
আমার স্ত্রী কোন কাজ করে না।
ভোরে আমার জন্য কিছু নাস্তা তৈরী করে মাত্র;
আমি তা খেয়ে-দেয়ে কাজ করতে যাই মাঠে;
রোদ-বৃষ্টি-ঝড় কতো প্রতিকূল অবস্থায় কাজ করতে হয়-
ফসল বোনা, নিড়ানী দেওয়া , তারপর ঘরে তুলে আনা,
সেই ফসল বাজারে বিক্রি করে প্রয়োজনীয় জিনিষ কেনা,
কতো কাজ আমার! তার কি কোন ইয়ত্তা আছে ?
আমার স্ত্রী কোন কাজ করে না।
আমি যখন মাঠে যাই সে তখন বাচ্চাদের ঘুম থেকে জাগিয়ে
হাতমুখ ধোয়ায়ে নাস্তা খাওয়ায় বিবিধ কৌশলে,
অতপরঃ তাদেরকে উর্দি পরায়ে বিদ্যালয়ে পাঠায়,
এরপর, কিছু ব্যাঞ্জন আর ভাত পাক করার পর
আমার দুপুরের খাবার নিয়ে মাঠে যায়।
আমার স্ত্রী কোন কাজ করে না।
সে মাঠ হতে ফিরে এসে ঘর-দোর ঝাট দেয় মাত্র;
বাচ্চারা স্কুল হতে ফিরে এলে তাদেরকে স্নান করায়ে
দুপুরের খাবার খাইয়ে ঘুম পাড়ায়।
তারপর, ধুয়ে মুছে বাসন কোসন- কাঁথা সেলাতে বসে।
বিকেলে বাচ্চাদেরকে খেলার মাঠে পাঠায় , সুস্থ্য থাকবে তাই;
অতপরঃ রাতের খাবার তৈরী করার প্রস্তুতি নেয়।
আমার স্ত্রী কোন কাজ করে না।
সন্ধ্যায় বাচ্চাদেরকে পড়ার টেবিলে বসায়ে নিজে বসে থাকে পাশে।
রাতের খাবার শেষে সে পাকের ঘর পরিস্কার করে
আর ইনিয়ে বিনিয়ে জীবনের গান গায়।
এর মাঝে আমি টিভিতে খবর শুনি , নাটক দেখি
বিজ্ঞ আঁতেলদের ‘টক শো’ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ি।
সে শেষবারের মতো ঘুমন্ত সন্তানদেরকে দেখে এসে
বিড়ালের মতো সন্তর্পনে আমার পাশে শুয়ে পড়ে।
আগন্তুক বলেন, আপনি বলেন কী?
যিনি ভোর হতে মধ্যরাত পর্যন্ত বিশ্রামহীন ভাবে কর্মে রত;
অথচ আপনি বলেন, অবলীলা স্বরে-
আপনার স্ত্রী কোন কাজ করে না!
আরে ভাই, সেই কাজের কি কোন মূল্য আছে?
যে কাজের বিনিময়ে কোন পয়সা নেই, সম্মান নেই -
সে-তো কোন কাজই নয়- বুঝলেন তো ভায়া?
অতএব, নির্দ্বিধায় বলতে পারি-
আমার স্ত্রী কোন কাজ করে না।
২৮ ভাদ্র, ১৪১৯।