০১
মনের মানুষ খেলছে দ্বিদলে।
যেমন সৌদামিনী মেঘের কোলে
রূপ নিরূপণ হবে যখন
মনের মানুষ দেখবি তখন
জনম সফল হরে ও মন
সে রূপ দেখিলে
আগে না জেনে উপাসনা
আন্দাজি কি হয় সাধনা
মিছে কেবল ঘুরে মরা
মনের গোলমালে
সেই মানুষ চিনলো যাঁরা
পরম মহাত্মা তাঁরা
অধীন লালন বলে
দেখ নয়ন খুলে
০২
পারে লয়ে যাও আমায়।
আমি অপার হযে বসে আছি
ওহে দয়াময়
আমি একা রইলাম ঘাটে
ভানু সে বসিল পাটি
তোমা বিনে ঘোর সংকটে
না দেখি উপায়
নাই আমার ভজন সাধন
চিরদিন কুপথে গমন
নাম শুনেছি পতিত পাবন
তাইতে দিই দোহাই
অগতির না দিলে গতি
ও নামি হবে অখ্যাতি
লালন কয় অকুলের পতি
কে বলবে তোমায়
০৩
ধন্য ধন্য বলি তাঁরে।
বেঁধেছে এমন ঘর শূন্যের উপর
পো¯তা করে
ঘরে সবে মাত্র একটি খুঁটি
খুঁটির গোড়ায় নাইরে মাটি
কিসে ঘর রবে খাঁটি
ঝড় তুফান এলে পরে
ঘরের মূলাধার কুঠরি নয়টা
তার উপরে চিলেকোঠা
তাহে একা পাগলা বেটা
বসে একা একেশ্বরে
ঘরের উপর নিচে সারি সারি
সাড়ে নয় দরজা তারি
লালন কয় যেতে পারি
কোন দরজা খুলে ঘরে
০৪
যেখানে সাঁইর বরামখানা।
সেখানে সাঁইর বারামখানা
শুনিলে প্রাণ চমকে ওঠে
দেখতে যেমন ভুজঙ্গনা
যা ছুঁইলে প্রাণে মরি
এ জগতে তাইতে তরি
বুঝেও তা বুঝতে নারি
কীর্তিকর্মার কী কারখানা
আত্মতত্ত্ব যে জেনেছে
দিব্যজ্ঞানী সেই হযেছে
কুবৃক্ষে সুফল ফলেছে
আমার মনের ঘোর গেলো না
যে ধনে উৎপত্তি প্রাণধন
সেই ধনের হলো না যতন
অকালের ফল পাকায় লালন
দেখে শুনে জ্ঞান হলো না
০৫
পাখি কখন যেন উড়ে যায়।
বদ হাওয়া লেগে খাঁচায়
খাঁচার আড়া প’লো ধসে
পাখি আর দাঁড়াবে কিসে
ওই ভাবনা ভাবছি বসে
চমক জ্বরা বইয়ে গায়
ভেবে অšত নাহি দেখি
কার বা খাঁচায কেবা পাখি
আমার এ আঙ্গিনায় থাকি
আমারে মজতে চায়
আগে যদি যেত জানা
জংলা কভু পোষ মানে না
তবে উহার সঙ্গে প্রেম করতাম না
লালন ফকির কেঁদে কয়