একটি দানবাকৃতি প্রানীর মাত্র কয়েকটি হাড় পাওয়া গিয়েছে, তা দিয়েই কিভাবে জীবাশ্মবিদরা কিভাবে নিশ্চিত হলেন প্রানীটি ঠিক এ রকমই ছিলো? বিভিন্ন বই, থিম পার্ক কিংবা ডকুমেন্টারি দেখে অনেকের মনে এই প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক? কারণ প্রাগঐতিহাসিক এই প্রানীগুলোর কেবল হাড় পাওয়া গিয়েছে, অনেক প্রাগঐতিহাসিক সব হাড় এখনোও পাওয়াই যায়নি, সুতরাং কি ভেলকিবাজী দেখিয়ে জীবাশ্মবিদরা কোটি বছরের আগের প্রানীর দেহের অবয়ব বানিয়ে ফেলেন? অনেকটা হেয়ালির মতন, তাই না?
আসল ঘটনা হলো, জীবাশ্মবিদরা যখন একটি ফসিল পান তখন সেই ফসিলটির সঙ্গে সমগোত্রীয় অন্যান্য ফসিলের সঙ্গে সেই ফসিলটিকে মেলান। এরপর আর্টিস্টের দ্বারস্হ হোন ফসিলের সম্ভাব্য স্কেচ তৈরির জন্য কিংবা বর্তমানে থ্রি-ডি প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রাগঐতিহাসিক প্রানীটির সম্ভাব্য দেহাবয়ব তৈরি করেন। অথবা বর্তমানে বেচে থাকা কিছু প্রানীর, বিশেষ করে যেগুলোকে লিভিং ফসিল বলা হয়, সেগুলোর সাথেও মিলিয়ে দেহাবয়ব তৈরি করেন অনেক সময়। সুতরাং বলা যেতে পারে, বিভিন্ন বই, থিম পার্ক কিংবা ডকুমেন্টারিতে আমরা যেসব প্রাগঐতিহাসিক প্রানীর ছবি দেখি সেগুলো ১০০% ভাগ সঠিক নয়।
ডায়নোসোরগুলোর রং আসলে কেমন ছিলো?
ইদানীং বইগুলোতে চটকদার রংয়ের ডায়নোসোরের দেখে মেলে। কোটি বছরের আগের এই ডায়নোসোরের রং কিভাবেই জানা গেলো সেটা নিয়েও মনে প্রশ্ন তৈরি হওয়া স্বাভাবিক। রংয়ের ব্যাপারে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জীবাশ্মবিদরা অনুমানের আশ্রয় নেন। আর ডায়নোসের চটকদার রং অনেক ক্ষেত্রেই স্রেফ আর্টস্টদের নিজস্ব ভাবনা। ডায়নোসোরসহ অন্যান্য প্রাগঐতিহাসিক প্রানীদের স্রেফ রাঙানো হয় পাঠক কিংবা দর্শকদের আকৃষ্ট করার জন্য। আমি নিজের অভিজ্ঞতাও তাই বলে। ছোটবেলায় আমি বইয়ে দেখতাম ডায়নোসোরগুলো সাধারণত কালচে, বাদামী কিংবা বড়জোর লালচে রং-এর। আমিও কল্পনায় তাই ভাবতাম। বড় হয়ে ন্যাশনাল জিওগ্রাফি ম্যাগাজিন খুলে পেলাম অন্য চিত্র। সিনেমা ও ডকুমেন্টারীগুলোতেও রংয়ের খেলা। তবে কাঠখোট্টা বিজ্ঞানীদের সোজাসাপ্টা কথা, এইসব প্রাগঐতিহাসিক প্রানীদের ক্ষেত্রে সাদামাটা রং ব্যাবহার করা নিরাপদজনক, এতে ভুলের সম্ভাবনা কম।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ৮:২৭