পোষাক:
ফুল হাতা কামিজ। শর্ট হাতা কামিজ কড়া রকম নিষেধ। কামিজের ঝুল অবশ্যই হাটুর নিচে। ঢিলা-ঢালা , যাতে শরিরের কার্ভ না বোঝা যায়। কোন প্রানির ছবি থাকবেনা কাপড়ে। ওড়না মিনমাম সারে ৪ হাত লম্বা এবং দুই-আড়াই হাত ব হরের।
মাথায় কাপড় থাকতে হবে সর্বদা। নাইলে শয়তান হিসি করে দিবে।এবং সে মেয়ে কম আমলদার হিসেবে গন্য হবে। খাওয়ার সময় মাথায় কপড় না থাকলে শয়তান সাথে খাবে। আড়াই প্যাচ দিয়ে ওড়না পড়াতে হয়। চুল দেখা যাবেনা। যেখানে কোনো পুরুষ নেই, পুরুষ রা মেয়েদের কে দেখে ফেলবে এমন কোনো সম্ভাবনাও নাই সেখানে এরকম ব্যবস্থা কতটা হাস্যকর ভাবা যায়না।
কিছু মেয়েকে দেখেছি মাথায় আড়াই প্যাচ দিয়ে গোসল করতে ঢোকে এবং আড়াই প্যাচ দিয়েই বের হয় গোসল করে।
যেহেতু চুল কাটা হারাম সেহেতু মেয়েদের চুল গুলো থাকে বড় বড়। কোমরের নিচ অব্দি চুলের মেয়ে অনেক এসব মাদ্রাসায়। গোসল করে এত বড় চুল গুলোর উপর ওড়ানা পেচিয়ে রাখাতে কি সওয়াব পাওয়া যাবে আমার বোধ গম্য নয়। চুলের পানিতে ওড়না, কামিজ, গা ভিজে গিয়ে এক ধরনের যা-তা অবশ্থা তৈরি হয়।
সে মেয়েরও এ অবস্থা নিয়ে কোন সমস্যায় নাই। কারন তাকে ছোট বেলা থেকে বলা হইছে যত কষ্ট করা হবে আল্লাহর তত কাছে যাওয়া যাবে। সে মেয়ের চিন্তা শক্তির ধার এত কমিয়ে দেয়া হয় যে ভিজা চুল নিয়ে মাথায় কাপর না দিলে তার পূন্যের কোন ঘাটতি হবেনা ,এই সাধরন জিনিসটা সে বোঝেনা।।
এধরনের মেয়েগুলোর সাথে মাঝে মাঝে মজা করতাম। “চুল দেইখা ফেলছি” বললেই কেপে উঠে মাথায় হাত দিতো ঘোমটা ঠিক আছে কিনা। শিক্ষিকারা খুব খুশি থাকতো এদের উপরে। যারা আড়াই প্যাচ দিতো না বা দিতে পছন্দ করেনা তাদের কে মার্ক করে রাখা হয়। এপর যেকোন যেকোন অযুহাতে শিক্ষিকারা শাস্তি বা ধমক দিয়ে থাকে।এরা ব্লাক লিস্টেড।
তবে আপনি ২-১ টা মাদ্রাসায় দেখতে পারেন হালকা করে মেয়েরা মাথায় কাপড় দিয়ে আছে। কামিজের ঝুল হাটুর সমান, তবে বুঝতে হবে এই মাদ্রাসার বড় আপা বা বড় খালম্মা নিজেও এরকম কাপর পড়তে পছন্দ করেন। নিজের প্রয়েজনে এরা নিয়ম পাল্টে ফেলতে পারে অকাতরে। এক বড় আপাকে দেখেছি নিজের রুমে ঠিকই ওড়না ছাড়া পরিবারের সবার সামনে হেটে বেড়াচ্ছে আর তার ছাত্রিরা পাশের রুমে গরমে আড়াই প্যাচ মেরে বসে আছে।
তবে কিছু বড় খালাম্মা বা আপারা আছেন ছাত্রীদের জন্য যে নিয়ম করেন তিনি তার থেকে বেশী কঠিন ভাবে তা পালন করেন। এটা তার বিশ্বাসের ব্যপার। আর উপরে যার কথা বললাম তাদের মত শিক্ষিকারা ইসলাম কে ব্য ব হার করে থাকেন।
এক বড় আপা / খালাম্মা কে দেখলাম চুলে পার্ম করেছেন। কিন্তূ তার কোন ছাত্রী যদি চুল কাটে , রঙ করে তবে তার জন্য বিশেষ শাস্তি বা বকার ব্যবস্থা রয়েছে।
চুলা কাটা নিষেধের কয়েকটা কারন বলা হয়। খ্রিস্টানেরা এরকম-সেরকম চুল কেটে স্টাইল করে , তাই চুল কাটা মানে তাদের অনুসরন করা।
পাপ!!
