somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Aeronautical Engineering - নতুন প্রজাতির ব্যাঙ-এর ছাতা গজানোর আশংকা

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশে নতুন নতুন বিষয়ে স্নাতক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়/ কলেজ খুলে রমরমা ব্যবসা করার ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রতিষ্ঠানের বহু সমস্যা স্পষ্টতই বোঝা গেলেও অনেকেই ঝুঁকি নিয়েই এসব প্রতিষ্ঠানে বড় অংকের টিউশন ফির বিনিময়ে ভর্তি হন। এর একটি কারণ নতুন বিষয়টির চটকদার বিজ্ঞাপন, অভিনবত্ব এবং সম্ভাবনা নিয়ে টেকনিক্যাল টার্ম ব্যবহার করে লাগামহীন, কখনো কখনো কল্পনাপ্রসূত বক্তব্য। যেহেতু নতুন বিষয়, কাজেই বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই একজন শিক্ষার্থী কোন সঠিক পারমর্শদাতা পাননা, সাধারণজ্ঞান থেকে এদের লক্ষ্যহীন বক্তব্যে হয়তো স্বপ্নের ঘোরে অথবা দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থায় এদের ফাঁদে পা দেন।

এমন বিষয়গুলোর একটি জ্বলজ্যান্ত নমুনা হতে পারে Aeronautical Engineering ...

গত কয়েক বছরের ব্যবধানে দেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে যারা এই বিষয়ে সার্টিফিকেট কোর্স, ডিপ্লোমা থেকে শুরু করে স্নাতক পর্যায়ের কোর্স চালু করেছে। এ ধরণের যেকোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সুস্পষ্ট ও সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা করে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে কাজ করলে তাতে আপত্তির কোন কারণ নেই।

কিন্তু এর মধ্যে কিছু প্রতিষ্ঠানের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা, ছাত্রদের সঠিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, সম্ভাব্য ভবিষ্যত কর্মস্থলের চাহিদা অনুযায়ী পাঠ্যক্রম প্রণয়নের প্রক্রিয়া সবকিছুই বেশ প্রশ্নসাপেক্ষ; ক্ষেত্রবিশেষে কোন ধরণের বিস্তারিত পরিকল্পনা ছাড়াই এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। সবচেয়ে দুর্ভাগ্যের বিষয় যারা এমন পদক্ষেপ নিচ্ছেন তাদের (মালিকপক্ষ/পরিচালনা পর্ষদ) অনেকেও আংশিক স্বচ্ছ কিংবা ভুল বুঝেই (সে সত্যিকারের অবদান রাখার লক্ষ্যেই হোক আর শর্টকাটে বড় অংকের লাভের লক্ষ্যেই হোক) এর সাথে জড়িয়ে যাচ্ছেন এবং কিছুদিন পর "এই প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়ানো আমার অনেক বড় ভুল ছিল" টাইপের ডায়ালগ ছাড়েন। বিশেষ করে ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর কোন কোনটি তাদের প্রচারণার সময় খুবই এলোমেলোভাবে এই ডিপার্টমেন্টের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে সচেষ্ট হয় এবং কোন কোন সময় টেকনিক্যাল বিভিন্ন টার্মের নাম (!) ব্যবহার করে হবু শিক্ষার্থীর নার্ভাস হওয়ার সুযোগ কাজে লাগিয়ে তাকে কাবু করে যদিও যে বলে সে নিজেও ওগুলো সম্বন্ধে পরিস্কার ও সঠিক ধারণা রাখেনা। শুরু করার কয়েক বছর পর যখন শিক্ষার্থীদের চোখ-কান খোলা শুরু হয় তখনই শুরু হয় দ্বন্দ। খবরের কাগজে প্রতারণার দায়ে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়া এমন এক প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ্যের ছবি ছাপা হয় (অথবা ব্যবস্থাপনা পরিচালক হতে পারে) যেখানে শিক্ষার্থীরা তাকে মারতে উদ্যত ছিল।

