তখনও ফেসবুক বাংলাদেশে এতোটা জনপ্রিয়তা পায় নি। অনলাইন ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের জন্য আমার মতো নেট-প্রেমীদের ভরসা ছিল ইয়াহু, এমএসএন ও বিডিচ্যাট.কমের চ্যাটরুমগুলো। আমার বিশেষভাবে প্রিয় ছিল ইয়াহু চ্যাট। ইয়াহু চ্যাট রুমগুলো ছিল বিভিন্ন দেশের নামে। আমি বাংলাদেশ নামক চ্যাট রুমে ঢুকে সবার সাথে আড্ডা দিতাম ঘন্টার পর ঘন্টা। এভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার লোকজনের সাথে বন্ধুত্ব হয়ে গিয়েছিল। তাদের অনেকের সাথে এখনও যোগাযোগ আছে।
এভাবে চ্যাট করতে করতেই একবার হুট করে মাথায় একটা ভুত চাপে। ইচ্ছে জাগে ইউরোপিয়ানদের সাথে বন্ধুত্ব করার। কিন্তু আমার একার ইচ্ছে থাকলেই তো হবে না। ওদিক থেকেও সমান ইচ্ছে থাকতে হবে। তাই আমার আগ্রহে চ্যাটের শুরু হতো ঠিকই, কিন্তু বাংলাদেশ নামটা উচ্চারণ করার পরেই ওপাশ থেকে আর কোন রিপ্লাই পেতাম না। বুঝতে পারলাম থার্ড ওয়ার্ল্ডের একটা দেশের নাগরিকের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ আড্ডা চালিয়ে যাওয়াতে তাদের মোটেই ইচ্ছে নাই। বরং তারা যে আসলেই আমাদের অবহেলার চোখে দেখে এটা্ও বুঝতে পারলাম। তাই একসময় একটা বুদ্ধি আঁটলাম। ইউকে চ্যাটরুমে ঢুকে অনেক খোঁজাখুজির পর একটা মনের মতো প্রোফাইল পিক পেলাম। প্রোফাইল পিকটা এন্ড্রু নামের বেশ হ্যান্ডসাম একটা ছেলের। সোনালী চুলের অধিকারী এন্ড্রুকে দেখলে যে কোন মেয়ে কুপোকাত হয়ে যাবে নিঃসন্দেহে। তাই আমি দেরী না করে এন্ড্রুর প্রোফাইল পিকটা কপি করে নিয়ে ঐ ছবি ব্যবহার করে নতুন একটা আইডি খুললাম। আর নাম দিলাম টারমিনেটর.বিডি। ঐ সময় টারমিনেটর ছবিটা খুব জনপ্রিয়তা পেয়েছিল কিনা, তাই।
তো আমি আমার নতুন পরিচয় নিয়ে ইউরোপিয়ান চ্যাট রুমে ঢুকে সুন্দর সুন্দর নাম আর প্রোফাইল পিক দেখে দেখে আবার নতুন করে নক করা শুরু করলাম। এবার কিন্তু আমি যথেষ্ট সাড়া পেলাম। মাঝে মাঝে তো আমাকে তারা নিজে থেকেই মেসেজ পাঠাত। বিভিন্ন সাদা চামড়ার মানুষের সাথে মেসেজ চালাচালি করতে করতেই একসময় সারাহ নামের মেয়েটির সাথে পরিচয় হল। খুব একটা রূপসী না হলেও দেখতে মন্দ না সে। তার সাথে চ্যাট করতে করতে একসময় বন্ধুত্ব হয়ে গেল। নিয়ম করে প্রতিদিন তার সাথে চ্যাট করা শুরু হল। সে আমার অবস্থান জানতে চাইলে আমি কেবল মানচেস্টার সিটির কথাই বলতাম। সে নির্দিষ্ট করে আমার ঠিকানা জানতে চাইলে সুকৌশলে এড়িয়ে যেতাম। বলতাম, আমরা তো নেট ফ্রেন্ড। এটাকে রিয়েল লাইফে না আনাটাই উচিত হবে। চ্যাট করতে করতে আমরা আমাদের দৈনন্দিন