কেয়ামতের দিন সবাই উলন্গ থাকবে, চুল বড় থাকলে গলা পাশ দিয়ে চুল ছেড়ে দিলে তখন গোপন অন্গ ঢাকা যাবে। মাদ্রাসার অনেক মেয়েরা ঝরে পরা চুল গুলো যত্ন করে জমা করে। কেয়ামতের দিন ওগুলো এডেড হবে। মাদ্রাসায় মেয়েরা উচু করে ঝুটি মা খোপা করতে পারবেনা।
উচু করে চুল বাধলে সে বেহেশত তো দুরের কথা বেহেশতের সুবাস ও পাবেনা। এ হচ্ছে কওমি মাদ্রাসার মেয়েদের মাদ্রাসার ভেতরের পোষাক এবং হেয়ার স্টাইল ।
সন্দেহ নেই যে বোরখা পরে বাইরে বেরুতে হবে। কালো সিনথেটিক কাপরের বোরখা। নিচের পার্ট ঢোলা-ঢালা পায়ের পাতা পর্যন্ত। উপরের পার্ট প্রায় হাটুর নিচে চলে যায় ঝুল। এরপর মুখ ঢাকার জন্য নেকাব। বাকি থাকি চোখ। চোখ ঢাকার জন্য জরজেটের ২টা পার্ট, ঝুল প্রায় বুক পর্যন্ত।
কিছু কিছু মাদ্রাসায় বোরখা গায়ে নেয়ার আগে জামার ওড়না দিয়ে মাথায় আড়াই প্যাচ মেরে তার উপর বোরখা পরার জন্য উৎসাহিত করা হয়। সাথে হাত মোজা (সিনথেটিক) এবং পা মোজা তো ওয়াজিব। এই পোষাকের হের ফের হলে শাস্তির ব্যবশ্থা আছে। ছাত্রিরা যারা বাসা থেকে এসে লেখাপরা করে ছুটির সময় বুয়া দাড়িয়ে থাকে চেক করার জন্য যে তাদের বোরখা, হাত মোজা এবং পা মোজা থিক মত আছে কিনা।
( এক বড় আপা /খালাম্মা কে দেখেছি তিনি তার মাদ্রাসা থেকে যখন বাড়ি আসেন, তখন তার পোষাক পাল্টে যায়। কোথায় কিসের হাত মোজা পা মোজা! বোরখার নিচের পার্টের সাথে একটা ওড়না পেচিয়ে বেড়িয়ে পরেন। কিন্তু তার ছাত্রীর সামনে মুত্তাকির (পরহেজগারিতার) ইমেজ নিয়ে থাকেন। নইলে তার মাদ্রাসার বদনাম হবে তো। অন্যেরা দেখলে খারাপ বলবে। ব্যবসায় মন্দা আসবে।)
তবে কোন(খুব কম) মাদ্রাসায় উপরের পার্ট এর বদলে একটা বড় উড়না নামাজের সময় যেভাবে উড়না পরে সেভাবে পেচিয়ে তার উপরে নেকাব নামের ৩-৪ পার্ট ওয়ালা কাপড় পড়া এলাউড। সাথে হাতমোজা-পা মোজা অবশ্যই।
এবার ভেবে দেখুন হাত মোজা , পা মোজা আর কঠিন বোরখার প্যকেটে একটা মেয়ে ৩৫ ডিগ্রি সূর্যের নিচে কিভাবে থাকে ? চিন্তার কিছু নাই। মেয়ে লোকের বাসা থেকে বের হওয়া কি দরকার! বাইরের কাজের জন্য বাবা, স্বামি আর ভাই আছেন না!
এবার ভেবে দেখুন হাত মোজা , পা মোজা আর কঠিন বোরখার প্যকেটে একটা মেয়ে ৩৫ ডিগ্রি সূর্যের নিচে কিভাবে থাকে ? চোখের উপড় ডাবল পর্দা দিয়ে বাংলাদেশের মত দেশে হাটে কি করে আল্লাহ মালুম।
বড় কথা হচ্ছে দরকার নেই এমন পোষাকের। কোরআনে বলা হয়েছে বড় ওড়না দিয়ে বুক এবং মাথা ঢাকতে। কিন্তু বড় বড় ওলামাগন ফতোয়া দিয়েছেন বর্তমান জগৎ ফেতনা-ফাসদে ভরে গেছে , তাই এখন পর্দা আরো কঠিন আকারে করতে হবে যাতে বিশৃংখলতা না বাড়ে। বুলডুজার চালাওতো মেয়েদের উপড় দিয়া চালাও। এ ব্যপারে পুরুষদের জন্য এক্সট্রা কোন ফতোয়া দেয়া হয়নি।
এরকম অদ্ভুদ ধরনের পোষাক না পরেও মার্যিত থাকা যায়। ধর্ম মানা যায়।
অবশ্য তাদের কথায় ইমান-আমলে কমজোর হয়ে যাবে ঐরকম ভাবে পর্দা না করলে।
মেয়েদেরকে সামনে এগুতে না দেয়ার একটা হাতিয়ার হচ্চে এইরকম পর্দা প্রথা। মানসিক এবং শাররিক উভয় ভাবে অকেজো করে দেয়া। তাদের সমাধান হচ্ছে, মেয়েরা বাইরে বেরুনো কি দরকার। বাবা, ভাই আর স্বামী আছেননা? রুজি-রোজগার এরাই করবেন। আপনি শুধু ঘরে বসে সন্তান জন্ম দেন আর দেবতুল্য পতির সেবা করুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:১৭