বিদেশী ডিগ্রী/ডিপ্লোমার দোহাই দিয়ে এরা UGCর হাত ফসকে বের হয়ে যাচ্ছে। Cross Border Education Provider দের জন্য নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে বলে UGCর ওয়েবসাইটে উল্লেখ থাকলেও তা কবে নাগাদ প্রয়োগ হতে পারে তার কোন তথ্য দেয়া হয়নি। যদিও এর মধ্যবর্তী সময়ে এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সম্পুর্ণ নিজ দায়িত্বে ভর্তির কথা বলা হয়, কিন্তু যেহেতু এখানে এরিমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন এবং বিষয়টির সংবেদনশীলতা ও বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এর গুরুত্ব বিবেচনা করে এর মান নিয়ন্ত্রনে সরকারের কোন একটি সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা থাকা উচিত। খুব খারাপ কিছু ঘটে যাওয়ার আগেই এখনো হয়তো নিয়ন্ত্রনে আনা সম্ভব কিন্তু পরবর্তীতে হয়তো রাজউক এর বড় বড় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে দোটানায় পড়ার মত অবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। কোন প্রাণী পাগল হয়ে বিষাক্ত দাঁতের কামড় বসানোর আগেই সমস্যার প্রতিকারের ব্যবস্থা করা নিঃসন্দেহে শ্রেয়, চূড়ান্ত পরিণতির ক্ষেত্রে ওই একটির নির্মূলে হয়তো একটি জাতি বেঁচে যায়।

আমার জানামতে বাংলাদেশে বর্তমানে যে কোন পর্যায়ে Aeronautical Engineering পড়ানো হচ্ছে নিম্নোক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে (ইংরেজী অক্ষরের অনুক্রমে)-.
১. Aeronautical College of Bangladesh (ACB)
২. Aeronautical Institute of Bangladesh (AIB)
৩. Biman Bangladesh Airlines Training Center (BATC) [দুঃখিত ওয়েব লিংক পাইনি, কারো কাছে থাকলে শেয়ার করার অনুরোধ থাকলো]
৪. College of Aviation Technology (CATech)
৫. Military Institute of Science & Technology (MIST)
৬. National Institute of Engineering & Technology (NIET)
৭. United College of Aviation Science and Management


*একটা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ না করে পারছিনা। রেফারেন্সের জন্য উইকিপিডিয়ায় List of Aerospace Engineering Schools লিস্টে গিয়ে দেখি একজন আবার নিজেরটা বাদে অন্য সবারটা ডিলিট করে দিয়েছেন; আর তা করতে গিয়ে সূচী থেকে বাংলাদেশের নামই মুছে দিয়েছেন (যদিও কে করেছে তা নিশ্চিত জানিনা কিন্তু অন্তত আপাতঃদৃষ্টিতে এমনই মনে হলো)। দেখেন এরা কত প্রফেশনাল আর কম্পিটিটিভ। প্রয়োজনে একদম নিচে এটাচ করা স্ক্রিনশটগুলো দেখেন।

এই পোস্টের উদ্দেশ্য কোন প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন কিংবা কোন প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি হেয় করা নয়। আমি শুধু এতটুকু নিশ্চিত করতে চাচ্ছি যে- কেউ যাতে ভুল করে বা না বুঝে কোন সিদ্ধান্ত না নেয়। ভালো হোক খারাপ বুঝেশুনে সিদ্ধান্ত নেয়াটা জরুরী। এক্ষেত্রে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ওয়েবসাইট, প্রস্পেক্টাস, পাঠ্যক্রম দেখে এবং প্রচারণায় এরা যে সমস্ত টেকনিক্যাল টার্ম ব্যবহার করে তার ব্যাখ্যাসহ বাস্তব পরিপ্রেক্ষিতে (যতটুকু আমার জানা আছে তার মধ্যে) তাদের বক্তব্যের তুলনামুলক রিভিউ দেয়ার চেষ্টা করব। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে যে কোন প্রশ্ন থাকলে, ব্যাখ্যার প্রয়োজন থাকলে অথবা আপত্তি থাকলে মন্তব্যে লিখুন। আমার বক্তব্যে কোন ভুল আছে মনে করলে তা রেফারেন্স সহ উল্লেখ করুন, যদি সত্যিই ভুল প্রমাণিত হয় অবশ্যই সংশোধন করা হবে।

এই বিষয়ে লেখার পরিকল্পনা অনেক আগে থেকেই ছিল, কিন্তু সমস্যা হলো সব কিছুর ব্যখা-বিশ্লেষণ মিলিয়ে এর কলেবর এত বড় হয়ে যায় যে, এত লম্বা পোস্ট পড়ার ধৈর্য্য রাখা যে কারো জন্যই কঠিন, আর জগাখিচুড়ীতো বটেই। তাই আজকের পোস্টটা ভূমিকা হিসেবে থাকলো, এর প্রেক্ষাপটে পরবর্তীতে পর্যায়ক্রমে উল্লেখিত বিষয়গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করব। আশা করি সাথেই থাকবেন। ধন্যবাদ।

* উইকি ইস্যুঃ




Wordpress
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৮:০৯
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×