ঘটনাবলী শেয়ার করতাম, ছেলেবেলার গল্প করতাম। তবে সবচে বেশি হতো মুভি রিভিউ অথবা কোন না কোন ইংরেজী সাহিত্যকর্ম নিয়ে আলোচনা। আমার আর তার পছন্দের এই দুইটা বিষয় মিলে যাওয়ায় তার সাথে আমার চালিয়ে যাওয়া বেশ সুবিধাজনক হয়েছিল। আমার আর তার প্রিয় বিষয় ছিল মুভি আর বই। আমি প্রচুর ইংরেজী ছবি দেখেছি । আর ইংরেজী সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনা করায় সাহিত্যে বেশ দখল ছিল আমার।
একদিন সে আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল ‘আই থিংক আই অ্যাম ইন লাভ উইথ ইউ।’ আমি জানতাম ওয়েস্টার্নদের কাছে ভালবাসায় পড়া আমাদের বাঙালিদের মতো দীর্ঘমেয়াদী কোন রোমসন্টিসিজম না যে, যাকে ভালবাসলাম তাকেই বিয়ে করতে হবে। তাই আমি ব্যাপারটাকে ততোটা পাত্তা দিলাম না। কিন্তু এক পর্যায়ে আমি নিজেও বুঝতে পারলাম যে তার সরলতা আমার ভীষন ভাল লাগছে। আমি যে কেবল একটামাত্র প্রোফাইল পিকচার এতো বছর ধরে ব্যবহার করছি এটা নিয়ে কখনো কোন প্রশ্ন সে করেনি। কখনো আমার এক্সিস্টেন্স নিয়েও কোন প্রশ্ন তার মনে জাগেনি। আমি যা বলতাম তাই সে বিশ্বাস করতো অবলীলায়।
আমাদের সম্পর্ক তখন তিন বছর। সে প্রায়ই বলতো যে সে আমাকে সরসরি দেখতে চায়। আমাকে কাছে পেতে চায়। তার নাকি আর তর সইছে না। সত্যি কথা বলতে লজ্জা নেই। আমিও আসলে তাকে খুব কাছে পেতে চাইছিলাম। নিজের করে পেতে চাইছিলাম তাকে। কিন্তু আমার তো কোন উপায় ছিল না। আমার পরিচয় জানতে পারলে যে সে আর কোন দিনও আমার সাথে কথা বলবে না। এ নিয়ে আমি নিশ্চিত ছিলাম। তারপর আবার নিজেকে নিজেই প্রবোধ দিলাম এই বলে যে, এতোদিন যে মেয়েটা আমাকে না দেখেই ভালবাসার কথা বলল, প্রেমের কথা বলল, কাছে চাইল, সে তো তবে আমার শারীরিক সত্ত্বার প্রেমে পড়েনি, সে তো তবে আমার মনটাকেই ভালবেসেছে। তার কাছে হয়তোবা বাইরের দিকটা কোন ব্যাপার না। তাই একদিন সাহস করে সিদ্ধান্তটা নিয়েই নিলাম। ওয়েব ক্যাম নিয়ে চ্যাটে বসলাম। ক্যাম এভেইল্যাবল দেখে তো সারাহের আনন্দের আর শেষ নাই। খুব উত্তেজনা নিয়ে ক্যাম ওপেন করতে বলল। আমিও সাত-পাঁচ কিছু না ভেবেই দিলাম ক্যাম অন করে।
১ সেকেন্ড.. ৫ সেকেন্ড... ১৫ সেকেন্ড... ৩০ সেকেন্ড... ১ মিনিট...
আমি দেখতে পারছিলাম সারাহর চোখ বড় হয়ে যাওয়া, চোখে অবিশ্বাস তৈরী হওয়া... স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম সারাহর মুখের কোমল পেশীগুলো ক্রমশ শক্ত হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা...
-হু দ্যা হেল আর ইউ? ইজ ইট স্যাম, মাই স্যা...ম??
