পর্ব-১
গ্রীক সভ্যতার নাম শুনলেই আমাদের মানসপটে ভেসে আসে চিন্তামগ্ন সক্রেটিস, ট্রোজান ঘোড়া ও মহাবীর আলেকজান্দারের কথা। হ্যা, মিশর, মেসোপটেমিয়া, সুমেরু সভ্যতাগুলো গ্রীক সভ্যতার চেয়ে প্রাচীন হলেও দর্শন, বিজ্ঞান ও শিল্প চর্চা বিকাশ লাভ করে এই গ্রীক সভ্যতায়।
গ্রীক সভ্যতা নিয়ে কথা শুরু করা আগে আনুসাঙ্গিক কিছু ব্যাপার জানা প্রয়োজন। প্রথমেই একটি অবাককর তথ্য হলো গ্রীসের লোকের নিজের গ্রীক বলে পরিচয় দেয় না, তারা নিজেদের বলে হেলেনিস (Hellenes) আর নিজের দেশকে বলে হেলাস (Hellas)! আজও তাদের ডাকটিকিটের উপর লেখা থাকে Hellas, সুতরাং গ্রীক ভাষায় আমরা গ্রীক সভ্যতাকে বলতে পারি হেলেনিক সভ্যতা
এখন স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে তাহলে আমরা তাদেরকে গ্রীক বলি কেনো? রোমান সভ্যতা বিস্তার লাভ করেছিলো ইউরোপের বড় একটি অংশ জুড়ে। আফ্রিকা ও এশিয়ার বড় একটি অংশ শাসনও করেছে রোমানরা। তারা হেলেনিসদের বলতো গ্রাসি আর দেশকে বলতো গ্রাসিয়া। এই নামটি ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপসহ অন্যান্য জায়গায় এবং পরবর্তীতে ইংরেজীতে 'গ্রাসি'- কে গ্রীক এবং গ্রাসিয়া-কে গ্রীস করা হলো, সেই থেকে গ্রীস, গ্রীক এই শব্দগুলোই ব্যবহৃত হতে থাকে।
গ্রীক কারা?
সেইসময় গ্রীক কিংবা হেলেনিস মানেই কিন্তু শুধুমাত্র গ্রীক পেনিনসুলা ও দ্বীপগুলোতে বসবাসরত নাগরিকদের বোঝাতো -তা নয়। গ্রীকদের সভ্যতা বিস্তৃত্ব ছিলো বর্তমান তুরষ্কের উত্তর অংশে, ব্লাক সি'র তীরাঞ্চল, দক্ষিণ ইতালি, সিসিলি দ্বীপ, ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী ফ্রান্স, স্পেন ও আফ্রিকার কিছু অঞ্চল। এরমধ্যে দক্ষিণ ইতালিতে গড়ে উঠেছিলো গ্রীকদের সবচয়ে উন্নত কলোনি যেটিকে বলা হতো গ্রেটার গ্রীস।
আর গ্রীক পেনিনসুলা অর্থাৎ মূল ভুখন্ডে গ্রীস বিভক্ত ছিলো কয়েকটি অঞ্চলে, এর মধ্যে ৪টি এলাকা সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য- এথেনিয়ান, স্পার্টান, থিবান ও কোরিন্হিয়ান। এথেনিয়ান ও স্পার্টান- এই শব্দ দুটি কারও অপরিচিত নয়। স্থাপত্য নিয়ে যারা পড়াশুনা করেছেন তাদের কাছে কোরিন্হিয়ান কলাম (Corinthian Column) খুবই পরিচিত। থিবান'রা তুলনামূলকভাবে আলোচনায় কম আসে এবং এই কারণে থিবানরা তেমন বিখ্যাত নয়। আর দ্বীপগুলোর মধ্যে ক্রীট, রোডস, নসোস গ্রীক সভ্যতার বিকাশে খুবই গুরুত্ব ভূমিকা বহন করে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:৫০