়ে আমাকে জিজ্ঞাস করছেন আমার গলায় এই নেকলেসটা কার!


এমন করে কতো কি আপুকে নিয়ে। সব কথা বলতে নাই! ভাল দেখে দু-একটা বললাম!
আমার কাছে পৃথিবীর সব দুষ্টুমি ছিল ছোটবেলা ((মনে হয় এখনও আছে কিছুটা))


আসলে আমার আপুটা এতো লক্ষ্মী এখন খারাপ লাগে দুর...কেন এমন করেছিলাম!

ছোটবেলার সব কিছু এখন মিস করি...আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম!
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১২ রাত ৮:২৮