-ইয়েস.. ইট ইজ মি.. আই অ্যাম আফজাল। আফজাল হুসেইন।
তাকে জানালাম আমি বাংলাদেশি। আমার নাম আফজাল। আমার স্যাম পরিচয়টা মিথ্যা। বিহাইন্ড স্যাম, বিহাইন্ড টারমিনেটর, ইট ইজ আফজাল। মিথ্যা বলার জন্য দুঃখ প্রকাশ করলাম।
সে আমাকে প্রশ্ন করল, তার সাথে কেন এমনটা করলাম।
উত্তরে তাকে সত্যি কথাটাই বললাম। বললাম, আমি মিথ্যে না বললে সে নিশ্চয়ই আমার মতো ব্ল্যাকির সাথে কথা বলতো না। তাকে আরো জানালাম, আমার গায়ের রং হয়তো অন্যরকম। আমি হয়তো স্যাম নামের কেউ না। কিন্তু তার জন্য আমার যে ভালবাসাটা সেটা মোটেও মিথ্যা না। একজন সাদা চামড়ার মানুষের মনে যেমন করে ভালবাসার উপস্থিতি থাকে, আমার ভালবাসাও ঠিক তেমন। চামড়ার রং কালো সাদা হতে পারে, ভালবাসার রং এ কোন পার্থক্য থাকে না।
আমার কথায় তার মন ভরল না।
-টারমিনেটর, ইউ হ্যাভ রিয়েলি টারমিনেইটেড মাই লাইফ। একথা বলেই সে সাইন আউট করে চলে গেল। আমি বুঝলাম সে আর কখনো সাইন ইন করবে না। সে কখনো আর আমাকে ভালবেসে আমার জন্য ওয়েইট করবে না। আমার আসলে এটাই প্রাপ্য। বুঝতে পারলাম,আমি আসলেই খুব খারাপ একটা কাজ করে ফেলেছি। খুব খারাপ একটা কাজ...
পরপর কয়েকদিন আমি আর নেটে গেলাম না। সারাহ নাই। তো কি আর হবে ইয়াহু চ্যাট করে? অন্যান্য কাজে ব্যস্ত হয়ে গেলাম।
এক মাস পর হঠাৎ করেই একদিন মন খারাপ বোধ করায় সারাহের ছবি দেখার জন্য ইয়াহুতে সাইন ইন করতেই আমার চোখ চড়ক গাছ!
-স্যাম, হোয়ার আর ইউ?
-স্যাম, আই কান্ট লিভ ইউ।
-প্লিজ কাম ব্যাক।
এরকম শতশত অফলাইন মেসেজে ভরে আছে আমার চ্যাট বক্স! ইয়াহু!! অ্যাট লাস্ট আই গট সারাহ! অবশেষে আমি সারাহকে পেলাম। আবার শুরু হল অামাদের অনলাইন প্রেম। এবার শুরু হল ভয়েস চ্যাট। ভয়েস চ্যাটের মাধ্যমে এবার আমি তাকে বাংলাদেশের সাথে, বাংলা ভাষার সাথে তার পরিচয় ঘটানোর চেষ্টা করলাম। ভীষণ মেধাবী মেয়ে সারাহ খুব অল্প দিনেই বাংলা ভাষাটা আয়ত্ব করে ফেলল। ক্রমশ আমরা দুজন আরো কাছাকাছি এলাম। এবং সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি ব্রিটিশ অ্যামবেসিতে উঠলাম। কিন্তু ব্রিটিশ অ্যামবেসি আমার ভিসা অ্যাপ্লিকেশন রিজেক্ট করল। তখন সারাহ ঠিক করল সে নিজেই বাংলাদেশে একেবারে চলে আসবে । আমি সানন্দে রাজি হলাম।
দীর্ঘ পাঁচ বছর অনলাইন প্রেম করার পর সারাহর সাথে আমার দেখা হবার দিনক্ষণ ঠিক হল ৫ জানুয়ারী, ২০১৫ সালে। সে ঐদিনই বাংলাদেশে পৌছাল। তাকে রিসিভ করতে এয়ারপোর্টে যেতে চাইলাম। কিন্তু সে নিষেধ করল। বলল, সে নিজেই এয়ারপোর্ট থেকে আমাদের বাসা ফার্মগেট পৌছাতে পারবে। প্রথমে না মানলেও পরে তার উৎসাহ দেখে মেনে নিতে বাধ্য হলাম।
-ওকে, একাই আসো। কোন সমস্যা নাই। কেবল সমস্যায় পড়লে মোবাইলে কল দিতে ভুলে যেও না।
এয়ারপোর্ট থেকে নেমে সিএনজিতে উঠেই সে পড়ল ট্রাফিক জ্যামে তারপর পড়ল বিরোধী দলের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ভেতর। ককটেল আর গুলির শব্দে ভয় পেয়ে আমাকে কল দিল।
আমি তড়িঘড়ি ছুটলাম। তাকে উদ্ধার করলাম। সে তখন ভয়ে কাঁপছে।
-হোয়াট দ্যা হেল দ্যা আর ডুইং? ডু ইউ বেঙ্গলিজ ফাইট অল দ্যা টাইম?
