কওমি মহিলা মাদ্রাসায় “বান্ধবী” ব্যপারটায় একটু আপত্তি আছে। এক মেয়ের সাথে আরেক মেয়ের বেশী মেশা পছন্দীয় নয় নানা কারনে।
গল্পের মাধ্যমে বাইরের জগতের কথা আসবে , যেমন পোশাক , সিনেমা, গান ইত্যাদি বেশরিয়াতিক থা বার্তা আসতে পারে গল্প গুজুবের মাধ্যমে। এবং এতে ইমান হালকা এমনকি নষ্ট হওয়ারও সম্ভবনা থাকে। ।
এ ব্যপারে এক ছাত্রী থেকে জানতে পারলাম :
"বেশী মিশলে বেশী গল্প হবে, গল্পের মধ্যে নিজেদের ফ্যামিলির কথা আসবে, ফ্যমিলিতে ভাই-কাজিনদের কথা আসবে, অন্য মেয়ে সেই ভাই বা কাজিনের প্রতি আকৃষ্ট হতে পারে এবং এতে সেই মেয়ের তাকওয়া নষ্ট হবে। "
অতএব, এক জন আরেকজনের সাথে গল্প করা নিষেধ। উল্লেখ্য যে, এসব মাদ্রাসায় অবসর সময় বলতে আসর নামাযের পর থেকে মাগরিব নামাযের আগ পর্যন্ত।
এর মধ্যে না আছে খেলা ধুলার ব্যবস্থা, না গল্প-উপন্যাসের বই পড়া না অন্য মেয়ের সাথে গল্প করা। এক সাথে কয়েকজন বসে গল্প করা যাবেনা। কোন বন্ধুত্ব করা যাবেনা। ফাতেমা বলতে পারবেনা যে হাজেরা আমার বান্ধবী।
পাঠ্য পূস্তক ব্যতিত অন্য কোন বই পড়ার কোনো ব্যবস্থা এবং অনুমতিও নেই। এদের কোন লাইব্রেরী নেই। ছাত্রীরা নিজের ব্যববস্থায়ও কোন বাড়তি বই পরতে পারেনা। মাদ্রাসায় গল্প-উপন্যাসের বই পড়া নিষেধ।
কারন হিসেবে বলা হয় সময় নষ্ট এবং নাস্তিকদের বই পড়লে সেই আছর (প্রভাব) পরার একটা সম্ভবানা থেকে। আল্লাহর থেকে মন সরে যায়।
নেই কোন দৈনিক পত্রিকা বা ম্যগজিন পড়ার ব্যবস্থা। রুমের বাইরের জগতটা সম্পর্কে একটা মেয়ের আর কোন ধারনাই থাকেনা। মাদ্রাসায় ঢোকার সাথে সাথে এক অজানা শহরে এসে পরে যেনো সবাই। গেইটে ২৪ ঘন্টা তালা লাগানো। কোন কোন মেয়ে ৬-৭ এমন কি ১ বছর পরেও বাড়ি যায়। এদের অনুভুতি গুলো ভোঁতা হয়ে যায় যেনো। ছোট বেলা থেকে এভাবে থাকতে থাকতে।
এসব মাদ্রাসা থেকে দাওড়া (মাওলানা বলা হয় দাওড়া পাশ করার পর)
পাস করার পর মেধাবী ছাত্রীদের সেই মাদ্রাসাতেই শিক্ষিকা হিসেবে রাখা হয়। অথবা কেউ কেউ বিয়ে করে ঠিক এরকমই নতুন আরেকটা মাদ্রাসা শুরু করে অথবা শুধু মাত্র স্বামী সেবাই নিযুক্ত থাকে।
এদের মধ্যে ২০০ জনে ১ জন এর পর আলিয়া মাদ্রাসা থেকে দাখিল এবং আলিম দিয়ে থাকে। যারা কওমি থেকে পাশ করে আলিয়াতে পড়া শোনা করে তাদের প্রতি তাদের কওমি শিক্ষক-শিক্ষিরা খুব অসন্তষ্ট হন। তাদের মতে আলিয়াতে পড়লে আমল নষ্ট হয়ে যায়। তাকওয়ার ঘাটতি ঘটে। ৯৯.৯% কওমি হজুর আলিয়া বা কলেজ-ইউনিতে পড়ার জন্য অনুৎসাহিত করে থাকেন এবং অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে থাকেন।
এসব মেয়েদের মধ্যে কিছু দাখিল-আলিম পাশ করে থাকে। এদের মধ্যে আরো কম কিছু মেয়ে ফাজিল (ডিগ্রি) পাশ করে। এবং .০০০০১ জন আলিয়া মাদ্রসা থেকে এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি সম মানের (দাখিল, আলিম ) পরীক্ষা দিয়ে সাধরন ইউনিতে স্নাতক অথবা ডিগ্রি পড়ে থাকে।
এ পর্যন্ত আসতে প্রয়োজন হয় সেই মেয়ের চরম ইচ্ছা , সাহস এবং পরিবার থেকে স হযোগিতা। কিন্তু ইচ্ছা থাকা সত্বেও সাহস ও পরিবারের স হযোগিতার অভাবে এরা আর বেড়ে উঠতে পারেনা।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ৯:২৬