মুলবক্তব্যঃ মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে বর্ণমালা ও ছড়া শেখানোর সিডি ডিভিডি গুলোতে মনগড়া ভুল উচ্চারণ সহ আরও অনেক ভুল থাকে। কোন কোন ক্ষেত্রে আবার বর্ণমালার বিন্যাসই বদলে দেয়া হচ্ছে। বাংলা একাডেমী অথবা যথাযথ কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রন প্রয়োজন।
আজকাল মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে বাচ্চাদের পড়াশোনা বেশ জনপ্রিয়, বর্ণমালা এবং ছড়া শেখানোর ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। বেশকিছু প্রতিষ্ঠান এই বিষয়ে অগ্রনী ভূমিকা রাখছে। এরা কার্টুন এনিমেশন, সুন্দর গ্রাফিক্স এবং শিশুতোষ বাজনা ব্যবহার করে শিশুদের মনোযোগ আকর্ষন করে খেলাচ্ছলে তুলনামুলক কম বয়সেই তাদেরকে বর্ণ এবং ছড়া শিখতে সহায়তা করছে। পাশাপাশি যেসব মা-বাবা শিশুদেরকে কোন একটা কিছু করতে দিয়ে ব্যস্ত রেখে অন্য কাজ করতে চান তাদের জন্যও এটি একটি ভালো রাস্তা খুলে দিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ।
প্রথম থেকেই কিছু বিষয় আমি খেয়াল করি-
১. বর্ণমালার উচ্চারণে ভিন্নতা
২. ছড়াসমূহের বিকৃত কথা এবং মনগড়া ছন্দ
বর্ণমালার উচ্চারণের বিষয়টি যেদিন প্রথম খেয়াল করি আমি ভেবেছিলাম বোধহয় আমিই ভুল জানি, কিন্তু পরবর্তীতে এই রকম আরও ২টি মাল্টিমিডিয়া প্রকাশনা চালাতে গিয়ে দেখি ৩টিতে ৩ রকম উচ্চারণ এবং এরা নিজেদের ইচ্ছামতো উচ্চারণ ব্যবহার করেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে রীতিমতো গেঁয়ো অথবা আঞ্চলিক টানও পরিলক্ষিত হয়। যেসব শিশুরা এগুলো দেখে শিখছে তাদের জন্য পরবর্তীতে এই উচ্চারণগুলো ঠিক করা কিন্তু বেশ কঠিন হতে পারে, কারণ এই বয়সে যেই রকম উচ্চারণ শেখে পরে এটা কেন যেন বদলাতে চায়না। আমার জানামতে উচ্চারণ, বর্ণমালা সংক্রান্ত বিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত বাংলা একাডেমী দিয়ে থাকে। যদি তাই হয় এই ক্ষেত্রে কিছু মানদন্ড এবং নীতিমালা প্রণয়ন খুবই জরুরী হয়ে পড়েছে।
দীর্ঘদিন যাবৎ আমাদের ছড়াগুলো জেনারেশন থেকে জেনারেশনে অনেকটাই অবিকৃত অবস্থায় আমরা শুনেছি। অনেক দেশে এগুলো সংরক্ষণের জন্য ফোকলর সোসাইটি থাকে। আমাদের এখানে সেরকম কিছু আছে কিনা আমি জানিনা, না থাকলে এই দায়িত্বটাও বাংলা একাডেমী নিতে পারে। এই ক্ষেত্রে বিকৃতির নমুনা দেখুন-
আয় আয় চাঁদ মামা ... মাছ কাটলে মুড়ো দিবো ... কালো গাইয়ের দুধ দিবো ...
এখানে কালো গাইয়ের জায়গায় ঠুস করে বলে দিল কালো গরুর দুধ দিবো।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিশুতোষ ভাব আনতে গিয়ে শব্দের ভুল উচ্চারণ ও প্রয়োগ দেখানো হয়, যা শিশুরা হুবহু নকল করতে থাকে এবং এক সময় অভ্যাসে পরিণত হয়।
এই রকম আরও অনেক সমস্যা আছে এই সব সিডি/ডিভিডিতে। বইমেলা উপলক্ষে এগুলোর প্রকাশনা বিক্রি সবই অনেক বেশী হয়। তাই আজকে আবার মনে পড়তেই বিষয়টা সবার সাথে শেয়ার করলাম, যদি কোনভাবে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় এই আশায়।
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৩৩