আমি বললাম, না সবসময় না। এখন তো অবরোধ চলছে। তাই এমন।
বাড়ি ফিরতে ফিরতে তাকে বুঝালাম বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থা এখন খুব খারাপ। এখানে প্রায়ই বিরোধী দল আর সরকারি দলে মারামারি হয়। নিরীহ মানুষেরা মারা যায়। বুঝালাম অবরোধ মানে সব রকমের রাস্তাঘাট বন্ধ করে দেয়া। মানুষজনের চলাচলে বাঁধার সৃষ্টি করে সরকারকে চাপে ফেলার চেষ্টা করা।
সে জিজ্ঞেস করল, অবরোধ কবে শেষ হবে।
জানালাম, এবারের অবরোধটা অনির্দিষ্টকালের জন্য।
-অনির্দিষ্টকাল মানে কী?
-অনির্দিষ্ট কাল মানে যে সময়ের নির্দিষ্ট কোন শেষ নেই। যে অবরোধ পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত চলতে থাকবে তাকেই অনির্দিষ্টকালের অবরোধ বলে। পরবর্তী নির্দেশনা কখন আসবে সেটারও কোন ঠিক নাই।
সে বলল, ইন নো ওয়ে! আমি আনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত এই অস্বাভাবিক অবস্থায় থাকতে পারব না। স্যরি টু সে, আমি তোমার জন্য দেশ ছাড়তে পারব, ধর্ম ছাড়তে পারব, কিন্তু জীবন ছাড়তে পারব না। যদি পারো আগে এ দেশটাকে ঠিক করো, তারপর আসবো।
পরের কয়েকটা দিন তাকে বুঝাবার চেষ্টা করলাম যে, আমার একার পক্ষে এটা ঠিক করা সম্ভব না। অমি অতি সাধারন এক নাগরিক। আমি কিভাবে একা পুরো দেশটাকে ঠিক করে ফেলব? একদিন না একদিন এ আপনা আপনিই ঠিক হবে। তাকে আশ্বস্ত করার সর্বোচ্চ চেষ্টা করলাম আমি। কিন্তু পারলাম না। তার এক কথা। যে দেশের সাধারন জনগণ এমন অবস্থায় উটপাখির মতো মাথা গুঁজে বসে থাকে সে দেশের অবস্থার উন্নতি কোনদিনও হবে না। সে আামাকে কাঁদিয়ে এক সপ্তাহ পরেই ফিরে চলে গেল তার দেশে।
-তারপর? উপস্থাপিকা প্রশ্ন করলেন।
-তারপর? তারপর থেকেই আমার রাজনীতিতে নামা। এবং আপনাদের সকলের দোয়ায়, সকলের ভালবাসায় আজ আমার দল এদেশের নির্বাচিত সরকার।
-এই যে বিরোধীরা প্রতিবাদ করছে, বলছে নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কী?
-আমার কী কথা থাকবে আবার? ভোট দিয়েছে জনগণ, তারা কারচুপি করেছে কিনা- সেটা তো আমার জানার কথা না।
-বিরোধী দলগুলো যদি হরতাল, অবরোধ দেয় আপনারা কী করবেন? মানে শুরুতেই যদি এমন প্রতিকূল অবস্থায় পড়ে যান তবে কি ভাল হবে?
-তারা হরতাল দিলে, অবরোধ দিলে আমাদের কি করার আছে? বড়জোড় ওদের যুক্তি-তর্ক দিয়ে বুঝাতে পারি। যুক্তি দিয়ে, ভাল ব্যবহার করে তাদের ভুল ধারনা ভাঙতে পারবো বলেই আমার বিশ্বাস।
-আপনারা কি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য নিবেন বিগত সরকারগুলোর মতো?
-অবশ্যই না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কখনো প্রভাবিত করা হবে না। তারা স্বাধীন থাকবে। আর আমি মনে করি, বিরোধীকে বলতে দিতে হয়। ওরা বলবে। খারাপ কিছু দেখলে তারা অবশ্যই প্রতিবাদ করবে। সে অধিকার তাদের আছে। আবার এটাও বিশ্বাস করি, অযথা ক্ষমতার লোভে কোন প্রতিবাদ কখনো সফল হয় না। ইতিহাস থেকে আমরা জানি যে, যেসব বিদ্রোহে সৎ উদ্দেশ্য থাকে, সেইসব বিপ্লবই সফল হয়।
-তাহলে আমরা ধরে নিব যে আপনারা অসৎ উপায়ে ক্ষমতায় আসেন নাই।
-আপনারা কি ভাববেন, না ভাববেন সেটা আপনাদের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। যদি মনে করেন আমরা এভাবে অযোগ্য তবে আগামী ভোটেই রায় দিয়ে আমাদের তাড়িয়ে দেবেন। ক্ষমতা তো জনতার হাতেই আছে। আমরা শুধু এ ব্যাপারটারই নিশ্চয়তা দিতে চাই যে গণতন্ত্রে ক্ষমতা সবসময় জনতার হাতেই।
-তবে এই মূহুর্তে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আপনাদের পরিকল্পনা কি?
-ক্ষমতার জন্য? খুব সহজ। আমরা জনগণের জন্য কাজ করে যাব। জনগণের উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে আমাদের। আরেকটা কাজ করব। নির্বাচন প্রক্রিয়াকে খুব স্বচ্ছ ও নিশ্ছিদ্র করার চেষ্টা করব। নির্বাচনটা যদি যথা সময়ে এবং নিরপেক্ষভাবে হয় আর আমরা যদি সবাইকে নিয়ে ভাল কিছু করতে পারি তবে জনগণ নিজেরাই ঠিক করে নেবে অমাদের ক্ষমতায় রাখবে কি না।
এভাবেই লাইভ টিভি প্রোগ্রাম শেষে নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী জনাব আফজাল টিভি স্টুডিও থেকে বের হলেন। বের হতে না হতেই তার মোবাইলের রিং টোন বেজে উঠল। সারাহ!
-কনগ্রেট্স আফজাল! মাই গুডনেস! নিউজে দেখলাম, তুমি প্রধানমন্ত্রী! ইয়াহু! ইউ ডিড ইট! বাট হাউ?
-সারাহ্! আই ক্যান্ট ইমাজিন! থ্যাংক ইউ সারাহ! পরে সব বলব। আফজালের গলা আর্দ্র হয়ে গেল। দীর্ঘদিন ধরে সারাহর সাথে কোন যোগাযোগ ছিল না তার।
-আফজাল, বাই দ্যা বাই, এখন কি আর তোমাদের পলিটিশিয়ানরা ফাইটিং করবে?
-না। একদম না সারাহ। আমি সবাইকে নিয়ে কাজ করব। এখানে সরকারি দল বিরোধী দল সবার থাকবে সমানাধিকার। ফাইটিং যাতে না করতে হয় সে ব্যবস্থা করব। হিংসা বিদ্বেষের রাজনীতি আমি নির্মুল করবোই করবো।
-কোন অবরোধ হবে?
-অবশ্যই না। আমি এমন ভাবে রাস্ট্র পরিচালনা করব যে বিরোধীদের হরতাল অবরোধ করার দরকার পড়বে না। ইনফ্যাক্ট আমি বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের পলিটিক্যাল কালচারটাই চ্যাঞ্জ করে ফেলব। আই স্যোয়ার সারাহ! আই স্যোয়ার!
-তবে আমি আসছি আফজাল। আমি আবার বাংলাদেশ আসছি। ইফ... ইফ ইউ আ’ উইলিং টু অ্যাক্সেপ্ট মি।
-তুমি আসবে সারাহ? তুমি আবার আসবে?
-অবশ্যই আসব। আমি আসবোই। তবে সেটা হবে অনির্দিষ্ট কালের জন্য!
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জানুয়ারি, ২০১৫ রাত ১২:১২